উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে এক ৩০ বছর বয়সি তরুণীর যকৃতে মিলল ভ্রুণ। এমন ‘মেডিক্যাল কেস’ ভারতে প্রথম বলে দাবি তরুণীর চিকিৎসকের। বেশ কিছু দিন ধরেই তলপেটের অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসকেরা এমআরআই করার পর রোগিণীর লিভারে ভ্রূণের অস্তিত্ব টের পান। ভ্রূণের বয়স তখন ১২ সপ্তাহ। জরায়ুর বদলে ডিম্বাণু শরীরের অন্যত্র তৈরি হলে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ‘এক্টোপিক প্রেগনেন্সি’। আর এ ক্ষেত্রে জরায়ুর বদলে লিভারে ভ্রূণের বৃদ্ধি হয়েছে বলে একে বলা হয় ‘হেপাটিক এক্টোপিক প্রেগনেন্সি’।
সাধারণ গর্ভাবস্থায় নিষিক্ত ডিম্বাণু ডিম্বনালির (ফ্যালোপিয়ান টিউব) মাধ্যমে জরায়ু গহ্বরে থাকে। কিন্তু এক্টোপিক গর্ভাবস্থায় নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ু গহ্বরের বাইরে স্থাপিত হয়। এক্টোপিক গর্ভাবস্থায় ভ্রূণটি যত বাড়তে থাকে, তত বেশি রক্তপাত হয় এবং ডিম্বনালির ক্ষতি হয়। এমনকি সঠিক চিকিৎসা না হলে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। শ্রোণি প্রদাহজনিত রোগ (পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ), ইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইস (এক প্রকারের জন্ম নিয়ন্ত্রক যন্ত্র), যৌন সংক্রমণজনিত রোগ (এসটিডি) থাকলে এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পূর্ববর্তী সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে এক্টোপিক গর্ভাবস্থার ঝুঁকি বেশি। সারা বিশ্বে অন্তঃসত্ত্বাদের ০.২৫ থেকে ২ শতাংশ মহিলার ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায়।
এক্টোপিক প্রেগনেন্সির উপসর্গ কী?
১। সন্তানধারণের প্রথম ছয় সপ্তাহের মধ্যে সাধারণ অন্তঃসত্ত্বা ও এই রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে তেমন কোনও পার্থক্য দেখাও যায় না। কিন্তু ছয় সপ্তাহ পর থেকে যোনি থেকে রক্তপাত শুরু হতে পারে রোগীর।
২। আচমকা তলপেট বা শ্রোণিদেশে ব্যথা শুরু হতে পারে। সাধারণ পেট ব্যথার সঙ্গে এর পার্থক্য হল, এই ব্যথা হঠাৎ কমে যায়, কখনও পেটের একটি পাশে দেখা যায় ব্যথা।
৩। কারও কারও ক্ষেত্রে ঘাড়ে ব্যথা দেখা যেতে পারে, এই ব্যথা শোয়ার পরে বৃদ্ধি পায়।
৪। মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
৫। অতিরিক্ত রক্তপাতের ফলে রোগী জ্ঞান হারাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে যেতে হবে হাসপাতালে।