Advertisement
E-Paper

নৈশভোজে নয়া রীতি, তাতেই মন ভরে উঠবে আনন্দে, শরীর থেকে স্ট্রেস হরমোন উধাও হবে!

বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশগুলির মধ্যে প্রায় পাকাপাকি ভাবে দ্বিতীয় স্থানটি ধরে রেখেছে ডেনমার্ক। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলির দিকে তাকালে মনে হতে পারে, কী এমন আশীর্বাদে পুষ্ট তারা? বছরের কয়েকটি মাসে তো ভাল করে সূর্যও ওঠে না। তার পরেও কী ভাবে এত আনন্দে থাকেন দেশের মানুষেরা?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ ১৯:৩৯
How do people in Denmark have dinner which can lower stress and give better sleep

আপনার বাড়িতেও নৈশভোজে চালু হোক ড্যানিশ রীতি। ছবি: এআই।

সব দেশেরই রাতগুলি হোক ডেনমার্কের মতো। ড্যানিশ রীতি মেনে নৈশভোজ সারুন সবাই। তবেই পরিপুষ্ট হবে মন ও স্বাস্থ্য। এমন আশা পূরণ হওয়া খুব কঠিন নয় কিন্তু। কেবল জানতে হবে ড্যানিশ নৈশভোজের খুঁটিনাটি। তারও আগে জানতে হবে, সে দেশের জীবনযাপনের ছবিটি।

বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশগুলির মধ্যে প্রায় পাকাপাকি ভাবে দ্বিতীয় স্থানটি ধরে রেখেছে ডেনমার্ক। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলির দিকে তাকালে মনে হতে পারে, কী এমন আশীর্বাদে পুষ্ট তারা? বছরের কয়েকটি মাসে তো ভাল করে সূর্যও ওঠে না। তার পরেও কী ভাবে এত আনন্দে থাকেন দেশের মানুষেরা? ডেনমার্কের জীবনযাপনের দিকে নজর রাখা শুরু হয়েছে বেশ কিছু দশক ধরে। সেখান থেকেই এক নয়া জীবনধারার কথা জানা যায়, যার নাম ‘হিউগা’। শব্দটি ড্যানিশ। বিংশ শতকে ইংরেজি ভাষা এ শব্দটি ধার নেয় ড্যানিশ শব্দভান্ডার থেকে। হিউগা-ই সে সব দেশের সুখের রহস্য। এটি এক ধরনের জীবনযাপন, যেখানে ভাল থাকার চর্চা চলে। মানসিক বা শারীরিক চাপ কম, আনন্দের হরমোনগুলির (সেরোটোনিন, ডোপামাইন, অক্সিটোসিন, এন্ডরফিনস) নিঃসরণ বেশি, কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ কম, প্রশান্তির আমেজ ভরা যাপনই হল হিউগা। বিশেষ কোনও আয়োজনের প্রয়োজন নেই। ছোটখাটো আদানপ্রদানের মাধ্যমেই হিউগায় অভ্যস্ত হওয়া যায়।

How do people in Denmark have dinner which can lower stress and give better sleep

বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে ডেনমার্ক। ছবি: সংগৃহীত।

সে দেশে বিকেল ৫টার মধ্যে অফিসগুলি খালি হয়ে যায়। তার পরই পরিবারের সঙ্গে একজোট হয়ে সকলে মিলে রাতের খাবারের বন্দোবস্ত শুরু করেন। এলাহি নয়, সাদামাঠা খাবারই থাকবে পাতে, কিন্তু সকলে মিলে এক সময়ে টেবিলে বসবেন, খাওয়ার সময়ে কথাবার্তা বলবেন। এই কথাবার্তাগুলি অধিকাংশ সময়েই এমন হবে, যার আনন্দের রেশ থেকে যাবে ঘুমের সময়েও। মন ফুরফুরে হয়ে উঠবে। ঘুমের মান উন্নত হবে। কেউ কেউ বলেন, এই ধরনের জীবনযাপনে রাতের সূত্রপাত হবে দিনের শুরু থেকেই। আবার, ঘুমের সময়ে যে প্রশান্তির আমেজ থাকে, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেও সেই অনুভূতিই থাকবে মনে। সারা দিনটি এমন ভাবেই কেটে যাবে। রাতে শুতে যাওয়ার দু’ঘণ্টা আগের সময়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এর ফলে কেবল যে ঘুম ভাল হবে, তা-ই নয়, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও বড় অবদান রয়েছে এই জীবনযাত্রার। স্প্যানিশ সোসাইটি অফ নিউরোলজির একটি গবেষণা ‘কিপ ইয়োর ব্রেন ইয়ং’-এ দেখা গিয়েছে, সামনাসামনি বসে গভীর কথোপকথন মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারে। বলা হয়েছে, সামাজিক সম্পর্ক নাকি মস্তিষ্কের গঠনে বড় ভূমিকা পালন করে। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজ়োনা এবং ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনেও এমন কিছু গবেষণা হয়েছিল, যেখান থেকে জানা যায়, যাঁরা সবচেয়ে বেশি খুশি, তাঁরা দিনের মাত্র ২৫ শতাংশ সময় একা কাটান, আর ৫০ শতাংশেরও বেশি সময় গভীর কথোপকথনে মগ্ন থাকেন।

হিউগা নিয়ম মেনে আপনিও জীবন যাপন শুরু করতে পারেন। আপনার বাড়িতেও নৈশভোজে চালু হোক ড্যানিশ রীতি। কেবল কয়েকটি সহজ কৌশল জেনে নিতে হবে—

· টেবিলের গঠন- খাবার টেবিলটি গোল হলে সবচেয়ে ভাল। তাতে সবাই সবার মুখ দেখতে পারবেন, প্রত্যেকে একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। আয়তাকার টেবিলে পরিবারের প্রধান সব সময়ে সেরা জায়গাটি অধিকার করেন। সেটি আদপে স্বাস্থ্যকর রীতি নয়। সকলকেই সমান সম্মান দিতে গোল টেবিল বেছে নেওয়া উচিত।

· খোলামেলা আলোচনা- সকলকে কথোপকথনের মধ্যে ব্যস্ত রাখতে হলে খুব সাবধানে বিষয় বাছতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে বাড়ির বড়রা যদি নিজেদের ভুল নিয়ে কথা শুরু করেন, তা হলে কনিষ্ঠেরাও সাহস পেয়ে মন খুলে কথা বলতে পারেন। একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে কথা বলতে হবে।

· হালকা আলো- খাবার ঘরে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হলে হালকা আলো ব্যবহার করতে হবে।

· আনুষঙ্গিক জিনিস- বসা, কথা বলা, খাওয়াদাওয়া করা— এ সমস্ত কার্যকলাপ যেন আরামদায়ক হয়। আর তাই যদি মোলায়েম কুশন, নরম গালিচা, ইত্যাদি রাখা যায় কাছাকাছি, তা হলে গোটা আবহে প্রশান্তি আসে।

Dinner Rituals Denmark stress management
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy