১০১ বছর বয়স। নীরোগ শরীরে এখনও নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। বয়সের ভারে শরীর ঝুঁকে যায়নি। দৃষ্টিও ঝাপসা হয়নি। বার্ধক্যজনিত রোগ তাঁকে কাবু করতে পারেনি। তিনি আমেরিকার জনপ্রিয় পুষ্টিবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক জন স্কার্ফেনবার্গ। ইউটিউবে তাঁর একটি সাক্ষাৎকারে বেশ হইচই পড়ে গিয়েছে। জন জানিয়েছেন, কোনও রকম ‘অ্যান্টি-এজিং’ চিকিৎসা না করিয়ে, ওষুধপত্র বা সাপ্লিমেন্ট না নিয়েও তিনি ফিট। মুখে বলিরেখা পড়লেও, তাঁর শরীরের বয়স এখনও কম। বার্ধক্য ঠেকিয়ে যৌবন ধরে রাখার চিকিৎসা নিয়ে যখন বিশ্ব জুড়েই বিজ্ঞানীরা মাথা ঘামাচ্ছেন, তখন জন জানালেন কী ভাবে সাধারণ জীবনযাপন করেই তিনি বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন।
শতায়ু হওয়ার সহজ পদ্ধতি কী?
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রাক্তনী জন লোমা লিন্ডা ইউনিভার্সিটির গবেষক ও অধ্যাপক। গবেষণার কাজ এখনও করছেন। শতবর্ষে পৌঁছেও সুস্থ ও চনমনে থাকার রহস্য জানিয়েছেন।
১) ধূমপান নয়
নিকোটিন ও তামাকজাত দ্রব্য জীবন থেকে ছেঁটে ফেলতে হবে। ধূমপান ছাড়লেই শরীরে জমা দূষিত পদার্থ বেরোতে থাকবে। কোষের পুনর্গঠন শুরু হবে, হার্ট, কিডনি ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
আরও পড়ুন:
২) অ্যালকোহল নৈব নৈব চ
হৃদ্রোগ, ক্যানসার, কিডনির রোগ বা লিভার সিরোসিস থেকে বাঁচতে মদ্যপান ছাড়তে হবে। কম বয়স থেকেই যদি আসক্তি ত্যাগ করতে পারেন, তা হলে বয়সকালে দুরারোগ্য ব্য়াধি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
৩) নিয়ম মেনে শরীরচর্চা
জন জানিয়েছেন, তিনি জীবনে জিমে যাননি। কিন্তু শরীরচর্চা করেছেন নিয়ম মেনে। যন্ত্র-নির্ভর ব্যায়াম নয়, বরং প্রকৃতির মাঝে হাঁটাহাঁটি, সাঁতার, যোগব্যায়ামই তাঁর সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। নিয়ম করে প্রতি দিন সকালে ২ মাইল হাঁটা, বাগান করা, সবুজ গাছপালার পরিচর্যা করলে দীর্ঘ সময় অবধি অসুখবিসুখ ঠেকিয়ে রাখা যাবে বলেই পরামর্শ তাঁর।
আরও পড়ুন:
৪) রাতে উপোস
রাতের খাওয়া ছাড়লে হজমশক্তি আরও ভাল হয় বলেই মত শতায়ু পুষ্টিবিদের। জানিয়েছেন, পাকস্থলীকে বিশ্রাম দিতে হবে। এতে বিপাকের হার বাড়বে, শরীরে প্রদাহ কমবে, হার্টে রক্ত চলাচল ভাল হবে এবং ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রিত হবে।
৫) নিরামিষ আহার
২০ বছর বয়সে মাংস খাওয়া ছেড়েছিলেন। তার পর বিশুদ্ধ নিরামিষেই রুচি হয়েছে তাঁর। পুষ্টিবিদের পরামর্শ, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন খেলেই শরীরে শক্তি হবে। শাকসব্জি, ফল বেশি করে খেতে হবে। খনিজ ও ভিটামিনের জন্য খেতে হবে নানা রকমের বাদাম ও বীজ। সব্জি ও ফল খেয়েই তাঁর পেশির জোর আজও বেশি।
৬) চিনিতে ‘না’
চিনি ও মিষ্টিজাতীয় সব রকম খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। বছরের পর বছর চিনি ও মিষ্টি না খেয়ে থাকার কারণে তাঁর শরীরে হরমোনের কোনও গোলমাল হয়নি বলেই জানিয়েছেন ১০১ বছরের পুষ্টিবিদ।
৭) জাঙ্ক ফুড নয়
পরিমিত আহারই সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। ট্রান্স ফ্যাট রয়েছে, এমন খাবার খাওয়া ছাড়তে হবে। শরীর সুস্থ রাখতে ও বয়স ঠেকিয়ে রাখতে হলে জাঙ্ক ফুড, ভাজাভুজি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া একেবারেই ছেড়ে দিতে হবে।