Advertisement
E-Paper

খুদেকে নিয়ে প্রথম বার বেড়াতে যাওয়ার আগে কয়েকটি কথা মনে রাখুন, পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক

ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে প্রথম বার বেড়ানোর পরিকল্পনা করলে আনন্দ-উত্তেজনার পাশাপাশি খুদের স্বাস্থ্য নিয়েও চিন্তা থাকে বাবা-মায়ের মনে। এ বিষয়ে পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৫
শিশুকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার আগে জেনে নিন চিকিৎসকেরা কী বলছেন?

শিশুকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার আগে জেনে নিন চিকিৎসকেরা কী বলছেন? ছবি: সংগৃহীত।

সন্তানের আগমন ঠিক যতটা সুখের, ততটা ঝক্কিরও। দিনের পর দিন খুদের কাঁথা বদলানো, মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে তাকে স্তন্যপান করানো, নিজের জগৎ ভুলে তার ভাল থাকাতে নিজেকে সঁপে দেওয়ায় কখনও কখনও নতুন মায়েদের মনে অবসাদ বাসা বাঁধে। মন চায় খোলা আকাশ, সমুদ্র কিংবা পাহাড়ের সান্নিধ্য। কিন্তু খুদেকে নিয়ে বেড়াতে যাবেন, যদি শরীর খারাপ হয়? বাইরের পরিবেশের সঙ্গে শিশু যদি না মানিয়ে নিতে পারে, এমন আশঙ্কাও থাকে ভিতরে ভিতরে। এক দিকে, বেড়ানোর প্রবল ইচ্ছা, অন্য দিকে, খুদের জন্য ভয়, এই দুইয়ের মাঝে দোদুল্যমান থাকে অভিভাবকদের মন। শিশুকে নিয়ে বাইরে গেলে কী করবেন, কোন দিকে খেয়াল রাখবেন পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকেরা।

ছ’মাসের সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া যায়, প্রশ্ন থাকে অনেক অভিভাবকেরই। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মত, মা যে বয়স থেকে সন্তানকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে স্বচ্ছন্দ হবেন, সেই বয়স থেকে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু ছ’মাস বয়স পর্যন্ত শিশু স্তন্যপান করে। রাস্তাঘাটে স্তন্যপান করানোর সুযোগ ও সুবিধার কথা মাথায় রেখে ভ্রমণের পরিকল্পনা করা দরকার। তা ছাড়া, এত কম বয়সি শিশুর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম থাকে। সেই দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।

শিশুরোগ চিকিৎসক সুমন পোদ্দার একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মা-বাবার বেড়ানোর আনন্দ যেন শিশুর জীবনেও থাকে। ঝটিকা সফর বা বিশ্রামের সময় না রেখে ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা করে তাদের কষ্ট দেওয়া অর্থহীন। তাঁর পরামর্শ, খুদে যখন একটু-আধটু কথা বলতে পারবে, তখনই বেড়াতে যাওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে শিশু তার কষ্টের কথা বলতে পারবে। একেবারে ছোট্ট শিশুর কোনও কষ্ট হলে সে বোঝাতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে মা যদি কান্নার কারণ বুঝতে না পারেন, সমস্যা হতে পারে।

অনেক সময়ে বেড়ানো ছাড়াও প্রয়োজনে শিশুকে নিয়ে কোথাও যেতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে যথা সম্ভব ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলাই ভাল বলে জানাচ্ছেন সুমন। তাঁর পরামর্শ, ছোটদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে কাছেপিঠে বা এমন কোনও স্থান নির্বাচন করা উচিত যেখানে প্রয়োজনে হাসপাতাল বা চিকিৎসা সহায়তা পাওয়া সম্ভব। শিশুদের নিয়ে বেশি উচ্চতাজনিত কোনও স্থানে বা একেবারে বিচ্ছিন্ন কোনও জায়গায় ভ্রমণে তাঁর সায় নেই। চিকিৎসকের কথায়, আচমকা শরীর খারাপ হলে, সন্তানকে নিয়ে ভোগান্তির শেষ থাকবে না। কখন, কোথায় কী ভাবে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়বে, আগাম বলা সম্ভব নয়। যদি কেউ চেনা ছকের বাইরে কোথাও যেতে চান, সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখা দরকার জায়গাটি যেন বড় শহর থেকে খুব বেশি দূরে না হয়।

অবশ্য পাহাড়ি এলাকায় বা বেশি উচ্চতায় ছোটদের একেবারেই নিয়ে যাওয়া যাবে না তা বলছেন না চিকিৎসক সুবর্ণ। কিন্তু খুব ছোটদের না নিয়ে যাওয়াই ভাল বলে তিনি জানাচ্ছেন। তিনি বলছেন, ‘‘নাথুলা, বাবা মন্দির বা গুরুদোংমারের মতো জায়গায় গেলে অবশ্যই উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে ধাপে ধাপে উঠতে হবে। যেমন, ৭ হাজার ফুট থেকে ১২ হাজার ফুট উচ্চতায় এক ধাক্কায় উঠলে শিশু কেন, বড়দেরও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় এক দিন থেকে শরীরকে সেই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর সুযোগ দেওয়া খুব জরুরি।’’ একইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, বেড়াতে যেতে গিয়ে শিশুর টিকাকরণ যেন বাদ পড়ে না যায়।

খাওয়া

ছ’মাসের শিশু স্তন্যদুগ্ধ পান করে বলে বাইরের খাবারের প্রয়োজন নেই। কিন্তু ১-২ বছরের শিশু বাড়ির খাবার খেতে অভ্যস্ত। তার উপযোগী খাবারের বন্দোবস্ত থাকবে এমন স্থান বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি জল ফুটিয়ে খাওয়া জরুরি।

বিমানে ও গাড়িতে ভ্রমণ

ছোটদের নিয়ে বিমানে চড়লে কান বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে শিশুরোগ চিকিৎসক সুমন পোদ্দারের পরামর্শ বিমান আকাশে ওড়া ও অবতরণের সময়টুকুতে শিশুর মুখে জলের বোতল দেওয়া ধরিয়ে দিলে, সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রয়োজনে কানে তুলো গুঁজে দেওয়া যেতে পারে। গাড়িতে ভ্রমণে খুব ছোটদের ‘মোশন সিকনেস’ বা গতিজনিত অসুস্থতা সাধারণত হয় না। তবু খুদে একটু বড় হলে এই ধরনের সমস্যা হলে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ, সব সময়ে বমি, মাথা ঘোরার ওষুধ কাজ না-ও করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভাল হয় যদি কিছু ক্ষণ অন্তর বিরতি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছনো যায়। খোলা হাওয়ায় মোশন সিকনেস জনিত কষ্টে খানিক আরাম মেলে।

প্রয়োজনীয় ওষুধ

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর পরামর্শ, শিশুকে যে চিকিৎসক দেখেন, তাঁর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা করে নেওয়া জরুরি। শিশুরোগ চিকিৎসক বলছেন, ওআরএস ও পরিশুদ্ধ পানীয় জল সঙ্গে রাখতেই হবে। পাশাপাশি, জ্বর, সর্দিকাশি, পেটখারাপ, পেটব্যথা, বমি, কেটে গেলে লাগানোর ওষুধ সঙ্গে রাখা প্রয়োজন।

Travel Tips Travel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy