বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে একটি মাত্র টিকায়। ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালিয়ে এমনটাই দাবি করেছে রাশিয়া। হাতে গোনা কয়েক জন মানুষের শরীরেও টিকাটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলেছে। প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের পরে রাশিয়া দাবি করেছে, তাদের তৈরি ‘এন্টেরোমিক্স’ টিকা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারবে। টিকাটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল নাকি ১০০ শতাংশ সফল হয়েছে।
টিকা তৈরি ও তার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনেকগুলি ধাপ থাকে। প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পশুর শরীরে পরীক্ষা চলে। তার পর তিন ধাপে মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালিয়ে টিকার কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা হয়। রাশিয়ার তৈরি টিকাটি এখন প্রাথমিক ধাপেই রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ৪৮ জনের শরীরে টিকাটি প্রয়োগ করা হয়েছে। তাতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব সামান্য হয়েছে বলেই দাবি।
চার ধরনের ভাইরাসের নমুনা নিয়ে ‘এন্টেরোমিক্স’ টিকা বানিয়েছে রাশিয়া। গবেষণাগারে ভাইরাসের নমুনাগুলিকে বিশুদ্ধ করে তা দিয়ে টিকা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। ওই ভাইরাসগুলি কম ক্ষতিকারক, তবে শরীরে ঢুকলে ক্যানসার কোষের দফারফা করতে পারবে। রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, টিকাটি ত্বকের সবচেয়ে বিপজ্জনক ক্যানসার মেলানোমার ঝুঁকি কমাতে পারবে। তা ছাড়া অগ্ন্যাশয়, কিডনি ও ফুসফুসের ক্যানসার থেকেও সুরক্ষা দিতে পারবে।
আরও পড়ুন:
টিকার কাজই হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলা। শরীরে যদি কোনও বিজাতীয় প্রোটিন ঢোকে, তা হলে শরীর তার নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা দিয়ে তা আটকানোর চেষ্টা করা। ক্যানসারের সময়ে শরীরের নিজস্ব কোষগুলিই শত্রুর মতো আচরণ করে। সেগুলির অনিয়ন্ত্রিত বিভাজন শুরু হয়ে যায়। ফলে টক্সিন তৈরি হতে থাকে। এই প্রক্রিয়াকে থামাতে হলে দু’টি জিনিসের প্রয়োজন— অ্যান্টিবডি ও ইমিউনোসাইট।
ইমিউনোসাইট হল সেই সব কোষ, যারা অ্যান্টিবডি তৈরি করে শরীরের প্রতিরোধ শক্তিকে বাড়িয়ে তোলে। এই ইমিউনোসাইট কোষগুলিকে সক্রিয় করে তুলতেই টিকা বা প্রতিষেধক তৈরি হয়। রাশিয়ার দাবি, তাদের তৈরি প্রতিষেধক ইমিউনোসাইটকে বেশি মাত্রায় এবং দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করবে। ফলে ক্যানসার কোষ আর তৈরিই হবে না। যদিও রাশিয়ার তৈরি ক্যানসারের টিকা নিয়ে নিশ্চিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। টিকাটির আরও কয়েক পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলের জন্যই অপেক্ষা চলছে।