হাঁটার ছন্দে

সকালে বা বিকেলে নিয়ম করে পার্কে হাঁটা কিংবা ট্রেডমিলে থাউজ়েন্ড স্টেপস অনেকেই করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে হাঁটার গতিবেগ একই রকম থাকে। এই হাঁটা কতটা কার্যকর, তা নির্ভর করে গতি ও ছন্দের উপরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানিজ় ডিস্ক ওয়াকিং পদ্ধতিতে সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়। ইন্টারভ্যাল ওয়াকিংয়েরই আলাদা প্রকার জাপানিজ় ডিস্ক ওয়াকিং। এখানে হাঁটার বেগ বদল করতে হয়।

হাঁটার সময়টা কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নিন—

• প্রথমে তিন-পাঁচ মিনিট নিজের স্বাভাবিক গতিতে হাঁটুন।
• এর পরের তিন-পাঁচ মিনিট বেশ জোরে হাঁটতে থাকুন। কতক্ষণ ব্রিস্ক ওয়াকিং করবেন তা নিজের ক্ষমতা বুঝে ঠিক করুন।
• পরবর্তী ধাপে ফের ধীরে হাঁটুন পাঁচ মিনিট।
• ধীরে ও দ্রুত হাঁটার এই প্রক্রিয়াটা ৩-৫ বার করুন। কোন ধাপে কতটা সময় দেবেন সেটা নিজের শরীর ও ক্ষমতা বুঝে ঠিক করুন। মোট সময় ৩০-৪৫ মিনিট রাখা প্রয়োজন। প্রথমে কম সময় রেখে পরে ধীরে ধীরে বাড়াতে পারেন।
• একদম শেষ ধাপে গিয়ে পায়ের কিছু স্ট্রেচিং করুন। হ্যামস্ট্রিং, কাফ মাসলের স্ট্রেচিং পায়ের পেশিকে আরও ফ্লেক্সিবল করবে।

কেন জাপানিজ় ডিস্ক ওয়াকিং পদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে, তার কয়েকটি কারণ আছে—

• কার্ডিয়োভাস্কুলার এক্সারসাইজ় হিসেবে এই হাঁটার পদ্ধতি খুব ভাল। হাঁটার বেগের বদলের জন্য হার্টের পাম্পিং ভাল হয়।
• এক ভাবে হাঁটার চেয়ে বারবার গতি বদলের এই পদ্ধতিতে মেদ কমে দ্রুত।
• পায়ের পেশির ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও এই পদ্ধতি উপকারী।
• ক্রমাগত জোরে হাঁটলে, জগিং করলে বা দৌড়লে অনেক সময়ে হাঁটুর উপরে চাপ পড়ে। এই প্রক্রিয়ায় সেটা হবে না।

হাঁটার পরে কিছু স্ট্রেচ করে নিতে হবে, তাতে পায়ের পেশির শক্তি বাড়বে। একটু উঁচু জায়গায় মেঝের সমান্তরালে পা তুলে দিন। হাঁটু ভাঁজ না করে যতটা সম্ভব নিচু হওয়ার চেষ্টা করুন। দু’পায়ে দশ বার করে এটি করুন। পার্কের বেঞ্চে বা বাড়ির সিঁড়ির ধাপেই এটি করা যায়। যত উঁচুতে পা তুলে এটি করতে পারবেন, স্ট্রেচিং তত ভাল হবে। কাফ মাসলের জন্য একটু উঁচু জায়গায় পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে উঠুন আর নামুন, এটা ১৫বার অন্তত করুন।

দুটো বিষয় খেয়াল রাখবেন, হাঁটার জুতো যেন ভাল হয়। স্নিকার্স পরাই বাঞ্ছনীয়। এ ছাড়া হাঁটতে বেরনোর আগে ভাল করে জল খেয়ে নিন। নয়তো পেশিতে টান পড়তে পারে।

জাপানিজ় ডিস্ক ওয়াকিং সব বয়সের জন্যই কার্যকর। এই পদ্ধতিতে পার্ক বা রাস্তায় হাঁটা যায়। ট্রেডমিলেও করা যায়। ট্রেডমিলে হাঁটলে মাঝের কিছুটা সময়ে ইনক্লাইন ওয়াক করতে পারেন। তবে কারও যদি হাঁটুতে ব্যথা, পায়ে কোনও সার্জারি হয়ে থাকে, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই শারীরচর্চার পদ্ধতি ঠিক করতে হবে।