কোলাজেন কমে যাচ্ছে শরীরে। আপনি টেরও পাচ্ছেন না হয়তো। কোলাজেন নামক এই প্রোটিনের কারণেই ত্বকে জেল্লা আসে, অস্থিসন্ধি মজবুত হয়, চুলের গোড়া শক্তিশালী হয়। নতুন প্রজন্মের স্বাস্থ্যচর্চার মধ্যে যদিও স্থান পেয়েছে কোলাজেন। কেউ কফিতে মিশিয়ে খাচ্ছেন, কেউ বা চিউয়িং গাম হিসেবে চিবিয়ে নিচ্ছেন। মোট ২৮ রকমের কোলাজেন রয়েছে। কিন্তু প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় রকমের কোলাজেনই আসল। প্রথম ধরনের কোলাজেন যত্ন নেয় ত্বক, হাড়, টেন্ডন, লিগামেন্টের। দ্বিতীয়টি কার্টিলেজ এবং অস্থিসন্ধির দেখভাল করে। তৃতীয়টি ত্বক, রক্তনালিকা এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির যত্ন নেয়।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থেকে অ্যামাইনো অ্যাসিড জড়ো করে কোলাজেন তৈরি করে শরীর। এই প্রক্রিয়ায় সহকারী হিসেবে কাজ করে ভিটামিন সি, জ়িঙ্ক, কপার। কিন্তু ২০ বছরের মধ্য বা শেষ ভাগ থেকে কোলাজেন উৎপাদন কমতে থাকে ১ শতাংশ করে। শরীরের কোন কোন লক্ষণে কোলাজেন হ্রাস টের পাবেন?
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থেকে অ্যামাইনো অ্যাসিড জড়ো করে কোলাজেন তৈরি করে শরীর। ছবি: সংগৃহীত।
কোলাজেন কমলে শরীরে কী কী প্রভাব পড়ে?
১। ত্বকে প্রভাব: কোলাজেন কমতে থাকলে মুখ বলিরেখা পড়তে থাকে। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমতে শুরু করে। শুষ্কতা, নিস্তেজ ভাব, সবই প্রকট হয়ে ওঠে ধীরে ধীরে।
২। চুলে প্রভাব: চুলের ফলিকলে পুষ্টি প্রদান করে কোলাজেন। তাই এটি কমে গেলে চুল পাতলা হয়ে আসে। ভাঙন ধরে দ্রুত। চুল কম গজায়। মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে চুলকানি বাড়ে।
৩। অস্থিসন্ধিতে প্রভাব: দ্বিতীয় প্রকারের কোলাজেন কমে গেলে কার্টিলেজ দুর্বল হয়ে যায়। অস্থিসন্ধি শক্ত হয়ে আসে। বিশেষ করে শরীরচর্চার পর এই সমস্যা বেশি টের পাওয়া যায়। প্রদাহ সারতে সময় লাগে। এই প্রবণতা যে কেবল বার্ধক্যে লক্ষ করা যায়, এমন নয়। ক্রীড়াবিদ বা এক সময়ে প্রবল খেলাধুলো করে থাকলে বয়সের আগেই এই সমস্যা জাঁকিয়ে বসতে পারে।
৪। অন্ত্রে প্রভাব: অন্ত্রেও কোলাজেনের উপস্থিতি রয়েছে। সে কারণেই কোনও কোনও পুষ্টিবিদ কোলাজেন হ্রাসের সঙ্গে বদহজমের সমস্যার সংযোগ খুঁজে পান।
৪। মেজাজে প্রভাব: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মন ও মেজাজের উপরেও কোলাজেনের প্রভাব রয়েছে। অন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্ক, অ্যামাইনো অ্যাসিডের ভারসাম্য রাখা ইত্যাদি কারণে কোলাজেন কমে গেলে মেজাজ খারাপ হতে পারে।