Advertisement
E-Paper

দুপুরের ভাতঘুম বা অনিয়মিত নিদ্রার অভ্যাস নাকি মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে! কেমন ঘুম তবে স্বাস্থ্যকর?

এমন ‘বিপজ্জনক’ ঘুমের ধরন আসলে নানাবিধ রোগের ইঙ্গিত দেয়। রাতে ঘুমের অভাব বা সার্কাডিয়ান ছন্দের বিচ্যুতি, হার্টের রোগ, হজমের অসুখ ইত্যাদি। গবেষকদের দাবি, এ কেবল অনুমানের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৫ ১৩:৩৮
দিনের বেলা অনিয়মিত, দীর্ঘ ঘুমের অভ্যাস রয়েছে কি?

দিনের বেলা অনিয়মিত, দীর্ঘ ঘুমের অভ্যাস রয়েছে কি? ছবি: সংগৃহীত।

স্বল্পদৈর্ঘ্যের ঘুম, অর্থাৎ ন্যাপিংয়ের আরাম ঠিক কেমন, জানে বাঙালি। কারণ তাঁদের নিজস্ব সম্পদ, ভাতঘুম। কিন্তু এই ক্ষণিকের ঘুম, দিনের যে কোনও সময়ে অল্প সময়ের জন্য ঘুমিয়ে নেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য আদপে ভাল নয়। এমনই দাবি উঠেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।

আপাতদৃষ্টিতে এই অভ্যাস ‘স্বাস্থ্যকর’ দেখায়। কারণ খুব ব্যস্ত দিনে অল্প সময় পাওয়া গেলে যদি ঘুমিয়ে নেওয়া যায়, তাতে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে বলেই ধারণা সকলের। শরীরও বেশ চনমনে হয়ে ওঠে। দূর হয় ক্লান্তি। কিন্তু নতুন গবেষণা বলছে, এর উপকারিতা তেমন নেই বললেই চলে। উল্টে বড় ক্ষতির ঝুঁকি দেখা গিয়েছে।

হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল এবং ম্যাসাচুসেট্‌স জেনারেল হসপিটালের গবেষণা বলছে, কয়েক ধরনের ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। ভয়াবহ আশঙ্কার কথা জানাচ্ছে তারা। ৮৬,০০০-এরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ককে, যাঁদের গড় বয়স ৬৩ বছর, ডিভাইস পরিয়ে ১১ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, কয়েক রকমের ঘুম, যেমন, দীর্ঘ, অনিয়মিত, বা দুপুরে গভীর ঘুম মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই), অ্যালকোহল সেবন, ধূমপান এবং রাতের ঘুম, সব নিয়ন্ত্রণে রাখার পরও এই ধরনের ঘুম ক্ষতি করতে পারে।

দীর্ঘ ক্ষণ ঘুমোনো এবং যখন তখন ঘুমোনো, দুইয়ের সঙ্গেই মৃত্যুর ঝুঁকি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। গবেষণার অংশভাক এবং প্রধান চেনলু গাওয়ের কথায়, ‘‘দীর্ঘ, অনিয়মিত ঘুম একই সঙ্গে রাতের ঘুমের সমস্যা করতে পারে, সার্কাডিয়ান ছন্দ ব্যাহত করতে পারে, হার্টের সমস্যা, বিপাকের সমস্যা, অবসাদের মতো অন্তর্নিহিত রোগের ইঙ্গিত দিতে পারে।’’

দিনের বেলা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ঘুমে ক্ষতির সম্ভাবনা কম।

দিনের বেলা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ঘুমে ক্ষতির সম্ভাবনা কম। ছবি: সংগৃহীত।

কোন তিন ধরনের ঘুম বিপদর সঙ্কেত দেয়?

দীর্ঘ ঘুম (আধ ঘণ্টার বেশি): গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা প্রায়শই ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ঘুমোন, তাঁদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। পাশাপাশি, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও তাঁদের বেশি।

অনিয়মিত ঘুম: দিনের যে কোনও সময়ে ঘুম, রোজ ঘুমের দৈর্ঘ্য পরিবর্তন, ইত্যাদির উপর মৃত্যুর হার নির্ভরশীল। এ সবই সার্কাডিয়ান ছন্দকে ব্যাহত করতে পারে। স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। বিপাকের সমস্যা বাড়াতে পারে। হার্টের রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে।

দুপুরে গভীর ঘুম (বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টে): স্বাস্থ্যকর রুটিন মেনে চলার পরেও যাঁরা মাঝে মাঝে বেলার দিকে অথবা বিকেলের শুরুতে গভীর ঘুমে চলে যান, তাঁদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।

চেনলু গাও বলছেন, এমন ‘বিপজ্জনক’ ঘুমের ধরন আসলে নানাবিধ রোগের ইঙ্গিত দেয়। রাতে ঘুমের অভাব বা সার্কাডিয়ান ছন্দের বিচ্যুতি, হার্টের রোগ, হজমের অসুখ ইত্যাদি। গাওয়ের দাবি, এ কেবল অনুমানের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে না। ২০২২ সালে ৩,৬০,০০০ প্রাপ্তবয়স্কের উপর একটি সমীক্ষা হয়েছিল, যা প্রকাশিত হয়েছিল ‘হার্ভার্ড হার্ট লেটার’-এ। দেখা গিয়েছে যে, ঘন ঘন যে কোনও সময়ে ঘুমোনোর ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি ১২ শতাংশ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। একই ভাবে, দীর্ঘ, অনিয়মিত ঘুম উচ্চ রক্তচাপ, ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স, নির্দিষ্ট স্নায়বিক রোগ দেখা দিতে পারে।

স্বল্পদৈর্ঘ্যের ঘুম কি একেবারে বাদ দিয়ে দিতে হবে?

ছোট ছোট ঘুম বন্ধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন না গবেষকেরা। বরং তাঁরা স্মার্ট ঘুম-এর প্রচার করছেন। কী সেটি?

ছোট ছোট ঘুম: ১৫-৩০ মিনিটের ঘুম ক্ষতিকারক নয়। যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘পাওয়ার ন্যাপ’।

ধারাবাহিক প্রয়োজন: প্রতি দিন একই সময়ে ঘুমোলে সার্কাডিয়ান ছন্দ বজায় থাকে।

তাড়াতাড়ি ঘুমোনো: বিকেল ৩টের আগে ঘুমোন। তাতে রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটবে না।

নিজেকে পরীক্ষা করুন: ঘন ঘন বা দিনের বেলায় দীর্ঘ ক্ষণ ঘুমোনো কি অন্য কোনও রোগের ইঙ্গিত দিচ্ছে? সেটা বোঝার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন নিয়মিত।

Napping Rule sleep cycle Healthy Lifestyle Tips Health Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy