Advertisement
২৩ অক্টোবর ২০২৪
Swimmer's ear

সুইমার’স ইয়ার কী?

জল থেকে অনেকেরই কানের সংক্রমণ হয়। সতর্ক হবেন কী ভাবে, রইল তার খুঁটিনাটি

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কোয়েনা দাশগুপ্ত
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৪ ০৭:২৫
Share: Save:

সাঁতারে ভর্তি হওয়ার মাসখানেক পর থেকেই কানে ব্যথা বাড়ছে দশ বছরের অভ্রর। ইএনটি চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত বলছেন, “সুইমার’স ইয়ার নামে পরিচিত এ সমস্যা অনেকেরই হয়। চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় একে ওটিটিস এক্সটারনাও বলা হয়, অর্থাৎ কান ও বহিঃকর্ণনালিকার সংক্রমণ। আদতে এক ধরনের ব্যাক্টিরিয়াল বা ফাঙ্গাল সংক্রমণ।” কানে জল ঢুকে মূলত এ সমস্যা হয় বলে ‘সুইমার’স ইয়ার’ বলা হয়। সাধারণত বাচ্চারাই এতে বেশি আক্রান্ত হয়। তবে টিনএজার কিংবা বড়দেরও এ সমস্যা হতে পারে।

কারণ

  • জল: ডা. দাশগুপ্ত বলছেন, ভিজে জায়গায় ব্যাক্টিরিয়া তাড়াতাড়ি বংশবিস্তার করে। জলে বেশিক্ষণ কাটালে কিংবা কানে জল ঢুকলে কানের ভিতরের আর্দ্রতা ব্যাক্টিরিয়া বৃদ্ধির উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। সাঁতারুদের ক্ষেত্রে দিনের অনেকটা সময়ে জলে কাটানোয় এ সমস্যা বেশি হয়। তা ছাড়া, পুলের জলে ক্লোরিন-সহ নানা রাসায়নিক থাকায় সংক্রমণ ছড়ায়। পাশাপাশি একাধিক ব্যক্তি একই জলে থাকায় একের থেকে অন্যের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। অপরিষ্কার জলে সাঁতার কাটলেও এ সমস্যা হতে পারে।
  • কান খোঁচানো: কেবল জল থেকে নয়, কানে যে ওয়াক্স জমে, তার একটা নির্দিষ্ট পিএইচ থাকে, যা ব্যাক্টিরিয়া এবং ফাঙ্গাল সংক্রমণ থেকে কানকে রক্ষা করে। ডা. দাশগুপ্ত বলছেন, “অনেকেই কটন বাড, চুলের ক্লিপ, সেফটিপিন, কাঠি ইত্যাদি দিয়ে কান পরিষ্কার করেন। এতে তাঁদের কানে পিএইচ-এর ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ফলে সহজেই কানে সংক্রমণ হতে পারে।” ক্রমাগত খোঁচাখুঁচিতে কানের ভিতরের ত্বকেরও ক্ষতি হয়। সেখান থেকেই জীবাণু বাসা বেঁধে গোটা কানে ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে ইয়ার ফোন কিংবা কানের দুলের মতো বস্তু থেকেও জীবাণু কানে ঢুকতে পারে।

উপসর্গ

সাধারণত সুইমার’স ইয়ার একসঙ্গে দু’কানেই হয়। প্রাথমিক ভাবে এ ক্ষেত্রে কানে অল্প ব্যথা, চুলকানি হতে পারে। কখনও কান লাল হয়ে ফুলে যায়। কান থেকে তরলও নির্গত হতে পারে। কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে শ্রবণে সমস্যা, জ্বরও হতে পারে।

চিকিৎসা

ঘরোয়া টোটকা, কানে গরম সেঁক ইত্যাদি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাধারণত এ ক্ষেত্রে সাকশন পদ্ধতিতে কান পরিষ্কার করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা অ্যান্টিফাঙ্গাল ড্রপ দেওয়া হয়। ব্যথা কমাতে প‌্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হলে মুখে বা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হতে পারে।

ডা. দাশগুপ্ত বলছেন, “সংক্রমণের প্রকৃতির উপরে নির্ভর করে চিকিৎসা। প্রাথমিক অবস্থায় এ সমস্যাকে গুরুত্ব না দিলে, এই জীবাণুর সংক্রমণে অনেক সময়ে কানের পর্দাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে বিশেষ জটিলতা না থাকলে ১০-১৫ দিনের মধ্যেই সেরে যায়।” মনে রাখবেন, সুইমার’স ইয়ার বারবার হতে পারে। তাই এক বার এ সমস্যা হলে সতর্ক থাকুন।

অন্য বিষয়গুলি:

Disease
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE