Advertisement
E-Paper

বিয়ার, নরম পানীয়ের কাচের বোতলে শয়ে শয়ে প্লাস্টিককণা? রক্তে মিশে নষ্ট করছে মস্তিষ্কের কোষ

প্লাস্টিকের বোতল বাতিল করে কাচের বোতলে জল রাখছেন যাঁরা, তাঁদেরও এ বার সতর্ক হওয়ার পালা। এক লিটার বিয়ারের বোতলেও শতাধিক গুঁড়ো প্লাস্টিক মিশে থাকে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৫ ১২:৪৬
Drinks including water, soda, beer and wine in glass bottles contain more microplastics than plastic bottles

বিয়ার, সোডার কাচের বোতলেও প্লাস্টিক? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কাচের বোতলেও মাইক্রোপ্লাস্টিক? নুন,চিনি, খাবার জল সব কিছু থেকেই প্লাস্টিকের গুঁড়ো ঢুকছে শরীরে। প্লাস্টিকের বোতল কতটা বিপজ্জনক, তা নিয়ে সচেতনতার বার্তা চতুর্দিকে। তাই প্লাস্টিকের বোতল বাতিল করে কাচের বোতলে জল রাখছেন যাঁরা, তাঁদেরও এ বার সতর্ক হওয়ার পালা।

প্লাস্টিকের বোতলভর্তি জলে গুঁড়ো প্লাস্টিকের কণা মিশে থাকে, এমন তথ্য আগেই দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, প্লাস্টিকের বোতলের চেয়ে অন্তত দ্বিগুণের বেশি সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণা মিশে রয়েছে কাচের বোতলে। দোকান থেকে যে নরম পানীয়, বিয়ার, সোডা বা ওয়াইয়ের বোতল কেনা হয়, তার মধ্যে অগণিত গুঁড়ো প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে। এগুলি শরীরে ঢুকেই রক্তে মিশে যায়। তার পর সোজা চলে যায় মস্তিষ্কে। ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট করতে শুরু করে। যার প্রভাব পড়ে শরীরের বাদবাকি অঙ্গগুলিতে।

‘ফ্রেঞ্চ ফুড সেফটি এজেন্সি’র বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, দোকান থেকে নরম পানীয় বা সোডার যে বোতলগুলি কেনা হয়, সেগুলি একেবারেই ‘বিপিএ’ মুক্ত নয়। এক লিটার কাচের বোতলে কম করেও শতাধিক প্লাস্টিকের গুঁড়ো মিশে থাকে। বিয়ার, ওয়াইন, সোডার বোতলে এদের সংখ্যা বেশি। নরম পানীয়ের এক লিটার কাচের বোতলে প্রায় ৩০টি মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা পাওয়া গিয়েছে, লেমোনেডের বোতলে সেই সংখ্যা প্রায় ৪০, বিয়ারের বোতলে ৬০ থেকে ১০০। কখনও তারও বেশি। বোতলের মাপ ও আকার অনুযায়ী তা নির্ভর করে।

কেন কাচের বোতলে মিশছে প্লাস্টিকের কণা?

কাচের বোতলে যে ঢাকনা বা ক্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি তৈরি হচ্ছে পলিমার দিয়ে। গবেষকেরা দেখেছেন, ওই ক্যাপটিই যত নষ্টের গোড়া। সেখান থেকেই প্লাস্টিকের কণা মিশে যাচ্ছে জলে বা নরম পানীয়ে। দেখা গিয়েছে, পলিমার দিয়ে তৈরি ঢাকনা থেকে শয়ে শয়ে গুঁড়ো প্লাস্টিক বার হয়। এদের আকার ৫ মিলিমিটারেরও কম। প্লাস্টিকের এই সূক্ষ্ম কণাগুলিকে বলে মাইক্রোপ্লাস্টিক। গবেষণা বলছে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের থেকেও সূক্ষ্ম ন্যানোপ্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে বোতলের জলে। এদের দৈর্ঘ্য ১ থেকে ৫০০০ মাইক্রোমিটারের মতো। মানুষের মাথার চুলের চেয়েও সূক্ষ্ম। যাঁরা প্রায়ই এই ধরনের বোতল থেকে নরম পানীয় বা বিয়ার খান, তাঁদের রক্তে ৫ গ্রাম করে মাইক্রোপ্লাস্টিক জমা হতে থাকে।

দেশের সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড সিঙ্গল-ইউজ় প্লাস্টিকে তৈরি ব্যবহার্য সামগ্রীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি কেরছিল। এর আগেও ৫০ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিকের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও তা বহাল তবিয়তে বেঁচে রয়েছে পাড়ার দোকানে, গৃহস্থালিতে। আর এখন মানুষের রক্তে, মস্তিষ্কে। ইউনিভার্সিটি অফ নিউ মেক্সিকো হেল্‌থের বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণা করেছিলেন অনেক আগে। তাঁরা জানান, ২০১৬ সালে মানুষের মস্তিষ্কের পেশি পরীক্ষা করে যে পরিমাণ প্লাস্টিক কণা পাওয়া গিয়েছিল, ২০২৪ সালে তা-ই প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। মস্তিষ্কে জমে থাকা প্লাস্টিকের কণা স্মৃতিনাশ, অ্যালঝাইমার্স-সহ নানা রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে । অধিক মাত্রায় প্লাস্টিক কণা শরীরে জমলে পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। মহিলাদের বিভিন্ন হরমোন ক্ষরণে বাধা তৈরি করে। পাশাপাশি, নানা স্নায়বিক রোগের কারণও হয়ে ওঠে।

Microplastic Plastic pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy