বার্ড ফ্লু কি মহামারির চেহারা নেবে? যে ভাবে ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে, তাতে এই সন্দেহই উঁকি দিচ্ছে অনেক বিজ্ঞানীর মনে। যদিও হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল ও ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, বার্ড ফ্লু তথা অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস (এইচ৫এন১) ছড়িয়ে পড়লেও তা মানুষের জন্য ততটা ক্ষতিকর বলে এখনও প্রমাণিত হয়নি। তবে কোভিডের পরে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। তাই এই সংক্রমণ রোখার নানা পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়েই। আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীরা এমন এক যন্ত্র তৈরির দাবি করেছেন, যা বাতাসের গুণমান পরীক্ষা করে বলে দিতে পারে ভাইরাস বাতাসের কণায় মিশে রয়েছে কি না।
বার্ড ফ্লু ভাইরাস দেশের নানা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। অন্ধ্রপ্রদেশের পরে ঝাড়খণ্ড, বোকারোতেও পোলট্রি ফার্মগুলিতে ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। এমনকি পাখির থেকে বিড়ালের শরীরেও ঢুকেছে ভাইরাস। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা আক্রান্ত হাঁস, মুরগি বা পরিযায়ী পাখির সংস্পর্শ থেকে কেবল নয়, বাতাসে ভেসেও ছড়াচ্ছে ভাইরাস।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বিশেষ এক ধরনের ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল ক্যাপাসিটিভ বায়োসেন্সর তৈরি হয়েছে, যা বাতাসের কণায় মিশে থাকা ভাইরাস চিহ্নিত করতে পারবে। ফলে কোন এলাকার বাতাসে ভাইরাসের আধিক্য রয়েছে, কত দূর অবধি তা ছড়িয়ে পড়ছে, তা জানা সম্ভব হবে। নতুন যন্ত্রটিতে ন্যানোক্রিস্টাল ও গ্রাফিন অক্সাইডের সূক্ষ্ম স্তর রয়েছে। এটি নেটওয়ার্কের কাজ করবে। সেটি কার্বন ইলেক্ট্রোডের উপর বসানো, যা সেন্সরের মতো কাজ করবে। এই যন্ত্রটিতে বাতাস ঢুকলে তাতে ভাসমান জলকণা, ধূলিকণায় কী কী রয়েছে, তা চিহ্নিত করা যাবে। জলকণায় বার্ড ফ্লু ভাইরাস রয়েছে কি না, তা-ও বোঝা যাবে।
আরও পড়ুন:
এখনও অবধি বার্ড ফ্লু তথা অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের যে দুই প্রজাতির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, তারা হল— এইচ৫এন১ এবং এইচ৭এন৯। ইউরোপ ও আমেরিকার বিজ্ঞানীরা বার্ড ফ্লু ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছেন, খুব দ্রুত ‘মিউটেশন’ বা জিনের রাসায়নিক বদল হচ্ছে এই ভাইরাসের। ফলে নতুন নতুন প্রজাতির জন্ম হচ্ছে। তার মধ্যে কিছু বাতাসে ভেসেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এইচ৫এন১ ভাইরাস তার জিনগত বিন্যাসের বদল ঘটিয়ে আরও সংক্রামক হয়ে উঠেছে। আগে কেবল আক্রান্তের সংস্পর্শ থেকে ভাইরাস ছড়াত। কিন্তু এই প্রজাতি এখন বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা বা জলকণাকে আশ্রয় করে বহু দূর অবধি ভেসে যেতে পারে। ভাইরাসকে ঠেকাতে তাই তাদের গতিপথেই নজর রাখতে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।