Advertisement
E-Paper

ভেজাল পনির-চিজ়, দুধ থেকেই কি ছড়াচ্ছে গিলেন-বারি? শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কতটা? জানালেন চিকিৎসকেরা

দিল্লির এমসের চিকিৎসকেরা দাবি করেছেন, দূষিত জল ও খাবার থেকেই রোগটি এমন মারাত্মক আকার নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। ভেজাল পনির, চিজ় অথবা না ফোটানো দুধ বা ভেজাল মেশানো দুধ থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে বহু জনের মধ্যে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৫২
Guillain-Barre Syndrome cases rises in Pune, Doctor warns against undercooked poultry and unpasteurized dairy products

গিলেন-বারি কী থেকে ছড়াচ্ছে? এই রোগ থেকে বাঁচার উপায় বললেন চিকিৎসকেরা। ফাইল চিত্র।

ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনিই খলনায়ক। এর সঙ্গে জুটি বেঁধেছে নোরোভাইরাস। এই দুই সংক্রামক জীবাণুর দাপটেই পুণেতে স্নায়ুর বিরল রোগ গিলেন-বারি সিনড্রোমে আক্রান্ত একের পর এক। মহারাষ্ট্রে এক জনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গিয়েছে। আগে যেখানে ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে এক বা দু’জনের হত এই রোগ, সেখানে পুণেতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সংক্রমিতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। কী থেকে এবং কেন ছড়াচ্ছে এই রোগ, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। দিল্লির এমসের চিকিৎসকেরা দাবি করেছেন, দূষিত জল ও খাবার থেকেই রোগটি এমন মারাত্মক আকার নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। ভেজাল পনির, চিজ় অথবা না ফোটানো দুধ বা ভেজাল মেশানো দুধ থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে বহু জনের মধ্যে।

এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “যে সব ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া শ্বাসযন্ত্রের রোগ, গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের মতো পেটের সংক্রমণ, ডায়েরিয়া বা অ্যাবডোমিন্যাল ইনফেকশন ঘটায়, তারাই গিলেন-বারি সিনড্রোমের কারণ হতে পারে। এর মধ্যে ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর মারাত্মক পেটের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। পুণেতে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশেরই পেশির অসাড়তা, ডায়েরিয়া, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা গিয়েছে।”

পুষ্পিতার কথায়, নোরোভাইরাস বা ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর এই দু’টিই ‘স্টম্যাক বাগ’। দূষিত খাবার, জল, পচা-বাসি খাবার, ভেজাল খাবারে জন্মায় ও শরীরে ঢোকে। ঠিকমতো পাস্তুরাইজ়েশন হয়নি এমন পনির বা চিজ়, অথবা ভেজাল পনির থেকে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। তিন-ছ’দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। আগে রোগীর শরীরের নিম্ন ভাগ আক্রান্ত হয়। পেশির অসাড়তা দেখা দিতে থাকে। যাকে বলে ‘অ্যাকিউট ফ্ল্যাসিড প্যারালিসিস’। ধীরে ধীরে শরীরের উপরিভাগ আক্রান্ত হয়। রোগীর শ্বাসযন্ত্রে বাসা বাঁধে ভাইরাস। তা থেকে নাক, গলা, মুখমণ্ডলে সংক্রমণ ঘটে। কারও ‘ফেশিয়াল প্যারালিসিস’ হয়, অনেকের আবার ‘রেসপিরেটরি প্যারালিসিস’ও দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে রোগী মিনিটে কত বার শ্বাস নিচ্ছেন, কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়ছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। যদি দেখা যায়, শ্বাসের হার কমছে তা হলে দ্রুত ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয় রোগীকে।

গিলেন-বারিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি শিশুদেরও রয়েছে। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জির ধাত রয়েছে, সর্দিকাশিতে বেশি ভোগে অথবা ঘন ঘন পেটের গোলমাল হয়, তাদের সাবধানে থাকতে হবে। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের কথায়, শিশুদের শরীরে ক্যাম্পাইলোব্যাক্টরের সংক্রমণ হলে ডায়েরিয়া, বমির লক্ষণ দেখা দেবে প্রথমে। এর পরে হাত ও পায়ের আঙুল অসাড় হতে থাকবে, হাতে ব্যথা হবে, শ্বাসকষ্ট শুরু হবে এমনকি দৃষ্টিও ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।

গিলেন-বারি থেকে বাঁচতে কী কী করবেন?

১) বাইরের খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

২) দুধ ভাল করে ফুটিয়ে তবেই খেতে হবে। প্যাকেটের দুধ কিনে এনে ভাল করে জ্বাল দিতে হবে। কাঁচা দুধ না খাওয়াই ভাল।

৩) পনির, চিজ় যা-ই কিনুন না কেন, দেখে কিনতে হবে। দীর্ঘ দিন রেখে দেওয়া পনির বা খোলা বিক্রি হওয়া চিজ় কিনবেন না।

৪) বাসি খাবার একেবারেই খাবেন না। বাড়িতে কাঁচা আনাজ, মাছ-মাংস আনলে তা ভাল করে ধুয়ে তবেই রান্না করবেন।

৫) জল ফুটিয়ে খেলে ভাল। রাস্তা থেকে কেনা শরবত, ফলের রস, লস্যি বা প্যাকেটের ঠান্ডা পানীয় খাবেন না।

Guillain-Barré syndrome Nerve trouble Neuropathy Norovirus Bacterial Diseases Pune Maharashtra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy