Advertisement
E-Paper

ঘরে ঘরে ভাইরাল জ্বর, তাপমাত্রা নামছে না সহজে, প্রচণ্ড দুর্বলতা, কী কী পরীক্ষা অবশ্যই করাতে হবে?

জ্বর কমে গেলেও গায়ে, হাত-পায়ে অসহ্য ব্যথা ভোগাচ্ছে। দুর্বলতা কাটতে চাইছে না সহজে। এই সমস্যার নেপথ্যে কোন কোন ভাইরাস?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৫ ১২:৩৪
Hospitals and clinics are witnessing an increased number of patients suffering from viral fever

জ্বর কমছে না, সারা গায়ে অসহ্য ব্যথা,কী কী পরীক্ষা অবশ্যই করিয়ে নিতে হবে। ছবি: এআই।

ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশির প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। শিশু থেকে মাঝবয়সি, বয়স্ক, সকলকেই কাবু করছে এই জ্বর। তিন দিনেও তাপমাত্রা নামছে না অনেকের। সেই সঙ্গে সর্দি-কফ জমছে। আবার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে, চিকিৎসকের চেম্বারেও। পরিবারের এক জন আক্রান্ত হলে, ছড়াচ্ছে অন্যদের মধ্যেও। জ্বর কমে গেলেও গায়ে, হাত-পায়ে অসহ্য ব্যথা ভোগাচ্ছে। দুর্বলতা কাটতে চাইছে না সহজে। এই সমস্যার নেপথ্যে কি আবার কোভিড? অনেকে তা মনে করলেও চিকিৎসকেরা সব থেকে বেশি দায়ী করছেন আবহাওয়ার তারতম্যে ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বাড়ন্তকে।

কেন এত জ্বর হচ্ছে ঘরে ঘরে?

এ সময়ের অধিকাংশই ভাইরাল জ্বর, এমনটাই মত সংক্রামক রোগ বিষয়ক চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের। তিনি জানান, বর্ষায় রাইনোভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, মেটানিউমো ভাইরাস, অ্যাডিনোভাইরাস-সহ নানা ধরনের ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়াও রয়েছে। আবার গত এক মাস ধরে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে। জমা জল ঠেলে লোকজনকে যাতায়াত করতে হয়েছে। তা থেকে জলবাহিত কিছু রোগও ছড়িয়েছে। শুধু জ্বর নয়, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা ভোগাচ্ছে অনেককে। সেই সঙ্গে পেটের অসুখ, ডায়েরিয়ার প্রকোপও বেড়েছে।

বর্ষার যে দু'টি রোগ সবচেয়ে বেশি দেখা দিচ্ছে, তা হল ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া। বর্ষার জমা জল থেকে মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়া শিশু থেকে বড়, সকলেরই হতে পারে। এই ম্যালেরিয়া যদি ম্যালিগন্যান্ট হয়ে যায় তা থেকে মৃত্যুও হতে পারে। আর ডেঙ্গির প্রকোপ তো আছেই। অতিরিক্ত জ্বর, গায়ে ব্যথা, দুর্বলতা, র‌্যাশ বড় সমস্যা ডেকে আনতে পারে। মেডিসিনের চিকিৎসক রণবীর ভৌমিক জানাচ্ছেন, তিন দিনের জ্বর ও গায়ে ব্যথা নিয়ে অনেকে আসছেন। তাঁদের পরীক্ষা করে অনেক সময়েই ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গি ধরা পড়ছে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাচ্ছে অনেকের, প্লেটলেট বা অনুচক্রিকার সংখ্যাও কমছে। কাজেই জ্বর হলে নিজে থেকে ডাক্তারি করে ওষুধ খেতে শুরু করলে বিপদ হবে। বরং জ্বর কী থেকে হচ্ছে, তা পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।

দ্রুত শ্বাস নেওয়া, শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় বুক ধড়ফড় করা, নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে অনেকের। তেমন হলে ফেলে রাখা ঠিক হবে না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গুরুতর ভাবে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হলে গলা ও ঘাড়ের চারদিকের গ্ল্যান্ড ফুলে যেতে পারে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হবে। রাইনোভাইরাস নাক দিয়ে ঢোকে। এর সংক্রমণ হলে গলা ব্যথা, ঢোঁক গিলতে না পারা, শুকনো কাশি ভোগাতে পারে।

কোন কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি?

কোন কোন ভাইরাসের কারণে জ্বর হচ্ছে, তা পরীক্ষা করে জানতে হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, ভাইরাসের সেই সব পরীক্ষা যথেষ্টই খরচসাপেক্ষ। তাই উপসর্গ দেখে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তিন দিনের বেশি যদি জ্বর থাকে, তাপমাত্রা ১০০ বা ১০১ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করে, তা হলে অবশ্যই কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।

১) টিসি-ডিসি হিমোগ্লোবিন টেস্ট করাতে হবে।

২) ম্যালারিয়া অ্যান্টিজেন ডিটেকশন টেস্ট করিয়ে নিলে ভাল।

৩) এনএস১ অ্যান্টিজেন টেস্ট করালে ডেঙ্গি ভাইরাস শরীরে বাসা বেঁধেছে কি না তা বোঝা যাবে। তা ছাড়া আইজিজি অ্যান্টিবডি পরীক্ষাও করিয়ে রাখা ভাল।

৪) সিবিসি বা ‘কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট’ টেস্ট অবশ্যই করাতে হবে।

ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ দেখা দিলে পিসিআর বা র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই পরীক্ষা করানো ভাল।

জ্বর হলে নিজে থেকে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি, সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল ও তরল খাবার খেতে হবে। ঠান্ডা লাগানো কোনও ভাবেই চলবে না। বাড়িতে শিশু বা বয়স্কদের জ্বর হলে তাঁদের আলাদা রাখাই ভাল। শিশুর পাঁচের নীচে বয়স হলে সাধারণত প্রতি বছরই ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা দেওয়া হয়। বর্ষায় জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভোগার ধাত থাকলে প্রতি বছর আগেভাগেই এই প্রতিষেধক নিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

Viral fever Adenovirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy