কর্মব্যস্ত জীবনের মানসিক চাপ ও খাওয়াদাওয়ায় অনিয়মের জন্য উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। কিন্তু এটি এমনই একটি সমস্যা, যা আগে থেকে আঁচ করা কঠিন। আবার অনেক সময়ে লক্ষণ থাকলেও তা বুঝে উঠতে দেরি হয়ে যায় রোগীর। এই সমস্যা ডেকে আনে হৃদ্রোগের মতো সমস্যাও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাকে ‘সাইলেন্ট কিলার’ বলেছে। অর্থাৎ, এই রোগ নীরবে আপনার বড় ক্ষতি করে দিতে পারে। হু-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে তিন জনের মধ্যে এক জন প্রাপ্তবয়স্ক উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগের হাত ধরে কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যা ছাড়াও নানা রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। যাঁদের শরীরে ইতিমধ্যেই এই সমস্যা শুরু হয়েছে তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়ম করে ওষুধ খাওয়া ভীষণ জরুরি। তবে শুধু ওষুধ খেলেই চলবে না, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে, দৈনন্দিন কিছু অভ্যাসেও লাগাম টানা জরুরি।
১) অস্বাস্থ্যকর খাবার
রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হল, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া। অতিরিক্ত নুন, চিনি দেওয়া প্যাকেটজাত খাবার, প্রক্রিয়াজাত ভাজা খাবার নিয়মিত খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।
২) শরীরচর্চার অভাব
শরীরচর্চা না করলেই শরীরে ফ্যাট জমতে শুরু করে। অতিরিক্ত ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। তাই কেবল সুন্দর দেখানোর জন্যই নয়, শরীর চাঙ্গা রাখতেও নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। ভারী শরীরচর্চা না করলেও কার্ডিয়ো, যোগাসনের মতো হালকা ব্যায়াম নিয়ম করে করলেও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
৩) অনিদ্রা
যাঁরা অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। পাশাপাশি, অনিদ্রা ও মানসিক চাপ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। ফলে অনিদ্রা বাড়িয়ে দিতে পারে মানসিক চাপ, যা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
৪) অতিরিক্ত মদ্যপান
অতিরিক্ত মদ্যপান করলে শরীরে ফ্যাট জমে যা রক্তবাহী শিরা ও ধমনীর দেওয়াল ছোট করে দেয়। ফলে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা দেখা দেয়, যা রক্তচাপ বৃদ্ধি করে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
৫) মানসিক চাপ
ঘরে-বাইরে কাজের চাপ বা উদ্বেগ যদি মনের উপর প্রভাব ফেলে, সে ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিটি মানুষকেই নিয়মিত ধ্যান, যোগচর্চা করার নিদান দিয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেল্থ।