কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেশি খেলেই তা লিভারে গিয়ে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি হয়। একধরনের চর্বি যার প্রয়োজনীয়তা আছে শরীরে। কিন্তু যদি তা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায়, তখনই বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের কারণ হয়ে ওঠে। ভাত, আলুর মতো অতিরিক্ত সুক্রোজ় জাতীয় খাবার খেলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়তে পারে। আবার অ্যালকোহল, কফি— এমন কিছু পানীয় অতিরিক্ত পরিমাণে খেলেও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়।
লিপিড টেস্ট করালেই ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ জানা যায়। সাধারণত শরীরের ওজন অস্বাভাবিক বাড়লেই দেখা যায় ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণও বেড়েছে। স্থূলকায় ব্যক্তিদের শরীরে এর পরিমাণ বেশি থাকে। শরীরের মধ্যপ্রদেশ ভারী হতে থাকলে বা ভুঁড়ি দেখা দিলে, তা ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে। শরীরের রক্তবহনকারী নালির দেওয়ালে ট্রাইগ্লিসারাইড জমতে থাকে। এর ফলে ওই নালিগুলি সরু হতে হতে, রক্ত চলাচলও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে ক্ষতি হয় হার্ট, লিভারের। রক্তনালিতে অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইড জমলে তা থেকে স্ট্রোকের আশঙ্কাও বাড়ে। তাই একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে রোজের খাদ্যাভ্যাসে বদল আনাই জরুরি।
আরও পড়ুন:
কী কী খাবেন আর কী নয়?
১) সয় প্রোটিন বেশি করে খেতে হবে। রেড মিট খাওয়া কমান। বদলে খান সয়াবিন। টোফুও খুব উপকারী। ট্রাইগ্লিসারাইড যদি বেড়ে যায়, তা হলে কয়েক দিন সয়া মিল্ক খেয়ে দেখুন, উপকার পাবেন।
২) ওজন কোনও ভাবেই বাড়তে দেওয়া চলবে না। সে ক্ষেত্রে কায়িক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেঁধে দিতে হবে। অ্যালকোহল, ঘন ঘন কফি খাওয়া ছেড়ে দিলেই ভাল। সঙ্গে ধূমপান এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল হয়।
৩) মাছ খেতে হবে। রুই, কাতলা, ভেটকি, পমফ্রেট, যা সহজলভ্য, সেই মাছই খান। ছোট মাছ খাওয়া খুব ভাল। মৌরলা, পুঁটি জাতীয় মাছ রোজ খেতে পারেন।
৪) বিভিন্ন রকম বাদাম খেতে পারেন। কাঠবাদাম, আখরোট, পেস্তা খাওয়া যেতে পারে। শুকনো ফল রাখুন সঙ্গে। খুচরো খিদে মেটাতে ভাজাভুজি নয়, বাদাম ও শুকনো ফল খান। এতেও দ্রুত ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমবে।
৫) রোজ শরীরচর্চা করা বাধ্যতামূলক। রক্ত চলাচল সচল রাখতে শারীরিক কসরত করা জরুরি।
খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের ধরন বদলালেই এই সমস্যা অনেকটা কমানো যায়। এর পরেও ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তখন ওষুধ দিয়ে ট্রাইগ্লিসারাইড উৎপাদন কমানো হয়।