আচমকা শারীরিক কোনও সমস্যা হলে অনেকেই হকচকিয়ে যান, বুঝতে পারেন না তৎক্ষণাৎ কী করতে হবে। তেমনই এক সমস্যা নাক দিয়ে রক্ত পড়া বা ‘নোজ় ব্লিডিং’। শরীরে তেমন কোনও সমস্যা নেই, কিন্তু হঠাৎ নাক থেকে রক্ত বার হলে ভয় লাগেই। বিশেষ করে শীতের সময়ে ঠান্ডা লাগার ধাত যাঁদের থাকে, তাঁরা জানেন বেশি হাঁচলে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা হয়। আবার অ্যালার্জির প্রবণতা থাকলেও এমনটা হতে পারে। নাক দিয়ে রক্ত বার হওয়া মানেই অনেকে ভেবে নেন, জটিল কোনও রোগ বাসা বেঁধেছে। তা না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা কী ভাবে করবেন, জেনে রাখা ভাল।
শীতের সময়ে নাকের ভিতরে শুষ্ক হয়ে গিয়ে রক্ত বার হয়। আবার নাক দিয়ে রক্তপাতের কারণ হতে পারে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা, শরীরে জলের ঘাটতি, উচ্চ রক্তচাপ, ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ। নাসিকা ছিদ্রের ভিতরে খুব পাতলা স্বচ্ছ আবরণ বা মিউকাস মেমব্রেন থাকে। সেই আবরণের তলায় থাকে অসংখ্য রক্তনালি। এই রক্তনালির মধ্যে দিয়ে যদি রক্ত চলাচল বাধা পায় বা নাকের ভিতরের মিউকাস পর্দা শুকিয়ে যায়, তখন সেখানে চুলকানি হয়। জোরে হাঁচলে সেই রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্ত বার হতে পারে।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে পরিস্থিতি সামলাবেন?
প্রথমেই নাকের ভিতরকে আর্দ্র করে তোলার চেষ্টা করুন। এমন বিপদে নাকে ঠান্ডা জল টানুন প্রথমেই। এতে অনেক সময়ই রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে বিপদ কেটে যায়।
বাড়িতে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র থাকলে তাতে রক্তচাপের মাত্রা দেখে নিন। রক্তচাপ উপরের দিকে দেখতে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
নাক দিয়ে রক্ত বেরোতেই থাকলে সামনের দিকে মাথা ঝুঁকিয়ে বসুন। শুয়ে পড়লে চলবে না। ভাল হয় যদি চেয়ারে বসে সামনের টেবিলে দুটো হাতের উপরে মাথা নিচু করে রাখা যায়।
নাকের ছিদ্র চেপে ধরে রাখার সময় চেষ্টা করতে হবে হাঁচি, কাশির বেগ আটকানো, না হলে তার চাপে নাকের ভিতরের আবরণ আবার ছিঁড়ে যেতে পারে।
কাপড়ে বরফ মুড়ে বা ঠান্ডা জলে তোয়ালে ভিজিয়ে নাকের উপরে, চারপাশে দেওয়া হলে ধীরে ধীরে রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে।
নাক দিয়ে রক্ত বেরনোর সমস্যা থাকলে ঘন ঘন চা বা কফি খাবেন না। ধূমপান কমাতে হবে। ক্যাফেইন শরীরকে আরও শুষ্ক করে দেয়। বরং এমন পানীয় খেতে হবে যা শরীরকে আর্দ্র রাখে ও টক্সিন বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে।