Advertisement
E-Paper

ক্যানসার নির্মূল করবে ‘ব্রাজিলের বিচ্ছু’! ভয়ঙ্কর বিষেই হবে বিষক্ষয়

কাঁকড়াবিছে মানেই আতঙ্ক। এক বার যদি হুল ফোটায়, তা হলে আর দেখতে হবে না। মারণবিষের জ্বালায় ভবলীলা সাঙ্গ হতে দেরি হবে না। এমন মারণবিষই নাকি ক্যানসার সারাবে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫ ১৪:৩০
Brazilian scientists have claimed that scorpion venom could help to treat breast cancer

বিছের বিষে ক্যানসার সারানোর অস্ত্র। ফাইল চিত্র।

ফেলুদা বিছানায় শুয়ে। বইয়ের পাতায় চোখ, কিন্তু কথা বলে যাচ্ছে তোপসের সঙ্গে। তোপসের চিৎকারে মনোযোগ ভঙ্গ হল ফেলুদার। বালিশের কোনা থেকে একটা কাঁকড়াবিছে এগিয়ে আসছে তার দিকে। সঙ্গে সঙ্গে পাশের টেবিল থেকে গ্লাস নিয়ে পাকড়াও করে কাঁকড়াবিছেটিকে। ‘সোনার কেল্লা’র এই দৃশ্য মনে পড়লে আজও শরীরে শিহরন জেগে ওঠে। কাঁকড়াবিছে মানেই আতঙ্ক। এক বার যদি হুল ফোটায়, তা হলে আর দেখতে হবে না। মারণবিষের জ্বালায় ভবলীলা সাঙ্গ হতে দেরি হবে না। বিছের বিষ নিয়ে যতই ভয় থাক না কেন, এই বিষ দিয়েই কিন্তু বিষক্ষয়ের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। ‘ব্রাজিলের বিচ্ছু’র বিষই নাকি হয়ে উঠতে পারে স্তন ক্যানসার সারানোর মোক্ষম অস্ত্র।

ব্রাজিলের সাও পাওলো ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা কাঁকড়াবিছের বিষ নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন। ব্রাজিলে এক ধরনের বিছে পাওয়া যায়, যার নাম ‘ব্রথিয়াস আমাজনিকাস’। এই বিছের বিষের জ্বালা বলে বোঝানোর নয়। তবে এর বিষে এমন একটি উপাদান আছে, যা টিউমার কোষের বৃদ্ধি থামিয়ে দিতে পারে। শরীরে যদি ক্যানসার ছড়াতে শুরু করে, তা হলে এই বিষের জ্বালায় ক্যানসারের বিষও নষ্ট হবে। বিষে বিষে বিষক্ষয় করার এই সুযোগটা তাই আর হাতছাড়া করছেন না বিজ্ঞানীরা।

তাই বলে কি সরাসরি শরীরে বিছের বিষ ঢোকানো হবে? তা নয়। ব্রাজিলের ওই বিছের বিষ নিয়ে তা থেকে কেমোথেরাপির ওষুধ তৈরি করবেন বিজ্ঞানীরা। বিষ মানেই প্রোটিন। সেই প্রোটিনটিকে আলাদা করে নিয়ে গবেষণাগারে পরিশোধিত করে তা থেকেই তৈরি হবে ওষুধ। বিজ্ঞানীরা এ-ও দেখবেন, বিছের শরীরে ওই প্রোটিনটি ঠিক কী ভাবে তৈরি হয়। কোন জিন এর জন্য দায়ী। সেই জিনটিকে যদি আলাদা করে তার বিন্যাস বার করা হয়, তা হলে ওই প্রোটিন তৈরির উপায় হাতের মুঠোয় চলে আসবে। ওই প্রোটিনই পরে গবেষণাগারে আলাদা করে তৈরি করতে পারবেন বিজ্ঞানীরা।

কাঁকড়াবিছের বিষ খুবই দুর্মূল্য। বিছের বিষ নিয়ে নেশাও করেন অনেকে। এই বিষের চাহিদাও প্রচুর। ভারতে কোটি কোটি টাকা দামে বিক্রি হয়। বিশ্বের অনেক দেশে কাঁকড়াবিছে প্রতিপালন করা হয়। আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সবচেয়ে বেশি কাঁকড়াবিছের বিষ দিয়ে নেশা করা হয়। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ব্রাজিলের যে বিছেটির বিষ থেকে ক্যানসারের ওষুধ তৈরির চেষ্টা চলছে, সেটিরও চাহিদা প্রচুর। কারণ ওই বিষ ওষুধ তৈরির অন্যতম উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিষাক্ত প্রাণীর বিষের প্রভাব কাটানোর ওষুধ অর্থাৎ, অ্যান্টিভেনম ড্রাগ তৈরিতে ও কয়েক রকম রোগের চিকিৎসায় ওই বিষ ব্যবহার করা হয়। ক্যানসার সারাতে এই বিষের প্রয়োগ এই প্রথম বারই হচ্ছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, বিষ থেকে তৈরি ওষুধ যদি মানুষের শরীরে ঠিকমতো কাজ করে, তা হলে আর কেমোথেরাপির যন্ত্রণা সইতে হবে না। ক্যানসার ডালপালা মেলার আগেই তা ধ্বংস হবে।

Breast Cancer Cancer treatment Scorpion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy