সামান্য কেটে গেলে বা আঘাত লাগলেই জায়গাটা অস্বাভাবিক রকম ফুলে যায়? ব্যথা সেরে যাওয়ার পরেও চামড়ার নীচে ছোট ছোট মাংসপিণ্ড অনুভব করলে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে। শরীরের কোনও অংশে ফোলা ভাব রয়েছে, অথচ সেখানে ব্যথা নেই, এমন হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। ব্য়থা নেই মানেই অনেকে ভেবে ফেলেন, সেটি ক্ষতিকর কিছু নয়। কিন্তু এমন কিছু রোগ থাকে, যেগুলি বাসা বাঁধে নীরবে, উপসর্গও খুব ভয়ঙ্কর কিছু নয়। তলে তলে ছড়াতে থাকে শরীরে। হাড়ের ক্যানসার খানিকটা সে রকমই।
হাড়ের ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা খুবই কম। গাঁটে গাঁটে ব্যথা মানেই যে ক্যানসারের লক্ষণ, তা কিন্তু নয়। হাড়ের ক্যানসারের এমন অনেক উপসর্গ আছে, যেগুলিকে মামুলি বলেই মনে হতে পারে। কী কী সেই লক্ষণ, তা জেনে রাখা ভাল।
কোন কোন লক্ষণ বুঝলে চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
রাতের বেলা পেশিতে টান, হাড়ে ব্যথা
হাড়ের যে অংশে টিউমার কোষের বৃদ্ধি শুরু হয়, সেখানে প্রচণ্ড প্রদাহ হয়। ফলে ওই অংশের পেশিতে টান ধরতে থাকে। রাতের দিকে বা বিশ্রাম নেওয়ার সময়ে এটি বেশি হয়। অনেকেই ভাবেন, সারা দিনের ক্লান্তির পরে হয়তো পেশিতে টান ধরছে বা হাত-পায়ে ব্যথা করছে। যদি এমন ব্যথা ও পেশির টান লাগাতার হতে থাকে এবং সেই সঙ্গে অস্থিসন্ধিগুলিতে প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হয়, তা হলে সাবধান হতে হবে।
ত্বকের নীচে ফোলা মাংসপিণ্ড
হাত, পা বা ঊরুতে ত্বকের নীচে ব্য়থাহীন মাংসপিণ্ড অনুভব করলে, দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। এমন মাংসপিণ্ড পিঠে, পাঁজরের দিকেও হতে পারে। এতে কোনও ব্যথা থাকে না, সেই জায়গায় লালচে ভাবও থাকে না। তবে হাত দিলে ত্বকের নীচের ফোলা ভাব বোঝা যায়।
আরও পড়ুন:
সামান্য আঘাতেই হাড় ভাঙবে
হাড়ের ক্যানসার শরীরে বাসা বাঁধলে হাড়ের ক্ষয় শুরু হয় এবং হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়। এর ফলে ওঠা বা বসার সময়ে, হাঁটু ভেঙে বসার সময় বা নিতান্ত সাধারণ কারণেও অনেক সময়ে হাড় ভাঙতে বা ফ্র্যাকচার হতে পারে। সে ক্ষেত্রেও সাবধান হন।
বিশ্রামের সময়েও ক্লান্তি
ক্লান্তি, ঝিমুনি ভাব নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যাবে। বিশ্রাম নেওয়ার সময়েও ক্লান্ত লাগবে। হাত-পা অবশ হয়ে আসবে মাঝেমধ্যেই। হাড়ে টিউমার হলে অস্থিমজ্জা থেকে লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন কমে যায়। ফলে কোষে কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছতে পারে না। ফলে পেশির সক্রিয়তা কমতে থাকে।
ওজন কমবে
আচমকাই ওজন কমতে থাকবে। খিদে কমে যাবে। কিছু খেলেই বমি ভাব থাকবে। বিপাকক্রিয়ার হার কমবে, ফলে যা-ই খান, ঠিকমতো হজম হবে না। বাড়বে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা। এমন হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।