Advertisement
E-Paper

৪২ থেকে বয়স কমল ৩২ বছরে, যৌবন ফিরে পেলেন ডেভিড, কোন মন্ত্রবলে হল এমন অসাধ্য সাধন?

বয়স কি সত্যিই কমানো যায়? কোনও রকম অস্ত্রোপচার, থেরাপি ছাড়াই ১০ বছর বয়স কমিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন গবেষক ডেভিড ফারম্যান।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ১৩:৩৩
Stanford Longevity researcher Dr.David Furman reversed his biological age by 10 years with this trick

কী ভাবে ১০ বছর বয়স কমালেন বিজ্ঞানী? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

১০ বছর বয়স কমিয়ে ফেলেছেন বিজ্ঞানী ডেভিড ফারম্যান। আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির এই বিজ্ঞানী বার্ধক্য পিছিয়ে যৌবন ধরে রাখার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন দীর্ঘ সময় ধরেই। মানুষের দীর্ঘায়ু নিয়ে তাঁর একাধিক গবেষণাপত্র বিশেষ ভাবে আদৃত। তিনিই এ বার দাবি করেছেন, এক বিশেষ পদ্ধতিতে শরীর ও মনের বয়স অন্তত ১০ বছর কমিয়ে ফেলেছেন তিনি। বয়স ৪২ বছর হলেও, তাঁর শরীরের প্রতিটি কোষের বয়স এখন ৩২ বছর।

বয়স কি সত্যিই কমানো যায়? বার্ধক্যের দোরগোড়ায় আসামাত্রই বয়স যেন পিছন দিকে ছুটতে শুরু করবে। বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখার এই যে অদম্য বাসনা, এর থেকেই ‘অ্যান্টি-এজিং’ নিয়ে এত হইচই। শরীরের বয়স কেবল লুকিয়ে রাখার থেরাপি নয়, বৃদ্ধ হওয়ার সময়টাকেই পিছিয়ে দিতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। আর এই বিষয়টি নিয়েই হাজারের বেশি প্রজেক্ট শেষ করে ফেলেছেন গবেষক ডেভিড। শেষ পরীক্ষাটি ছিল নিজের উপরেই। আর তাতেই তিনি দেখিয়েছেন কোনও রকম কাটাছেঁড়া, অস্ত্রোপচার বা হরমোন থেরাপি ছাড়াই, বয়স কমানো যায়। ঠেকিয়ে রাখা যায় দুরারোগ্য ব্যধিও।

কোষের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছেন বিজ্ঞানী, কী ভাবে?

গবেষক ডেভিড যে পদ্ধতির মধ্যে গিয়েছেন তার নাম ‘ফরেস্ট বেদিং’। জাপানে একে বলে ‘শিনরিন ইয়োকু’। অর্থাৎ, প্রকৃতির মধ্যে বেশি সময় কাটানো। ডেভিড জানিয়েছেন, উত্তর ক্যারোলিনার জঙ্গলে ঘেরা জায়গায় ছোট্ট বাড়ি তৈরি করেন তিনি। সেখানেই পরিবারকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন। শহুরে অভ্যাস বদলে ফেলেন অচিরেই। চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিজেদের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের পদ্ধতিতেও বদল আনেন।

ডেভিডের দিন শুরু হত বনের মধ্যে মেডিটেশন দিয়ে। এর পরে অন্তত এক ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি, পুল-আপ করতেন তিনি। শরীরচর্চা করতেন গাছপালা ঘেরা জায়গাতেই।

প্রাতরাশ করতেন র‌্যাস্পবেরি, ব্রকোলি, নানা রকম বেরি জাতীয় ফল দিয়ে। বার্গার-পিৎজ়ার মতো জাঙ্ক ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই ছেঁটে ফেলেন ডায়েট থেকে। বদলে সব্জি সেদ্ধ ও ফলমূল খেয়েই দিন কাটত তাঁর। ডেভিড জানিয়েছেন, যাপন পদ্ধতি বদলে ফেলার বছর কয়েকের মধ্যেই মাইগ্রেন নির্মূল হয়ে যায় তাঁর। ধীরে ধীরে ক্রনিক অসুখবিসুখও নির্মূল হতে থাকে। একটা সময় গিয়ে আর কোনও রকম ওষুধ খেতেও হত না তাঁকে। বছরখানেক বাদে নিজের শরীর থেকে নেওয়া কোষের নমুনার ডিএনএ ও বায়োমার্কার টেস্ট করে দেখেন, কোষের বয়স অন্তত ১০ বছর কমে গিয়েছে। জন্মতারিখ অনুযায়ী তাঁর বয়স ৪২ বছর হলেও, ‘বায়োলজিক্যাল এজ’ বা তাঁর শরীরের বয়স কমে হয়েছে ৩২ বছর।

মানুষের শরীরে প্রতি দশ বছর অন্তর হার্ট, লিভার, কিডনি, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ৫-১০ শতাংশ হারে কমতে থাকে। সাধারণত ৩০ বছরের পর থেকেই এই ক্ষয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাই দেখা যায়, ৫০ বছরে গিয়ে হয়তো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষমতা প্রায় ২০ শতাংশ কমে গিয়েছে। ৮০ বছরে গিয়ে তাই ৫০ শতাংশ বা তার বেশি কমে যাবে। এর কারণ হল, কোষের ক্ষয় ক্রমাগতই হয়ে চলেছে। কোষের মূল জিনগত উপাদান হল ক্রোমোজোম। ক্ষয়টা হয় এই ক্রোমোজ়োমেই। ক্রোমোজ়োমের শেষ প্রান্তে থাকে টেলোমিয়ার, যা ক্ষয়ে যেতে শুরু করলেই কোষ ক্রমশ মৃত্যুর পথে এগিয়ে যায়। এই ক্ষয়ের প্রক্রিয়া থামিয়ে দিতেই এত গবেষণা, পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। সেই পদ্ধতিটাই কেবল জীবনধারা বদলেই সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষক ডেভিড।

Anti Ageing Reverse Ageing diet for anti ageing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy