প্রতি মাসের ওই চার দিনের অস্বস্তি সামলাতে ইদানীং স্যানিটারি ন্যাপকিনসের পাশাপাশি মেনস্ট্রুয়াল কাপে ভরসা রাখছেন বহু মহিলাই। তার একটি কারণ, অবশ্যই মেনস্ট্রুয়াল কাপ অনেক বেশি সাশ্রয়ী। তবে শুধু সেটিই একমাত্র কারণ নয়। কেউ কেউ মেনস্ট্রুয়াল কাপে ভরসা করেন সেটি পোশাকে দাগ লাগতে দেয় না বলেও। আবার অনেকে হাঁটাচলা ও দৌড়ঝাঁপের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্যও ব্যবহার করেন মেনস্ট্রুয়াল কাপ। উপকার নানা রকম। কিন্তু মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করলে কি শরীরের কোনও রকম ক্ষতিও হতে পারে?
ছবি: সংগৃহীত।
মেনস্ট্রুয়াল কাপ সংক্রন্ত একটি বিষয় সম্প্রতি উদ্বেগ বাড়িয়েছে ব্যবহারকারীদের। কারণ, কেউ কেউ দাবি করেছেন, ওই কাপের ভুল ব্যবহারে জখম হতে পারে কিডনি! সত্যিই কি তা-ই? চিকিৎসকেরা বলছেন, এমন ঘটনা খুব সাধারণ নয়। তবে একেবারে অসম্ভব, তা-ও বলা যায় না। স্ত্রী-রোগ চিকিৎসক রেনুকা বরিসা বলেছেন, ‘‘মেনস্ট্রুয়াল কাপ ভুল ভাবে শরীরে প্রবেশ করালে কিডনি জখম হতে পারে। তা থেকে সমস্যাও বাড়তে পারে। তবে এমন ঘটনা খুব বিরল।’’
সাধারণত মহিলাদের প্রসবপথে মেনস্ট্রুয়াল কাপ রাখা হয়। যাতে তাতেই স্রাব জমা হয়। স্বাভাবিক ভাবেই ভুল ভাবে রাখলে তা থেকে আঘাত লাগার ঝুঁকি যেমন থাকে তেমনই থাকে সংক্রমণের আশঙ্কাও। রেনুকা বলছেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ইউরেথ্রায় চাপ পড়লে তা থেকে মূত্র ধরে রাখতে সমস্যা হয়। আবার পরিষ্কার করে ধোয়া না হলে তা থেকে মূত্রনালীকে সংক্রমণের সমস্যা হয়। যা পরোক্ষে কিডনিতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।’’
ছবি: সংগৃহীত।
টক্সিক শক সিনড্রোম (টিএসএস) নামে একটি সমস্যা হয় ট্যাম্পন ব্যবহার করলে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, মেনস্ট্রুয়াল কাপের ব্যবহার সঠিক ভাবে না করলে, তা থেকেও টিএসএস হতে পারে।
কী কী বিষয় মাথায় রাখা দরকার?
১। কোথায় রাখা উচিত: মেনস্ট্রুয়াল কাপ প্রসবপথের খুব বেশি ভিতরের দিকে ঠেলে দেবেন না। সেটিকে রাখতে হবে প্রসবপথের একে বারে মুখের দিকে। খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন প্রসবপথের দেওয়ালে খুব বেশি চাপও সৃষ্টি না করে।
২।পরিষ্কার: মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের আগে এবং পরে সব সময় পরিশোধন করা জরুরি। গরম জলে ফুটিয়ে পরিশোধন করুন অথবা গন্ধহীন সাবান এবং গরম জলে ভাল ভাবে পরিষ্কার করুন। কোনও জোরালো রাসায়নিক ব্যবহার না করাই ভাল। তা থেকে জননাঙ্গের চার পাশে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে।
ছবি: সংগৃহীত।
৩। বদলানো: প্রতিটি কাপের ক্ষেত্রেই সেটি ব্যবহারের নির্দেশিকা দেওয়া থাকে। কত ক্ষণ ভিতরে রাখা যাবে, তা-ও লেখা থাকে সেখানেই। তা মেনে চলা উচিত। চিকিৎসকেরা বলছেন, সাধারণত ১২ ঘণ্টা অন্তর কাপ বদলে ফেলাই স্বাস্থ্যকর। প্রয়োজন হলে তার আগেও বদলে নেওয়া যেতে পারে।
৪।পরিচ্ছন্নতা: প্রত্যেক বার মেনস্ট্রুয়াল কাপ প্রবেশ করানো এবং বার করার আগে এবং পরে হাত ভাল করে ধুয়ে নেওয়া দরকার। যাতে কোনও রকম ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ না হয়।