Advertisement
E-Paper

রেটিনা দেখে ধরা যাবে স্মৃতিনাশের লক্ষণ? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে নতুন যন্ত্র বানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা

মনোবিদেরা বলেন, স্মৃতিনাশ মানে কেবল ভুলে যাওয়া নয়। এর নীচে আশ্রয় নেয় মনের আরও অনেক অসুখ। কোনওটা ভুলে যাওয়ার রোগ, কোনও ক্ষেত্রে ব্যবহারে হঠাৎ বদল, কারও আবার প্রচণ্ড আগ্রাসী মনোভাব।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:২৩
Scientists are developing a digital tool that can predict risk of dementia from simple Eye Test

রেটিনা দেখে কী ভাবে ধরা পড়বে ডিমেনশিয়া? প্রতীকী ছবি।

স্মৃতিনাশ বা ডিমেনশিয়ার মতো মানসিক ব্যাধি একা আসে না, আরও নানা অসুখকে সঙ্গী করে আসে। তাই ডিমেনশিয়া তলে তলে বাসা বাঁধছে কি না, তার লক্ষণ ধরা পড়ে না অনেক সময়েই। মনোবিদেরা বলেন, স্মৃতিনাশ মানে কেবল ভুলে যাওয়া নয়। এর নীচে আশ্রয় নেয় মনের আরও অনেক অসুখ। কোনওটা ভুলে যাওয়ার রোগ, কোনও ক্ষেত্রে ব্যবহারে হঠাৎ বদল, কারও আবার প্রচণ্ড আগ্রাসী মনোভাব। প্রতিটি উপসর্গ ধরা পড়ে ধীরে ধীরে। ফলে যত দিনে পরিষ্কার হয়, রোগী ডিমেনশিয়ার শিকার, তত দিনে জল গড়িয়ে যায় অনেক দূর অবধি। তাই স্মৃতিনাশের লক্ষণ গোড়াতেই চিহ্নিত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রয়োগে নতুন যন্ত্র তৈরি করেছেন স্কটল্যান্ডের ডেটা বিজ্ঞানীরা।

এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটি ও গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা একযোগে গবেষণা চালাচ্ছেন। গবেষকেরা জানিয়েছেন, একজন মানুষ ভবিষ্যতে স্মৃতিনাশের সমস্যায় ভুগতে পারেন কি না, তার কিছু লক্ষণ আগে থেকেই বোঝা সম্ভব। আর তা নাকি ধরা পড়ে চোখেই। রেটিনা ও অপটিক স্নায়ুতে এমন ছোট ছোট কিছু বদল আসে যা দেখে স্নায়বিক রোগ চিহ্নিত করা সম্ভব। যদিও খালি চোখে তা ধরা পড়বে না। তার জন্য উন্নত মানের যন্ত্র চাই। আর তেমনই যন্ত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

স্মৃতিনাশের দু’টি প্রধান পর্যায় রয়েছে। তার মধ্যে একটি অ্যালঝাইমার্স। যেখানে রোগী সব কিছু ভুলতে শুরু করেন। আর দ্বিতীয়টি হল ‘ভাসকুলার ডিমেনশিয়া’। এই পর্বে রোগীর আচার-আচরণ বদলে যেতে শুরু করে। হয়তো দেখবেন, কোনও একটা কাজে মন বসাতে পারছেন না। এমন লক্ষণ দিনের পর দিন দেখা যাচ্ছে। নিজে থেকে কিছু ভাবতে বা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। কথা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। অনেকগুলো কাজ দিলে কোনওটাই করে উঠতে পারছেন না। সেই সঙ্গেই ব্যবহারে বদল আসবে। অতিরিক্ত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় ভুগতে শুরু করবেন রোগী। এই সবই নাকি চোখ দেখে আগেই বোঝা সম্ভব।

এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটির ক্লিনিকাল অপথ্যালমোলজি বিভাগের গবেষক ব্যালজিয়ান ঢিলনের কথায়, শরীরের দেহকোষগুলির ক্ষয় বয়সের সঙ্গে সঙ্গে একই হারে হয় না। কারও ক্ষেত্রে তা হয় দ্রুত হারে। কারও ক্ষেত্রে তা কম। তেমনই মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় এক দিনে হয় না। মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে যা যা বদল হয় তার নিখুঁত ছবি অনেক আগেই ধরা পড়ে রেটিনায়। রেটিনার ভাষা পড়েই আগেভাগে বলে দেওয়া যেতে পারে কার স্নায়বিক রোগের আশঙ্কা আছে। কেবল স্মৃতিনাশ না কি আরও কিছু মানসিক রোগের ঝুঁকিও আছে। আর তা সম্ভব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) পদ্ধতির অ্যালগরিদমের মাধ্যমে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগেই এমন চক্ষু পরীক্ষার পদ্ধতি তৈরি হয়েছে যা রেটিনার ছবি তুলে নিখুঁত বিশ্লেষণ করবে। সেই যন্ত্রের অ্যালগোরিদম এমন ভাবে তৈরি যা রেটিনায় ধরা পড়া ছোট ছোট বদলগুলিকেও বিশ্লেষণ করে রোগের পূর্বাভাস বলতে পারবে। রেটিনায় থাকে স্নায়ুকোষ, থাকে রক্তজালিকাও। গবেষকদের ধারণা, রেটিনার কোষ, কলাগুলিই সবচেয়ে আগে জানাতে পারে রক্তজালিকা আর মস্তিষ্কের খবরাখবর। তাদের হালহকিকত। এর আগের কয়েকটি গবেষণা দেখিয়েছিল, রেটিনা জরিপ করে হৃদ্‌রোগ, কিডনির অসুখ-সহ আরও কিছু জটিল রোগের লক্ষণ আঁচ করা যেতে পারে। এই গবেষণা দেখাল, রেটিনা খুঁটিয়ে দেখে, মনের রোগের আভাস পাওয়াও সম্ভব।

Dementia Dementia Symptoms Artificial Intelligence Data Science & Artificial Intelligence AI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy