প্রশ্ন যদি থাকে, ত্বকের পরিচর্যা কেমন ভাবে করবেন? অনেকেরই উত্তর হবে— তারকারা যেমন করেন। যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, রোগা কী ভাবে হবেন? তারও উত্তর— তারকারা যে ভাবে হন। আবার যদি প্রশ্নটি হয়, ভাল থাকার জন্য কী খাবেন? উত্তর আসতেই পারে— তারকারা যা খান। সোজা কথায়, যে কোনও জিনিসের আদর্শ হিসাবে সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশ তারকাদেরই সামনে রাখেন। কারণ, তাঁরা সেই শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দেন তাঁদের ফিটনেসে, চেহারায়, ত্বকের জেল্লায়। তাই সবাই সেই পর্যায়ে পৌঁছ্তে চান। তাঁরা যা করেন, তা অন্ধ ভাবে অনুসরণ করেন। কিন্তু তারকারা কী করেন?
অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের পুষ্টিবিদ পূজা মখিজা এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, তারকারা সত্যি সত্যি কী খান, কী পান করেন, আর কোন মন্ত্রে ফিট থাকেন?
তারকাদের ওজন ঝরানোর জন্য কোন পানীয় খাওয়ার পরামর্শ দেন?
ওজন ঝরাতে নানা ধরনের ডিটক্স পানীয় খাওয়া এখন ট্রেন্ড। তারকারাও নানা ধরনের ডিটক্স পানীয়ের রেসিপি দিয়ে থাকেন। দীপিকার পুষ্টিবিদ অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি মূলত তিন ধরনের পানীয় খেতে বলি— জল, জল আর জল। প্রথমত, জল খিদে কমানোর একটা ভাল উপায়। তবে তা ছাড়াও জল বেশি খাওয়ার অনেক রকম উপকারিতা রয়েছে। জল আমাদের শরীরে ম্যাজিক করতে পারে। আমি তো বলি, জল হল তরল সোনা।’’ পূজা জানাচ্ছেন, শরীরের ৯৯ শতাংশ সমস্যা— সে ওজন হোক, মাইগ্রেনের য্ত্রণা হোক, বয়সের ছাপ হোক বা ত্বকে দাগ-ছোপের সমস্যা, এমনকি, অনেক ব্যথাবেদনাও নিয়মিত কতটা জল খাওয়া হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে। পূজা বলছেন, ‘‘যদি জলকে আপনার প্রিয় বন্ধু বানাতে পারেন, তবে অর্ধেকের বেশি শারীরিক সমস্যা জানলা দিয়ে পালাবে।’’
তারকাদের প্রাতরাশের থালায় কী কী থাকে?
যে কোনও স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের মতোই, পূজা বলছেন, ‘‘তারকাদের থালাও স্বাস্থ্যকর খাবারে ভরা থাকে। ওঁরা আলাদা কিছু খান না। তবে সমস্ত পুষ্টি যাতে শরীরে যায়, সে দিকে খেয়াল রাখেন।’’ তারকাদের প্রাতরাশের থালায় মূলত পাঁচ রকমের পুষ্টির একটি ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেন পুষ্টিবিদ— শর্করা, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজ। সেগুলি কেমন? পূজা বলছেন, ‘‘শর্করা হিসাবে ইডলি, দোসা, পোহা, রুটি। প্রোটিনে ডিমের সাদা অংশ বা ডালের চিলা বা অঙ্কুরিত ছোলা-মুগ। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট হিসাবে বীজ, বাদাম ইত্যাদি থাকে। আর ভিটামিন আর খনিজের জন্য থাকে সব্জি, ফল-মূল ইত্যাদি।’’
ফিট থাকার গোপন কথা কী?
খাবার না খেয়ে ওজন কমানো বা ভাল থাকা যায় না। পূজার পরামর্শ, ‘‘মনে রাখবেন, খাবার আপনার শত্রু নয়। যদি খাবারকে আপনি শত্রু বানান, তবে আমার মতো পুষ্টিবিদেরা আপনার বন্ধু হয়ে যাবেন। যেটা কখনওই কাম্য নয়। আপনার আসল বন্ধু হল খাবার। শুধু জানতে হবে বন্ধুকে কী ভাবে প্লেটে সাজাতে হবে। কে প্রিয় বন্ধু, কোনটি ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আর কারা শুধুই চেনা-পরিচিত। তাই যদি দীর্ঘ মেয়াদে ভাল থাকতে চান, চেহারা ভাল রাখতে চান, তবে এই একটি বিষয়ে সবার আগে জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন।’’