চিন্তাভাবনার জাল কেটে যাচ্ছে মাঝেমধ্যেই। মাথা ব্যথায় নাজেহাল। ওষুধেও কাজ হচ্ছে না কিছুই। শরীর ভাল নেই হলিউড মডেল-অভিনেত্রী কিম কার্দাশিয়ানের। তলে তলে বাসা বাঁধছে কোন রোগ?
‘ব্রেন অ্যানিউরিজ়ম’ অসুখে ভুগছেন কিম। অনুরাগীদের জানিয়েছেন তেমনটাই। খুব সম্প্রতিই ধরা পড়েছে এই রোগ। ‘অ্যানিউরিজ়ম’ শব্দটি অনেকের কাছে অপরিচিত। এটি এমন একটি সমস্যা, যা অজান্তে শরীরের মধ্যে জন্ম নেয়, কখনও সারা জীবন সুপ্ত থাকে, আবার কখনও রোগের উপসর্গ এতটাই প্রকট হয়ে ওঠে যে, রোগীকে বাঁচানোই প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:
কী এই ‘ব্রেন অ্যানিউরিজ়ম’?
হার্ট থেকে একাধিক ধমনীর মাধ্যমে রক্ত মাথা থেকে পা পর্যন্ত প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন কারণে ধমনীর এক বা একাধিক জায়গায় যদি রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে, তা হলে সেই জায়গা ফুলে ওঠে বেলুনের মতো আকার নেয়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘অ্যানিউরিজ়ম’। এই অবস্থা মস্তিষ্কে, হার্টে, পেটে বা কিডনিতে হতে পারে। শরীরের সে জায়গাতেই অ্যানিউরিজ়ম বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যেখানে ধমনীর মধ্যে রক্তের গতি খুব বেশি। সাধারণত, দু'টি ধমনী যেখানে ‘ওয়াই’ অক্ষরের মতো মিলছে, সেই জায়গাটা ফুলে ওঠে অনেক সময়ে। মস্তিষ্কে এমন অবস্থা তৈরি হলে, তখন শিরা-ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্ত চলাচল বাধা পায়। ফলে স্নায়ুর উপর চাপ বাড়ে। মাথা ব্যথা তো হয়ই, শরীরের ভারসাম্যও নষ্ট হতে থাকে। চিন্তাভাবনা অস্বচ্ছ হয়ে যায়, এমনকি স্মৃতিনাশও হতে পারে।
অ্যানিউরিজ়ম শুনতে যেমন লাগছে, চার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভয়াবহ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে ‘থ্রম্বোসিস’ হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে, আবার ধমনী ফেটে গিয়ে ‘হেমারেজ’ হতে পারে, অর্থাৎ, মস্তিষ্কের ভিতরে রক্তক্ষরণ শুরু হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। অ্যানিউরিজ়মে রক্তক্ষরণ শুরু হলে মাথা ব্যথার উপসর্গ দেখা দেবে। অনেক সময়ে বমি বা খিঁচুনিও হয়। একে মাইগ্রেনের ব্যথা ভেবে এড়িয়ে যান অনেকে। ফলে তলে তলে রোগ বাড়তে থাকে। তাই ঘন ঘন মাথা ব্যথা বা বুকে ব্যথা ফেলে না রেখে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। ধূমপান করা যাবে না। যাঁদের পরিবারে অ্যানিউরিজ়মের ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বেশি। অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, ডায়াবিটিস ও উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল থাকলেও এই অসুখ হতে পারে।