পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলগুলির মধ্যে শীর্ষস্থানে পেঁপে। ভিটামিন এ, সি, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর পেঁপেতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার। প্যাপাইন নামক উৎসেচক থাকায় পেঁপে খাবার হজম করতেও সাহায্য করে।
গুণের শেষ নেই বটে, তা সত্ত্বেও পেঁপে কারও কারও জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ, ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন-সহ একাধিক সংস্থার সমীক্ষা বলছে, কাঁচা পেঁপে বেশি খেলে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিডনিতে পাথর: কিডনিতে যাঁদের এক বার পাথর হয়েছে, তাঁরা শরীরের প্রতি যত্নশীল না হলে এবং নিয়ম না মানলে ফের পাথর হওয়ার ঝুঁকি থাকেই। পাকা পেঁপেতে সমস্যা না থাকলেও অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা বা আধকাঁচা পেঁপে খেলে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। পেঁপেতে থাকা ভিটামিন সি, অক্সালেটে রূপান্তরিত হয়। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, অতিরিক্ত অক্সালেট ক্যালশিয়ামের সঙ্গে জোট বেঁধে ক্যালশিয়াম অক্সালেট তৈরি করে, যেটি কিডনির পাথরের কারণ। সেই কারণেই কি়ডনিতে পাথর হলে, তাঁদের ভিটামিন সি বুঝে খাওয়া দরকার। চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদেরা বলেন, উপকারী হলেও কোনও খাবারই বেশি খাওয়া ঠিক নয়। পরিমিত খেলেই সবচেয়ে ভাল।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় : অন্তঃসত্ত্বাদের পেঁপে খাওয়া নিরাপদ নয়। কাঁচা পেঁপেতে ল্যাটেক্সযুক্ত পদার্থ থাকে। আর থাকে প্যাপাইন, যা যুগ্ম ভাবে গর্ভাশয় সঙ্কোচনের কারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কাঁচা বা পাকা পেঁপে খেলে আচমকা প্রসববেদনা উঠতে পারে।
অ্যালার্জির সমস্যা: ‘সায়েন্স ডিরেক্ট’ নামে জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, পেঁপেতে রয়েছে চিটিনেজ় নামক উৎসেচক। তা ছাড়া ল্যাটেক্স থেকে কারও কারও অ্যালার্জি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে হাঁচি শুরু হবে। কারও কারও ক্ষেত্রে এ থেকেই শ্বাসযন্ত্রে প্রদাহ হতে পারে। কারও যদি ল্যাটেক্সে অ্যালার্জি থাকে, তবে তাঁর কাঁচা পেঁপে এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
হার্টের পক্ষেও ক্ষতিকর হতে পারে: কাঁচা পেঁপেতে সায়ানোজেনিক যৌগ মেলে, যা খুব স্বল্প পরিমাণে হলেও শরীরে হাইড্রোজেন সায়ানাইডের নির্গমন ঘটায়। এই রাসায়নিকই অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দের কারণ হতে পারে। হার্টের রোগীদের নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাত্রা জেনে নেওয়া দরকার।
থাইরয়েডের সমস্যা: হাইপোথাইরয়েডের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের কাঁচা পেঁপে খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া দরকার। পেঁপেতে থাকা কোনও কোনও উপাদান থাইরয়েডের ক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে। ফলে অবসাদ, ওজনবৃদ্ধির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।