শিশুর ত্বকের যত্ন কী ভাবে নেবেন, রইল টিপ্স। ছবি: সংগৃহীত।
শিশুদের ত্বক খুব পাতলা ও সংবেদনশীল হয়। তাই তাদের কোমল ত্বকের জন্য বিশেষ যত্নেরই প্রয়োজন। বহু বাবা-মা ভাবেন, শুধু শীতকালেই বুঝি ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার করতে হয়। গরমের সময়ে নয়। এই ধারণা ভুল। শীতে যেমন শিশুদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, খুব গরম পড়লেও ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। শুষ্কতার কারণে ত্বকের লালচে ভাব, চুলকানি দেখা দিতে পারে। তাই বাবা-মায়েদের এই বিষয়টাও মাথায় রাখতে হবে।
শিশুর ত্বকের যত্ন কী ভাবে নেবেন, কী কী রুটিন মেনে চলা উচিত, তা জেনে রাখা ভাল।
কী ভাবে স্নান করাবেন
দেড় মাস পর্যন্ত এক দিন অন্তর স্নান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু যে সব শিশুর বয়স দেড় মাসের বেশি, তাদের অবশ্যই রোজ স্নান করান। তবে শিশু নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাল কোনও অসুখ নিয়ে জন্মালে বা সময়ের আগেই জন্ম নিলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অনেক বাবা-মায়ের ধারণা থাকে, শীতকালে শিশুকে স্নান করালে শরীর খারাপ হবে। চিকিৎসকেদের পরামর্শ, শীতের শুরু থেকেই ব্যবস্থা রাখুন উষ্ণ জলের। গরম জল ছাড়া স্নান একেবারেই নয়। স্নান করানোর জন্য নির্দিষ্ট সময় রাখুন। গায়ে জ্বর থাকলে বা আগে থেকেই ঠান্ডা লেগে থাকলে মাথা না ভেজালেও গরম জলে গা ভাল করে মুছিয়ে দিন।
স্নানের পরেই ভাল করে তোয়ালে দিয়ে মাথা, কান মুছে দিন। স্নানের পর গরম ভাব অনুভব হবে, এমন তোয়ালে দিয়ে গা ঢেকে দিন। ভরসা রাখতে পারেন গ্লিসারিন সাবানে। ক্ষতিকর রাসায়নিক যেমন, প্যারাবেন, সালফেট এবং ফ্যালেট মুক্ত শ্যাম্পু বা বডি ওয়াশ নিতে পারেন। তবে আপনার শিশুর জন্য কোন ধরনের সাবান বা শ্যাম্পু কিনবেন, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন।
ময়েশ্চারাইজ়ার জরুরি
স্নান শেষে শিশুর ত্বকে ময়শ্চারাইজ়ার মালিশ করা খুব জরুরি। গরম হোক, শীত হোক, সব ঋতুতেই শিশু ত্বক কোমল রাখতে ময়েশ্চারাইজ়ার মাখাতেই হবে। খুব বেশি সুগন্ধিযুক্ত ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার না কারই উচিত। ময়েশ্চারাইজ়ার কেনার আগে নিশ্চিত ভাবে দেখে নিন তাতে প্যারাবেন, থ্যালেট এবং রঞ্জকের মতো ক্ষতিকারক উপাদান আছে কি না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত।
তেল মালিশ
সদ্যোজাতের শারীরিক গঠন ও সামগ্রিক বিকাশের জন্য নিয়মিত তেল মালিশ করা প্রয়োজন। নিয়মিত মালিশ করার ফলে দেহের রক্ত সঞ্চালন সচল থাকে। ভিতর থেকে রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বৃদ্ধি পায়। সর্ষের তেল এবং নারকেল মিশিয়ে মালিশ করলে শিশুদের ত্বক উজ্জ্বল হয়। ছোটবেলা থেকেই ত্বকের রোগ প্রতিরোধ শক্তি জোরদার হয়ে ওঠে এই মালিশের ফলে। তেল মালিশের ফলে শিশুদের ত্বকের ভিটামিন ডি গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়ে। তাতে বৃদ্ধির হার বাড়ে। তবে অনেক শিশুরই ত্বক বেশি সংবেদনশীল। তাই কী ধরনের তেল মাখাবেন, সেটা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেবেন।
চুলের যত্ন
খুশকি এখন একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা দূর করতে শিশুর চুল নিয়মিত ধোয়া ও আঁচড়ানো প্রয়োজন। শিশুর মাথার কোমল এবং সংবেদনশীল ত্বকের উপযোগী ও ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন।
নখের যত্ন
শিশুরা বেশির ভাগ সময়েই মুখে আঙুল ঢুকিয়ে রাখে। তাই শিশুদের নখ ছোট করে কেটে রাখবেন। নখের ভিতর ময়লা জমলেই পরিষ্কার করতে হবে। মুখে ও হাতে ময়েশ্চারাইজ়ার লাগানোর সময়ে হাত ও পায়ের আঙুলগুলিতেও ভাল করে ময়শ্চারাইজ়ার লাগাবেন।
বেশি ক্ষণ ডায়াপার পরাবেন না
ডায়াপার থেকে অনেক শিশুরই অ্যালার্জি হয়। তাই ডায়াপার টানা তিন ঘণ্টার বেশি পরাবেন না। ডায়াপার ভিজে যাচ্ছে কিনা, মল বা মূত্র জমা হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন। ভিজে গেলেই ডায়াপার বদলে দিন। ডায়াপারের ভুল ব্যবহারের জেরে শিশুর ত্বকে র্যাশ, অ্যালার্জি ও প্রদাহ তৈরি হয়। ডায়াপার কেনার আগে অবশ্যই ভাল করে দেখে নিন এর কাপড়। কেবল সুতি নয়, নরম সুতির কাপড় ছাড়া ডায়াপার কিনবেন না।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। শিশুর ত্বক, চুলের যত্নে কী কী ব্যবহার করবেন তা অতি অবশ্যই শিশু চিকিৎসকের থেকে জেনে নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy