লেবু চা তো প্রায়ই খেয়ে থাকেন কিন্তু লেবু পাতা দিয়ে তৈরি চা খেয়েছেন কি? বিজ্ঞান বলছে সে চায়ের অনেক উপকার। শুধু তাই নয়, ভারতের আয়ুর্বেদের মতো চিনে যে প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি চালু রয়েছে, সেখানেও লেবু পাতার চায়ের উপকারিতার কথা আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে লেবু পাতার নাম অবশ্য লি মেং। গবেষণা বলছে, এই লি মেং বা লেবুর পাতায় রয়েছে অনেক রকম বায়ো অ্যাক্টিভ কমপাউন্ড যা স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
নাইজেরিয়ার ওন্ডো ইউনিভার্সিটি অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা করেছিল ইঁদুরের উপর। সেই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, লেবু পাতায় থাকা অ্যালকালয়েড মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, বিশেষ করে হিপোক্যাম্পাস নামের একটি অংশকে প্রভাবিত করে স্মৃতি এবং মেধা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।
হিপোক্যাম্পাস হল মস্তিষ্কের নতুন স্মৃতি গঠন এবং নতুন বিষয় শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়ার মতো রোগে মস্তিষ্কের এই অংশটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রথম। গবেষণা বলছে, ‘‘লেবু পাতার অ্যালকালয়েড-সমৃদ্ধ নির্যাস মস্তিষ্কের একটি বিশেষ এনজাইমকে কিছুটা নিস্ক্রিয় করে দেয়। যা ওই স্মৃতিনাশের কারণ হতে পারে।’’
এ ছাড়াও নানা ভাবে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে লেবু পাতায় থাকা নানা উপাদান। এতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। রোজমারিনিক অ্যাসিডের মতো বায়োঅ্যাকটিভ কমপাউন্ড এবং ভিটামিন সি। যা শরীরের অন্য উপকারেও লাগে।
১। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এরা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। যা স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার একটি বড় কারণ।
২। রোজমারিনিক অ্যাসিড মস্তিষ্কের প্রদাহ কমাতে এবং নিউরোনাল কোষকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটিও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে।
৩। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ত্বক ভালো রাখতে এবং শরীরের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
সতর্কতা
ভাল থাকার জন্য অবশ্যই এই ধরনের টোটকা ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে রোগের প্রতিকারের জন্য পুরোপুরি এর উপর ভরসা না করাই শ্রেয়। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।