ইয়ারবাড বা ইয়ারফোন পরিষ্কার করে ব্যবহার করার কথা ক’জনই বা ভাবেন! আবার রোজ পরিষ্কার করার ঝক্কি অনেকেই নিতে চান না। ইয়ারবাডও যে পরিষ্কার করে ব্যবহার করা উচিত, তেমন ধারণাও নেই বেশির ভাগেরই। এখন কথা হল, ইয়ারবাড বা ইয়ারফোন রোজ পরিষ্কার করতে কেন বলা হচ্ছে?
কী কী কারণে ইয়ারবাড বা ইয়ারফোন নিয়মিত পরিষ্কার করবেন?
তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কানে সর্ব ক্ষণই ইয়ারবাড গোঁজা থাকে। তা ছাড়া এখন যেমন ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর কাজ, তাতে পেশাগত কারণেও কানে ইয়ারবাড বা ইয়ারফোন গুঁজে রাখতে হয় অনেককেই। আর কানের ময়লা, ঘাম জমে ইয়ারবাড বা ইয়ারফোনের সিলিকন টিপের ভিতরে প্রচুর পরিমাণে নোংরা জমে যায়। দীর্ঘ দিন তা পরিষ্কার না করলে, সেখানেই নানা জীবাণু বাসা বাঁধে। ফলে ব্যবহারের সময়ে সেই সব জীবাণু ঢুকে কানের পর্দার ক্ষতি করে। কানের ভিতরে সংক্রমণও ঘটে।
নাক-কান-গলার (ইএনটি) রোগের চিকিৎসক অমিতাভ ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, নোংরা ইয়ারবাড বা ইয়ারফোন থেকে অন্তঃকর্ণের ককলিয়া অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি, কানের ভিতরে ছোট ছোট ব্রণ হতে পারে। বহিঃকর্ণে অনেক সময়েই ‘ওটিটিস এক্সটার্না’ নামে এক ধরনের অসুখ হয়, যার থেকে কানের ভিতরে পুঁজ জমতে পারে। এটি এক রকমের প্রদাহজনিত অসুখ, যাকে ‘সুইমার’স ইয়ার’ বলা হয়। এই ধরনের অসুখ যদি হয়, তা হলে তা থেকে কানে আরও নানা রকম ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক ঘটিত রোগও হতে পারে। শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে পর্যন্ত। আরও একটি সমস্যা হতে পারে। ওটিটিস এক্সটার্না থেকে ত্বকের সংক্রমণও হতে পারে। যাঁদের সোরিয়াসিস বা একজ়িমা আছে, তাঁরা যদি দিনের পর দিন অপরিষ্কার ইয়ারবাড ব্যবহার করে যান, তা হলে ত্বকের রোগ আরও বেড়ে যাবে। কান যে হেতু সারা শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে, তাই কানের ক্ষতি হওয়া মানে তার প্রভাব পড়বে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতেও। সে কারণেই নিয়মিত ইয়ারফোন বা ইয়ারবাড পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি।
আরও পড়ুন:
এ বার কথা হল, পরিষ্কার করবেন কী ভাবে? গোটা ইয়ারবাড বা ইয়ারফোন সাবান ডলে ডুবিয়ে দিলে কিন্তু তা নষ্ট হয়ে যাবে। পরিষ্কার করার কিছু উপায় রয়েছে—
১) প্রতি বার ব্যবহারের পর তুলো দিয়ে ইয়ারফোনের সিলিকন টিপ, তার এবং ইয়ারবাড ভাল করে মুছে তবেই রাখুন।
২) চিকিৎসক জানাচ্ছেন, বাজারে এখন নানা রকম ‘মিনি টুল’ পাওয়া যায়, যেমন— পরিষ্কার করার মিনি ব্রাশ, পেনের মতো দেখতে টুল বা তুলোর বল। তা দিয়েই রোজ পরিষ্কার করা উচিত।
৩) ইয়ারফোনের সিলিকন টিপের ভিতরে কানের ময়লা, ঘাম জমে থাকে। সেগুলি খুলে নিয়ে হালকা তরল সাবান জলে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তার পর তুলে শুকনো কাপড় বা তুলো দিয়ে মুছে ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে। গোটা ইয়ারফোন যেন আবার সাবান জলে ডুবিয়ে দেবেন না।
৪) স্পিরিট বা অ্যালকোহল জাতীয় কোনও কিছু দিয়ে ইয়ারফোন বা ইয়ারবাড পরিষ্কার করবেন না। ধারালো কোনও জিনিস যেমন পিন, সেফটিপিন দিয়ে খোঁচাখুঁচি করবেন না। এতে মাইক্রোফোনটি খারাপ হয়ে যেতে পারে।
৫) ইয়ারবাড যে বাক্সে থাকে, সেটিকেও শুকনো তুলো বা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।