ক্ষতিকর জানেন। খেলে ওজন বাড়বে তা-ও জানেন, অথচ মুখের সামনে পছন্দের স্ন্যাকসের সঙ্গে ছোট বাটি ভর্তি মেয়োনিজ় সাজিয়ে দিলে তার টান এড়াতে পারেন না! মেয়োনিজ় এমনই সুস্বাদু বস্তু।
স্যান্ডউইচের শসা, টম্যাটোর উপরে স্বাদবর্ধক পরত হিসাবে ব্যবহার করা হোক বা ফিশফিঙ্গারের সঙ্গত হিসাবে— মেয়োনিজ় থাকলেই খাবারের স্বাদ একটু বেশি ভাল লাগে। কিন্তু এ হেন সুস্বাদু বস্তুটির ৮০ শতাংশই তেল! বা বলা ভাল ক্ষতিকর তেল।
দোকান থেকে কেনা মেয়োনিজ় সচরাচর পাম অয়েল দিয়ে তৈরি হয়। যা কোলেস্টেরল থেকে শুরু করে হার্টের অসুখ, ফ্যাটি লিভার-সহ নানা শারীরিক অসুস্থতার কারণ। এক চামচ মেয়োনিজ় খাওয়া মানে শরীরে ৯৪ কিলো ক্যালোরি যাওয়া। শুধু কি তাই?
এক টেবিল চামচ মেয়োনিজ় মানে প্রায় ১৪ গ্রাম মেয়োনিজ় খাওয়া। আর এই ১৪ গ্রাম মেয়োনিজ়ে কতটা ফ্যাট, কোলেস্টেরল, সোডিয়াম আছে জানেন?
মেয়োনিজ় বানানো হয় তেল, ডিমের কুসুম, ভিনিগার বা লেবুর রস এবং সর্ষেগুঁড়ো বা গোলমরিচ এবং নুন দিয়ে। আমেরিকার ফুড ডাটা কনট্রোল ডিপার্টমেন্টের দেওয়া ১০০ গ্রাম মেয়োনিজ়ের হিসাব বলছে ১০০ গ্রাম মেয়োনিজ়ে রয়েছে ৭৫ গ্রাম ফ্যাট, ৪২ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল এবং ৬৩৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম। তিনটি উপাদানই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে সোডিয়াম।
ছবি: সংগৃহীত।
তবে কি মেয়োনিজ় খাবেন না? ওজন কমানো লক্ষ্য হলে দোকান থেকে কেনা মেয়োনিজ় না খাওয়াই ভাল। তবে চাইলে বাড়িতে সম্পূর্ণ তেল ছাড়া স্বাস্থ্যকর মেয়োনিজ় বানিয়ে নিতে পারেন। চাইলে ক্যালোরি মেপে সেই মেয়োনিজ় খাওয়াও যেতে পারে। তাতে ওজনে কোনও প্রভাব পড়বে না। আবার খাবার সুস্বাদু হবে।
সম্পূর্ণ তেল ছাড়া মেয়োনিজ় বানাতে হলে কী কী লাগবে?
১২০ গ্রাম পনির বা টোফু
১৫-১৬টি কাজু
৫-৬ কোয়া রসুন
১ চা চামচ সর্ষেগুঁড়ো
আধ চা চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো
দেড় টেবিল চামচ লেবুর রস
আধ চা চামচ পটাশিয়াম যুক্ত নুন বা হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট
সামান্য গরম জল কাজু ভেজানোর জন্য।
কী ভাবে বানাবেন?
গরম জলে কাজু ভিজিয়ে রাখুন অন্তত ১৫ মিনিট। বেশি জল মেশাবেন না। তাতে মেয়োনিজ় পাতলা হয়ে যাবে। তাই কাজুগুলো ভেজাতে যতটুকু জল দরকার ততটুকুই দিন।
এ বার ব্লেন্ডারে জলসমেত কাজু এবং অন্য সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে মিহি ভাবে বেটে নিন। তা হলেই সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর মেয়োনিজ় তৈরি।
কেন এই মেয়োনিজ় স্বাস্থ্যকর?
প্রথমত,
এতে পনির বা টোফুর মতো স্বাস্থ্যকর প্রোটিন মজুত রয়েছে। তেল না থাকায় ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা এলডিএল বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। স্বাস্থ্যকর নুন ব্যবহার করায় এতে সোডিয়ামের মাত্রাও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। তাই হার্টের রোগীরও খেতে অসুবিধা হবে না। ডিমের কুসুমের বদলে কাজু ব্যবহার করায় উপকারী ভিটামিন পাওয়া যাবে। স্বাদবর্ধক হিসাবে ব্যবহার করা রসুনও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।