লোহিত রক্তকণিকার আয়রন সমৃদ্ধ প্রোটিন হল হিমোগ্লোবিন। যা ফুসফুস থেকে শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেন বহন করে এবং ফুসফুসে কার্বন ডাই অক্সাইড ফিরিয়ে দেয়, যার ফলে রক্ত লাল রং ধারণ করে। শরীরের টিস্যুতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন বহন করার জন্য হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পর্যাপ্ত রাখা দরকার। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ প্রতি ডেসিলিটারে গ্রাম হিসেবে মাপা হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১৪ থেকে ১৮ গ্রাম/ডেসিলিটার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৬ গ্রাম/ ডেসিলিটার। যখন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা এর চেয়ে কম থাকে তখন বুঝতে হবে, রোগী রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন।
রক্তাল্পতার ফলে শরীরে ক্লান্তি ও দুর্বলতা দেখা দেয়। পাশাপাশি, ত্বকে ফ্যাকাশে ভাব আসে। তা ছাড়া শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, দ্রুত বা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন, ভঙ্গুর নখ, মনোযোগের অভাব, ইত্যাদি লক্ষ করা যায়। সে সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ওষুধের পাশাপাশি ঘরোয়া উপায়েও রক্তাল্পতার মোকাবিলা করা দরকার।
মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহ জানাচ্ছেন, ৪টি ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে খুব সহজেই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে। তার জন্য প্রয়োজন একটি বিশেষ পানীয়ের প্রস্তুতপ্রণালী। পুষ্টিবিদের সুপারিশ করা স্বাস্থ্যকর এই পানীয়ের জন্য প্রয়োজন বিট, মধু, লেবুর রস এবং খেজুর।
বিটের সঙ্গে আর কী কী দিতে হবে এই পানীয় বানানোর জন্য? ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে বানাবেন স্বাস্থ্যকর এই পানীয়?
বিট ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে নিন প্রথমে। একটি কাপের অর্ধেক ভরে গেলেই যথেষ্ট। সঙ্গে এক চা চামচ মধু, এক টেবিল চামচ লেবুর রস, দু’টি নরম খেজুর আর এক কাপ জল। বিট এবং খেজুর নিয়ে মিক্সার গ্রাইন্ডারে পিষে নিন মিহি করে। তার পর রসটুকু ছেঁকে নিয়ে তাতে মধু, লেবুর রস আর জল মিশিয়ে দিন। প্রস্তুত আপনার স্বাস্থ্যকর পানীয়।
এই উপকরণগুলির উপকারিতা কী?
বিট: লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে শরীরে রক্তপ্রবাহ উন্নত করে।
মধু: খাবার থেকে আয়রন শরীরে ভাল ভাবে শোষণ করার জন্য মধুর অবদান অঢেল।
লেবু: লেবুর ভিটামিন সি-ও শরীরে আয়রন শোষণে সাহায্য করে।
খেজুর: আয়রন সমৃদ্ধ খেজুর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য কার্যকরী।
আরও পড়ুন:
পুষ্টিবিদের পরামর্শ, যদি টানা ১৪ দিন এই পানীয় পান করা যায়, তা হলে দ্রুত হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে শরীরে। একই সঙ্গে শরীরে শক্তিবৃদ্ধি হবে। পাশাপাশি, রক্তে অক্সিজেনের সরবরাহও বাড়বে।