ঘুম ভেঙে উঠেই একরাশ দুশ্চিন্তা চেপে বসে মাথায়? সারা দিনের কাজ নিয়ে উদ্বেগও শুরু হয়। ফলে সকাল থেকেই খিটখিটে হয়ে থাকে মেজাজ। চাকরি, স্বাস্থ্য, আর্থিক অবস্থা, ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে নানা রকম দুশ্চিন্তা লেগেই থাকে। কিছুতেই মন শান্ত হতে চায় না। এই উদ্বেগ, দুশ্চিন্তার কারণে রাতে যেমন ঠিকমতো ঘুম হয় না, তেমনই দিনভর অশান্তি, উৎকণ্ঠা কাজ করে মনে। মনোবিদেরা এমন মানসিক স্থিতিকে বলেন ‘মর্নিং অ্যাংজ়াইটি’। এর থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় কী?
১) রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়ার অভ্যাস করলে ভাল হয়। ঘুমের জন্য একটিই সময় নির্দিষ্ট করুন। কোনওদিন তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাচ্ছেন আবার কোনওদিন মধ্যরাত পেরিয়ে যাচ্ছে, এমন করলে ‘স্লিপিং ডিজ়অর্ডার’ শুরু হবে অচিরেই। আর এর থেকেই মনে নানা রকম দুশ্চিন্তা, উদ্বেগের জন্ম হবে। ঘুমোতে যাওয়ার সময় ও ঘুম থেকে ওঠার সময় নির্দিষ্ট হওয়াই উচিত। এমনকি ছুটির দিনেও।
২) যাঁরা সকালে যোগাসন বা প্রাণায়াম করেন, তাঁদের মন অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি ভাল থাকে। ঘুম থেকে উঠে অন্তত কিছু ক্ষণের জন্য যোগাসন, ধ্যান করার চেষ্টা করুন। এতে মন শান্ত হবে। সকালে শুধু নয়, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও ১৫ মিনিট ধ্যান করার অভ্যাস করতে পারলে ঘুম ভাল হবে। উদ্বেগ অনেক কমে যাবে।
আরও পড়ুন:
৩) শত ব্যস্ততার মধ্যেও নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখা খুব জরুরি। সারা দিনের ব্যস্ততা যদি ঘুমের ঠিক আগের মুহূর্ত পর্যন্ত চলে, তা হলে কিন্তু ঘুমিয়ে পড়া সহজ নয়। অন্তত ১৫-২০ মিনিট ফাঁকা রাখুন। সে সময়ে বই পড়তে পারেন, গান শুনুন, ত্বকের পরিচর্যা করুন কিংবা ডায়েরিও লিখতে পারেন। ছবি আঁকা, লেখালিখি— এগুলিও মন ভাল করে দেবে।
৪) ঘুমোনোর অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে সমস্ত রকম বৈদ্যুতিন ডিভাইস থেকে দূরত্ব তৈরি করুন। তা যদি সম্ভব না হয়, তা হলে ঘুমের সময়ে মাথার পাশে মোবাইল বা ট্যাব নিয়ে শোবেন না।
৫) রাগ পুষে রাখার অভ্যাস ছাড়তে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রেও ক্ষতিটা শেষ পর্যন্ত আপনারই। কোনও খারাপ পরিস্থিতিকে বদলে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে ভাবুন। ইতিবাচক ভাবনা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। পরিণতির কথা ভাবলে উদ্বেগ আরও বাড়বে।
৬) পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বেড়ে যেতে পারে যে কোনও মানসিক সমস্যাই। অনিদ্রা ও মানসিক সমস্যার মধ্যে একটি চক্রাকার সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ একটি সমস্যা অন্যটিকে ডেকে আনে। একই ভাবে ঘুম কমে গেলে উদ্বেগ বাড়ে। তাই দৈনিক অন্তত ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম চাই-ই চাই।