শরীরের ভিতর মোচড় দিয়ে যখন পেটের অন্তস্তল থেকে খাবার বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়, তখন কী অবস্থা হয়, তা ভুক্তভোগীই জানেন। বমি হলে তাই অনেকেই শারীরিক ভাবে দুর্বল বোধ করেন। কারও বা মাথা ঘোরে। এ বার ভাবুন, এক বার এমন বমি হলেই যদি এমন অবস্থা হয়, তবে ঘণ্টায় ১৫ বার বমি হলে কী হতে পারে? ২৯ বছরের এক তরুণী হাড়ে হাড়ে বোঝেন সেই কাহিল অবস্থা। কারণ, বাস্তবে ওই মারাত্মক অভিজ্ঞতার শিকার তিনি। সৌজন্যে এক বিরল রোগ।
বিরল রোগে আক্রান্ত ওই তরুণীর নাম শারিসে জেরোনিয়ান। তিনি আমেরিকার বাসিন্দা। শারিসে জানাচ্ছেন, তাঁর রোগ যখন বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছোয় তখন ঘণ্টায় ১৫ বার পর্যন্ত বমি হয়। আর এমন বাড়াবাড়ি বছরে এক বার বা মাসে এক বার নয়, সপ্তাহখানেক অন্তর বারে বারে হতে থাকে।
শারিসে জানাচ্ছেন, মানসিক চাপে থাকলে, উদ্বিগ্ন বোধ করলে, এমনকি কোনও কারণে মানসিক কষ্টে থাকলেও হঠাৎ বমি শুরু হয় তাঁর। আবার ঋতুচক্র শুরু হওয়ার দিন কয়েক আগেও এ রোগ বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছয়।
এই রোগ হলে কী হয়?
শারিসে বলছেন, ‘‘ওজন কমে যায়, কাজ করার ক্ষমতা থাকে না। মানসিক ভাবেও ভাল থাকি না। এমনকি, মাঝে মধ্যে আত্মহত্যার ইচ্ছেও হয়। কিন্তু বিরক্তিকর ব্যাপার হল, যখন সেই ইচ্ছে হয়, তখনও আবার বমি হতে থাকে!’’
শারিসের ওই রোগের নাম ‘সাইক্লিক ভমিটিক সিনড্রোম’। তবে বিরল ওই রোগ বুঝতেই চিকিৎসকদের বহু বছর লেগে গিয়েছে। বছরের পর বছর হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে ঘুরে অবশেষে ২০২৩ সালে তাঁর রোগ ধরা পড়ে। তার পরে শুরু হয় চিকিৎসা।
সাইক্লিক ভমিটিক সিনড্রোম (সিভিএস) আসলে কী?
চিকিৎসকেরা শারিসেকে জানিয়েছেন, অন্ত্র আর মস্তিষ্কের বোঝাপড়ার অভাবে এই রোগ হয়। পৃথিবীতে ২ শতাংশ মানুষের এই রোগ হতে পারে। তার মধ্যে মূলত মহিলাদেরই সিভিএসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ ছাড়া মাইগ্রেনের রোগীদেরও এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কখন শরীরে এই রোগের প্রকোপ বাড়ে?
চিকিৎসকেরা বলছেন অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলে, মোশন সিকনেস থাকলে, ক্ষমতার অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে, ঋতুচক্রের সমস্যা হলেও এমন হতে পারে।