সুস্থ থাকতে হলে বাইরের ভাজাভুজি এড়িয়ে চলা উচিত, প্রোটিন নির্ভর ডায়েট হওয়া উচিত, নিয়মিত মদ্যপান বর্জন করা দরকার— এমন অনেক কিছুই সকলে জানেন। কিন্তু যা জানা ছিল বা আছে, তার পুরোটাই কিন্তু সব সময় ঠিক না-ও হতে পারে।
‘স্বাস্থ্যকর অভ্যাস’ বলে জানা ধারণাও অনেক সময় অসুখের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে বলে সতর্ক করছেন হার্টের চিকিৎসক এলিজাবেথ ক্লোডাস।আমেরিকার এই চিকিৎসক মাঝেমধ্যে সমাজমাধ্যমে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি সতর্ক করেছেন, স্বাস্থ্যকর বলে জানা অভ্যাসও নীরবে শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
হাই প্রোটিন ডায়েট: স্বাস্থ্যসচেতন অনেকেই সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিয়ো দেখে হাই প্রোটিন খাবার রাখেন পাতে। শরীর ভাল রাখতে এবং মেদ ঝরাতে হলে প্রোটিন খেতে হবে, এমনই বলেন পুষ্টিবিদ থেকে ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা। কিন্তু সকলের শরীর সমান নয়। তা ছাড়া, শুধুই প্রোটিন জাতীয় খাবার শরীরে পুষ্টির ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে কিডনি এবং লিভারে বাড়তি চাপ পড়তে পারে। এমনকি, হৃদ্যন্ত্রের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সমীক্ষা বলছে, অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন খেলে কিডনির সমস্যা হতে পারে, হজমেও প্রভাব পড়তে পারে। তাই শরীরের যতটা দরকার, ততটাই খেতে হবে এবং প্রাণিজ প্রোটিনের সঙ্গে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যুক্ত করাও দরকার।
সপ্তাহশেষে মদ্যপান: মদ্যপান শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। সেই ক্ষতি এড়াতে সপ্তাহভর না খেয়ে ছুটির দিনে মদ্যপান করছেন? অনেকেরই ধারণা, সপ্তাহে এক বা দু’দিন মদ খেলে তেমন ক্ষতি হয় না। চিকিৎসক সতর্ক করছেন, এমন ভাবনা থেকে অনেকে এক দিনে অতিরিক্ত মদ খেয়ে ফেলেন। স্বল্প সময়ে অতিরিক্ত মদ্যপান নিঃশব্দেই শরীরের ক্ষতি করে।
শরীরচর্চা: শরীরচর্চা সুস্থ থাকার চাবিকাঠি, তবে অতিরিক্ত শরীরচর্চা নয়। ক্লান্ত শরীরে দীর্ঘ সময় ধরে, বিশ্রাম না নিয়ে ব্যায়াম করলে, ওজন তুললে উল্টে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। স্বল্প সময়ে সুগঠিত দেহ পাওয়ার লক্ষ্যে অনেকেই অতিরিক্ত শরীরচর্চা করেন। কেউ আবার, বেশি খাওয়া হয়ে গিয়েছে বলে বাড়তি ব্যায়াম করে ক্যালোরি ক্ষয়ের চেষ্টা করেন। এমন সাধারণ প্রবণতাগুলিও শরীরের ক্ষতি করে।
আরও পড়ুন:
সুস্থ থাকার শর্ত কী?
· শুধু প্রোটিন নয়, কার্বোহাইড্রেট, খনিজ, ভিটামিন, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের সঠিক সমন্বয়।
· ক্লান্ত শরীর, যন্ত্রণা, বদহজম সংক্রান্ত সমস্যা অনেক রকম সঙ্কেত দেয়। শরীরকে বোঝায়, এখন বিশ্রাম দরকার। লক্ষণ দেখে শরীর কী চাইছে, বোঝা জরুরি।
· নিয়ম মেনে শরীরচর্চা এবং প্রয়োজনমতো ডায়েট বেছে নেওয়া উচিত। শরীর কী চায়, বুঝতে হবে।
· স্বল্প সময়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যপূরণের বদলে দীর্ঘ মেয়াদে সুস্থ কী ভাবে থাকা যায়, সেটাই জীবনচর্যার লক্ষ্য হওয়া দরকার।
চিকিৎসক এলিজাবেথ বলছেন, কোনও অভ্যাস তখনই স্বাস্থ্যকর হয়, যখন তাতে ভারসাম্য থাকে।