তাদের খাড়া দুটো শিং…. কিন্তু তারা ‘হাট্টিমাটিম টিম’ নয়, তারা খরগোশ। মাথার চারপাশ থেকে খাড়া শিং, মুখ-নাকের চারধারে শুঁড়— এমন খরগোশ কস্মিনকালেও কেউ দেখেনি। স্থানীয়েরা নাম দিয়েছেন ‘জ়োম্বি র্যাবিট‘। আদতেই কি তারা জ়োম্বি?
‘আমেরিকান ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশন’ গত এক মাস ধরে এমন শিংওয়ালা খরগোশদের দিকে নজর রেখেছে। কটনটেল প্রজাতির এই খরগোশ আদতে নিরীহই। বিশেষ এক রকম অসুখের কারণে তাদের এই শিং ও শুঁড় গজিয়েছে বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকেরা। রোগটি ভাইরাস ঘটিত এবং তা অত্যন্ত ছোঁয়াচে। এ ক্ষেত্রে কটনটেল প্যাপিলোমা ভাইরাস (সিআরপিভি) বা শোপ প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। বন্য খরগোশের মধ্যে ছড়িয়েছে রোগ এবং তা ক্রমশ খরগোশের বাকি প্রজাতির মধ্যে ছড়াচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তবে খরগোশের থেকে মানুষের শরীরে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
কী এই শোপ প্যাপিলোমা ভাইরাস?
এট এক প্রকার ডিএনএ ভাইরাস। এর সংক্রমণে মাথা ও মুখের চারপাশে টিউমারের মতো মাংসপিণ্ড গজাচ্ছে। খরগোশের মাথার চারপাশে যেগুলিকে শিং বলে মনে হচ্ছে, আসলে সেগুলি টিউমার। কোষের অনিয়মিত বিভাজন ও বৃদ্ধি এত দ্রুত হচ্ছে যে, তা ত্বক ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে আসছে। এই টিউমার যন্ত্রণাহীন। তবে তা ক্রমেই ছড়াতে শুরু করছে শরীরের আরও নানা অংশে। মাছি বা টিক থেকে এই রোগ ছড়াচ্ছে বন্যপ্রাণীদের মধ্যে।
মাথার চারদিকে গজাচ্ছে শিং। ছবি: সংগৃহীত।
আরও পড়ুন:
শোপ প্যাপিলোমা ভাইরাস সাধারণত পশুপাখির শরীরেই ছড়ায় বলে দাবি করেছেন কলোরাডোর চিকিৎসকেরা। তবে পোষা খরগোশের এই রোগ হলে, তার থেকে মানুষের শরীরে ঢুকতে পারে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায়নি। এমন শিং ও শুঁড়ওয়ালা খরগোশ দেখলে তাদের কাছে যেতে বা ছুঁতে বারণ করা হয়েছে। বাড়ির পোষ্যদের এই সময়ে আরও বেশি সাবধানে রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
শোপ প্যাপিলোমা ভাইরাস থেকে কিছু ক্ষেত্রে ত্বকের ক্যানসার হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যে খরগোশগুলিকে পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের বেশির ভাগের টিউমারই বিনাইন (ক্যানসার সৃষ্টিকারী নয়)। তবে দীর্ঘ সময় ধরে এমন টিউমারের বৃদ্ধি হতে থাকলে তা থেকে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’র মতো ত্বকের ক্যানসারও হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কলোরাডো পার্ক অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফের তরফে জানানো হয়েছে, শিংওয়ালা খরগোশ বিপজ্জনক নয়। তবে তাদের চিকিৎসা দ্রুত না হলে ভাইরাস আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাবে।