মরসুম বদলে হাঁপানি বড় কষ্টকর হয়ে ওঠে। অ্যালার্জির সমস্যা শুরু হলে তা সহজে সারে না। সিওপিডি রোগীরা বিলক্ষণ বোঝেন শ্বাসকষ্টের যন্ত্রণা। ফুসফুসের যে কোনও রোগই এখন বাড়ছে। দূষণ ও জীবাণু বাড়বাড়ন্তে শ্বাসের সমস্যা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। আসলে ফুসফুসে বাতাস বহনকারী সরু সরু টিউবের মতো অজস্র নালী আছে। অ্যালার্জি ও অন্যান্য কারণে সূক্ষ শ্বাসনালিগুলির মাংসপেশি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ঠিকমতো বাতাস চলাচল করতে পারে না। শরীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। আর এর ফলে নিঃশ্বাসের কষ্ট-সহ নানা শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। এই সমস্যার সমাধান কেবল ওষুধ বা ইনহেলারে সম্ভব নয়। তার জন্য নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করাও জরুরি। ফুসফুস ভাল রাখতে নিয়মিত অভ্যাস করতে পারেন কূর্মাসন।
কী ভাবে করবেন?
সংস্কৃতে ‘কূর্ম’ শব্দটির অর্থ হল কচ্ছপ। এই আসন অভ্যাস করার সময়ে দেহের ভঙ্গি অনেকটা কচ্ছপের মতো দেখায়। তাই এমন নাম।
১) প্রথমে ম্যাটের উপর পিঠ, কোমর টান টান করে বসুন। পা দু’টি সামনের দিকে ছড়িয়ে রাখতে হবে।
২) দুই হাঁটু সামান্য ভাঁজ করে রাখুন। ঊরু এবং হাঁটুর অবস্থান হবে ত্রিভুজাকৃতি।
৩) দুই পায়ের পাতা মাটি থেকে তুলে রাখতে হবে। কিন্তু গোড়ালি যেন মাটি স্পর্শ করে থাকে।
৪) এ বার শরীর সামনে দিকে ঝুঁকিয়ে আনুন। দুই হাঁটুর মধ্যে যেন যথেষ্ট ব্যবধান থাকে।
৫) এ বার দু’টি হাত দু’টি হাঁটুর তলা দিয়ে গলিয়ে দু’দিকে ছড়িয়ে দিন। ধীরে ধীরে হাঁটু দু’টি মাটির কাছাকাছি নামিয়ে আনতে চেষ্টা করুন। পুরো শরীরটাকেই সেই অনুযায়ী টেনে আনতে হবে।
৬) শরীরের উপরিভাগ এতটাই নামিয়ে আনতে হবে, যেন থুতনি মাটি স্পর্শ করে থাকে।
৭) দু’দিকে প্রসারিত দু’টি হাতের উপর ছড়ানো থাকবে দু’টি পা।
৮) এই ভাবে অন্ততপক্ষে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকুন। আবার ফিরে যান প্রথম অবস্থায়।
কেন করবেন কূর্মাসন?
কূর্মাসন অভ্যাস করলে পেট, কোমর ও নিতম্বের মেদ কমবে।
কাঁধ ও দুই হাতে ব্যথা থাকলে এই আসন অভ্যাস করতে পারেন।
পিঠে ব্যথা কমাতেও এই আসন উপযোগী।
শ্বাসজনিত যে কোনও রোগে কূর্মাসন অভ্যাস করতে পারলে উপকার হবে।
এই আসন অভ্যাসে হজমের সমস্যাও কমবে।
কারা করবেন না?
ঘাড়, হ্যামস্ট্রিং, কাঁধে চোট, আঘাত লেগে থাকলে এই আসন করতে যাবেন না। লাম্বার স্পাইনে চোট থাকলেও তা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। সায়াটিকা, হার্নিয়া, স্লিপ ডিস্কের সমস্যায় এই আসন করা নিষিদ্ধ। অন্তঃসত্ত্বারাও পেট মুড়ে এই আসন করতে পারবেন না।