উন্নত মানের শিশুবিভাগ চালু করেছেন মাতৃ ভবন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতীকী ছবি।
কারও ওজন ৮০০ গ্রাম। কারও ১ কেজি। কেউ আবার শুধুই রক্তের দলা। সময়ের আগে জন্মেছে এমন শিশুদের সুস্থ করে তুলতে রামকৃষ্ণ সারদা মিশন দক্ষিণেশ্বর পরিচালিত মাতৃ ভবন হাসপাতালে চালু হল উচ্চমানের শিশু বিভাগ। সেই সঙ্গে অসুস্থ বাচ্চাদের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে সুস্থ করে তুলতে তৈরি হয়েছে ‘পেডিয়াট্রিক হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট’। যেখানে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ‘ভেন্টিলেটর মেশিন’, ‘গ্রিন ফ্লোর’, ‘ব্লু ল্যাম্প’, ‘ইনকিউবেটর’ এবং আরও নানা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা চিকিৎসার সুবিধা আছে। রয়েছেন অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরাও। কোভিডের আগে পর্যন্ত রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত এই হাসপাতালে ‘প্রি ম্যাচিওর’ শিশুদের জন্য আধুনিক মানের চিকিৎসার তেমন সুবিধা ছিল না। সেই সময় এই হাসপাতালে জন্মানো অসুস্থ শিশুদের পাঠানো হত অন্যত্র। অসুস্থ শিশুকে নিয়ে ছোটাছুটি করতে নাজেহাল হত পরিবারের সদস্যরা। তা ছাড়া অনেকে এমনও আছেন যাঁদের আর্থিক সামর্থ্য ততটাও ভাল নয়। অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে টাকাপয়সা নিয়েও নাকাল হতে হয় অনেককেই। সব দিকে নজর দিয়েই উন্নত মানের শিশুবিভাগ চালু করেছেন মাতৃ ভবন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাইরের হাসপাতাল থেকে আসা ‘প্রিম্যাচিওর’ শিশুদের রাখা হয়েছে ‘এনআইসি২’-এ। এই হাসপাতালেই সময়ের আগে জন্মছে এমন শিশুদের রাখা হয়েছে ‘এনআইসি১’-এ।
হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি প্রভ্রাজিকা আলোকপর্ণা বললেন, ‘‘একেবারে স্বল্প খরচে উন্নত মানের চিকিৎসা ব্যবস্থা দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা। অসুস্থ শিশুদের সঙ্গে মায়েরাও এখানে থাকেন। পৃথিবীতে এসেই শিশুরা যাতে মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে সেই কারণেই এই প্রয়াস। এ ছাড়া মায়েদের জন্যেও আলাদা করে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই হাসপাতালে ভর্তি হতে টাকাপয়সা কোনও বাধা নয়।’’ ‘অপারেশনাল পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড’ এবং ‘পেডিয়াট্রিক হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট’-এর দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক।
জয়ন্তী বসু বললেন, ‘‘ভাবনাচিন্তা একটা চলছিল। কোভিডের সময় এই হাসপাতালে করোনা রোগীও ভর্তি ছিলেন। ফলে তখন আর ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। অতিমারি পর্ব কিছুটা পেরিয়ে আসতেই এই তড়িঘড়ি তৈরি করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত অনেকেই আমাদের হাসপাতালের এই নতুন ইউনিটের ব্যাপারে জানেন না। ‘প্রিম্যাচিওর’ শিশুদের সুস্থ করে তুলতে অন্য জায়গায় যে বিপুল অর্থ খরচ হয়, তার তুলনায় মাতৃভবনে খরচ অতি নগণ্য। আমার মনে আছে আমাদের মাতাজি (প্রভ্রাজিকা আলোকপর্ণা) এক বার নিজের অর্থ ব্যয় করে এক শিশুর চিকিৎসা করিয়েছিলেন। বাইরের বেশ কিছু হাসপাতাল থেকেও আমাদের এখানে ‘প্রিম্যাচিওর’ শিশুদের পাঠানো হচ্ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে প্রতিটি শিশুকে সুস্থ করে তোলার শপথ নিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy