Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Rizwana

জন্ম থেকে বধির, ডাক্তারির ছাত্রী রিজ়ওয়ানা এখন ‘হু’-এর ‘পোস্টার গার্ল’! কী ভাবে ফিরল শ্রবণশক্তি?

প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন রিজ়ওয়ানা। আর সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষেই যাত্রা শুরু করেছেন। সে কারণেই তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছে ‘হু’।

Rizwana

সঠিক সময়ে ধরা পড়েছিল বলেই এখন রিজ়ওয়ানা ব্যক্তিগত জীবনে সব রকম প্রতিবন্ধকতা কাটাতে সফল হয়েছেন। ছবি: হু

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ১৯:০৬
Share: Save:

বিশ্ব শ্রবণ দিবস উপলক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পোস্টারে দেখা গেল রিজ়ওয়ানাকে। এমবিবিএসের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী রিজ়ওয়ানা। ভাবছেন তো, কেন রিজ়ওয়ানাকে এত গুরত্ব দিল ‘হু’? জন্ম থেকেই মুক ও বধির রিজ়ওয়ানা। আর সেই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠেই তিনি চিকিৎসক হওয়র স্বপ্ন দেখেছেন আর সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যেই যাত্রা শুরু করেছেন রিজ়ওয়ানা।

রিজ়ওয়ানার জন্মের পর তাঁর বাবা-মা মেয়ের মধ্যে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ করেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। আর তখনই জানা যায়, রিজ়ওয়ানার শ্রবণশক্তি নেই। ছ’বছর বয়সে তাঁর কানে ককলিয়া ইমপ্ল্যান্ট করা হয়। আর তার পরেই শ্রবণশক্তি ফিরে পায় ছোট্ট রিজ়ওয়ানা। সঠিক সময়ে ধরা পড়েছিল বলেই এখন রিজ়ওয়ানা ব্যক্তিগত জীবনে সব রকম প্রতিবন্ধকতা কাটাতে সফল হয়েছেন।

এই সমস্ত ক্ষেত্রে বাবা-মায়েদের অনেক বেশি তৎপর হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। যত তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হবে, ততই দ্রুত সে স্বাভাবিক জীবনধারায় ফিরে আসতে পারবে। কী ভাবে বুঝবেন শিশু কানে শুনতে পারে না? চিকিৎসক চিরজিত দত্ত বলেন, ‘‘যে সব শিশু জন্ম থেকে কানে শুনতে পায় না, তাদের মুখে বুলিও ফোটে না। হঠাৎ কোনও জোরে শব্দ হলেও যদি শিশু চমকে না ওঠে, তা হলে বুঝতে হবে খুদের কানে কোনও সমস্যা আছে। কোনও শিশু যদি অনেক বয়স পর্যন্ত কথা বলতে না শেখে, সে ক্ষেত্রেও অভিভাবকদের সতর্ক হতে হবে এবং চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এখন অনেক সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে সদ্যোজাত শ্রবণশক্তির পরীক্ষা করা হয়। তাই বাবা-মাকে সচেতনভাবে শিশুর জন্মের পর এই পরীক্ষাটি করিয়ে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে খুদের কানে কোনও রকম সমস্যা থাকলে তা আগেভাগেই ধরা পড়বে।’’

একটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর কিন্তু ককলিয়া ইমপ্ল্যান্ট করেও বধির শিশুদের শ্রবণশক্তি ফেরনো যায় না।

একটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর কিন্তু ককলিয়া ইমপ্ল্যান্ট করেও বধির শিশুদের শ্রবণশক্তি ফেরনো যায় না। ছবি: শাটারস্টক।

ককলিয়া ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে কি সম্পূর্ণরূপে শ্রবণশক্তি ফিরে পাওয়া যায়?

ককলিয়া ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি করে খুদের শ্রবণশক্তি পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। চিরজিত বলেন, ‘‘ককলিয়া ইমপ্ল্যান্ট করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে দামি হল সময়। একটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর কিন্তু ককলিয়া ইমপ্ল্যান্ট করেও বধির শিশুদের শ্রবণশক্তি ফেরনো যায় না। তাই বাবা-মায়েদের খুব বেশি সচেতন থাকতে হবে। এই অস্ত্রোপচার করতে খুব বেশি হলে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগে। তবে শ্রবণশক্তি ফিরে পেলেও সেই শিশুকে শব্দ ভাণ্ডারের সঙ্গে পরিচয় করিয় তাকে কথা বলানো প্রক্রিয়া কিন্তু সময়সাপেক্ষ। সে ক্ষেত্রেও বাবা-মাকে অনেক বেশি ধৈর্যশীল হতে হবে।’’

ককলিয়া ইমপ্ল্যান্টের খরচ কেমন?

এই সার্জারি করাতে ৬ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ পর্যন্ত খরচ হতে পারে। চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ককলিয়া ইমপ্ল্যান্টের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের অনেক স্কিম রয়েছে। সেই সব স্কিমের আওতায় খরচ অনেকটাই কমে যায়। অনেক সেচ্ছাসেবী সংস্থাও এই সব ক্ষেত্রে শিশুকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

WHO Cochlear implants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE