Advertisement
E-Paper

বিশেষ উপায়ে ওষুধ পৌঁছবে একেবারে ব্যথার জায়গাতেই, বাত বিষয়ে নতুন গবেষণা দেশের বিজ্ঞানীদের

রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের এক নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন পঞ্জাবের মোহালির ইনস্টিটিউট অফ ন্যানো সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চিকিৎসকেরা। এমন এক আধার তাঁরা তৈরি করেছেন, যা ওষুধটিকে বয়ে নিয়ে যাবে একেবারে ব্যথার জায়গায়। এখানেই নতুনত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪২
Indian Scientist develops new drug delivery system to treat Rheumatoid Arthritis

রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের এক নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন দেশের বিজ্ঞানীরা। ফাইল চিত্র।

শরীরের যেখানে ব্যথা-বেদনা, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা, ঠিক সেখানেই গিয়েই কাজ করবে ওষুধ। শরীরে ঢুকে সটান চলে যাবে ব্যথার জায়গায়। আশপাশের সুস্থ কোষগুলির দিকে ফিরেও চাইবে না। কী ভাবে ওষুধটিকে ঠিক নিশানা করে ব্যথার জায়গায় পাঠানো যাবে, সেই কাজটাই জটিল। আর এই বিষয়টি নিয়েই গবেষণা করে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের এক নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন পঞ্জাবের মোহালির ইনস্টিটিউট অফ ন্যানো সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চিকিৎসকেরা। এমন এক আধার তাঁরা তৈরি করেছেন, যা ওষুধটিকে বয়ে নিয়ে যাবে ব্যথার জায়গায়। এখানেই নতুনত্ব।

অস্থিসন্ধির প্রদাহকে ‘আর্থ্রাইটিস’ বলা হয়। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসে হাত ও পায়ের আঙুলের অস্থিসন্ধিতে ব্যথা দিয়ে রোগের সূত্রপাত হয়, পরে তা গোড়ালি, হাঁটুতে ছড়িয়ে পড়ে। এই অসুখ হল এক প্রকার অটোইমিউন ডিজ়অর্ডার, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে তছনছ করে দেয়। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস অস্থিসন্ধির আবরণ বা লাইনিংকে নষ্ট করে। ফলে, অস্থিসন্ধির হাড় ক্ষয়ে গিয়ে নড়াচড়া করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস যতটা যন্ত্রণাদায়ক অসুখ, তার ওষুধগুলিও ততটাই মারাত্মক। এমন কিছু ওষুধ রয়েছে, যেগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাংঘাতিক। সেই সব ওষুধ খেয়ে অসুখ সারাতে গিয়ে আরও নানা অসুখ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে।

মোহালির গবেষক রাহুল কুমার বর্মা জানিয়েছেন, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ওষুধ শরীরের সুস্থ কোষগুলিরও ক্ষতি করে। ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সে কারণেই ওষুধকে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিয়ে পলিমার দিয়ে তৈরি একরকম ‘মাইক্রোস্ফিয়র’ বানিয়েছেন তাঁরা। সেটি হল পলিমার-লিপিড (ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লাইসেরল দ্বারা প্রস্তুত) দিয়ে তৈরি একটি আস্তরণ, যার মধ্যে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চেনা ওষুধ ম্যাথোট্রেক্সেটকে ভরে শরীরে ঢোকানো হবে। ওই আধারটির কাজ হবে শরীরের ঠিক কোন কোন জায়গায় ব্যথা বা প্রদাহ হচ্ছে তা চিহ্নিত করে ওষুধটিকে সেখানে বয়ে নিয়ে যাওয়া। অনেকটা ডাকপিয়নের মতোই কাজ করবে সে। ঠিকানা মিলিয়ে ওষুধ পৌঁছে দেবে সঠিক জায়গায়। তার পর সেখানে গিয়ে আস্তরণটি ভেদ করে ওষুধটি মিশে যাবে রক্তে আর শুরু করবে তার কাজ। ফলে আশপাশের সুস্থ কোষগুলিতে তার প্রভাব পড়বে না।

এই বিষয়ে অস্থিরোগ চিকিৎসক সুব্রত গড়াইয়ের মত, “রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের দু’রকম চিকিৎসা আছে— খাওয়ার ওষুধ ও ইঞ্জেকশন। ম্যাথোটেক্সেট খুবই কার্যকরী ওষুধ। সাধারণত ওষুধ খেলে বা ইঞ্জেকশন নিলে, তা দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে রোগের জায়গায় গিয়ে পৌঁছয়। এর মাঝেই তার কার্যক্ষমতা অর্ধেক নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু নতুন গবেষণায় যদি কোনও আধারে ভরে ওষুধটিকে প্রদাহের জায়গায় পাঠানো যায়, তা হলে কাজ হবে বেশি। খুব দ্রুত প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।” তবে চিকিৎসক আরও জানালেন, চার পর্যায়ের ট্রায়ালের পরে যদি এই গবেষণা আশানুরূপ জায়গায় গিয়ে পৌঁছয়, তা হলেই তার বাস্তব প্রয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা যাবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলেই মনে করছেন তিনি।

arthritis Arthritis Problem Rheumatoid Arthritis Joint pain Osteoarthritis Inflammation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy