ঋতুবদলের এই মরসুমে বড়দের মধ্যেও কিন্তু এই রোগের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। ছবি: প্রতীকী।
শহর থেকে জেলা, সর্বত্রই হাসপাতাল ভরে যাচ্ছে জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশু রোগীতে। নেপথ্যে রয়েছে পুরনো ও চেনা সেই আপাত নিরীহ অ্যাডিনোভাইরাস। এই ভাইরাসের প্রকোপ আগেও ছিল। তবে এ বছরে যেন তাঁর ভয়াবহতা বেড়েছে। মূলত শিশুদের শরীরে এই ভাইরাসের ঝুঁকি বেশি। তবে কি বড়দের কাবু করতে পারছে না এই ভাইরাস?
ঋতুবদলের এই মরসুমে বড়দের মধ্যেও কিন্তু এই রোগের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বললেন, ‘‘বড়রাও কিন্তু সমান ভাবে এই ভাইরাসের কবলে পড়ছেন। গলাব্যথা, ঢোক গিলতে অসুবিধা, দীর্ঘ দিন ধরে কাশি— এই সবই কিন্তু অ্যাডিনোভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধার উপসর্গ। তবে বড়দের শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও বড় রকম কোনও ক্ষতি করতে পারছে না এই ভাইরাস। শিশুদের ক্ষেত্রে যেমন মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে, বড়দের ক্ষেত্রে তেমন কোনও খবর এখনও আসেনি। তাঁদের মাইল্ড ইনফেকশন হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন বড়রা।’’
তবে কি বড়রা সতর্ক না হলেও চলবে?
বড়দের শরীরে এই ভাইরাস বাসা বাঁধলে সেই থেকে শিশুরাও কিন্তু আক্রান্ত হতে পারে। চিকিৎসক বললেন, ‘‘অ্যাডিনোভাইরাসের চরিত্রটা ঠিক কিন্তু কোভিডের মতোই। হাঁচি, কাশির মাধ্যমে কিংবা রোগীর ছোঁয়া কোনও জিনিসের সংস্পর্শে এলেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বিশেষ করে যাঁদের বাড়িতে শিশু আছে, তাঁদের কিন্তু বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। জ্বর-সর্দি-কাশি হলে শিশুদের থেকে দূরে থাকতে হবে। মায়ের এ রকম কোনও উপসর্গ হলে শিশুর সঙ্গে না ঘুমিয়ে আলাদা ঘরে ঘুমোতে হবে। ভিড়ভাড় এড়িয়ে চলুন। বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে তবেই শিশুর সঙ্গে মেলামেশা করুন। জ্বর হলে অফিস-কাছারি না যাওয়াই ভাল। সেখান থেকেও অন্যদের মধ্যে ছড়াচ্ছে এই রোগ। ফল ভুগতে হচ্ছে শিশুদের। এই সময়ে মাস্ক ব্যবহার আবশ্যিক।’’
এই রোগে আক্রান্ত হলেও এর কিন্তু তেমন চিকিৎসা নেই, ওষুধও নেই। কেবল মাত্র সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট দিয়ে অ্যাডিনোভাইরাস আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, যাঁদের অক্সিজেন লাগছে, তাঁদের অক্সিজেনের জোগান দিতে হচ্ছে, প্রয়োজনে ভেন্টিলেশনে রাখতে হচ্ছে রোগীকে। সতর্কতা বাড়ানো ছাড়া এই রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করার উপায় নেই। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘স্কুলগুলিতে নজরদারি বাড়াতে হবে। কোনও শিশুর জ্বর-সর্দি-কাশি হলেই তাকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে! বাবা-মাকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের জ্বর হলে স্কুল, কোচিং সেন্টার, সাঁতারের ক্লাসে না পাঠানোই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy