ঠান্ডা লাগলেই গলা ভেঙে যায়, বেশি চিৎকার করে কথা বললেই গলা বসে যায়— এই ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিতি কমবেশি সকলেরই। কিন্তু সব সময়ে গলার আওয়াজ পরিবর্তনের কারণ যে একই থাকবে, তা কিন্তু নয়। গলার আওয়াজ বা স্বরযন্ত্রের পরিবর্তনকে অনেকেই গুরুত্ব দেন না। কিন্তু যদি সেই পরিবর্তন তিন সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে থাকে, তা হলে বিষয়টিকে হালকা ভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। ক্যানসার চিকিৎসক সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, স্বরের দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন, বা কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যাওয়া অথবা কর্কশ হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে অনেক সময় দায়ী হয় ফুসফুসের ক্যানসার। এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণও হতে পারে সেটি।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, সাধারণ মানুষের ধারণা, ফুসফুসের ক্যানসারের উপসর্গ মানেই কাশি, তার সঙ্গে রক্তপাত, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা। কিন্তু অনেকেই জানেন না, গলার আওয়াজে পরিবর্তন আসাটাও বড়সড় লক্ষণ। জানেন না বলেই অনেকে এমন উপসর্গকে অবহেলা করেন। ফলে সময় মতো রোগ ধরা পড়ে না। গলার স্বর খসখসে হয়ে যাওয়া বা গলা ভেঙে যাওয়াকে অবহেলা করা উচিত নয়। অনেকেই ভাবেন, গলা ভেঙেছে মানেই ঠান্ডা লেগেছে। কিন্তু কেবল ঠান্ডা লাগলে গলার স্বর পরিবর্তন হয় না, ফুসফুসের ক্যানসারেরও লক্ষণ এটি।
ক্যানসারের সঙ্গে গলার স্বরের কী সম্পর্ক?
ক্যানসার চিকিৎসকের কথায়, ‘‘মানুষের গলার স্বরকে নিয়ন্ত্রণ করে স্বরযন্ত্র। যে স্নায়ু স্বরযন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি প্যারালাইজ়ড হয়ে যায়। ফুসফুসের টিউমারের জন্য এবং লিম্ফ নোডের টিউমারের কারণে এমনটা ঘটতে পারে। ফুসফুসের ক্যানসার যখন হয়, লিম্ফ নোড তখন এই স্নায়ুটিকে অকেজো করে দেয়। যার কারণে গলার স্বর ভেঙে যায়। তাই কারও যদি অনেক দিন ধরে গলার স্বরে সমস্যা চলতে থাকে, যদি দেখা যায়, অনেক দিন ধরে আওয়াজ ঠিক হচ্ছে না, তা হলে কোনও ইএনটি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি দেখা যায়, বাঁ দিকের স্বরযন্ত্র অকেজো হয়ে রয়েছে, তা হলে একেবারেই অগ্রাহ্য করা উচিত নয়। তখনই ক্যানসারের চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।’’