Advertisement
E-Paper

রোজের কোন কোন ওষুধের কারণেই চরম ক্ষতি হচ্ছে লিভারের, ভুগছেন পেটের সমস্যায়

সকালে ঘুম থেকে উঠেই হজমের ওষুধ খেয়ে নিলেন। তার পর ব্যথাবেদনা হলে যখন তখন একটা ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে নিলেই হল। পেটের গোলমাল বা ডায়েরিয়া হলে তার জন্য চেনা অ্যান্টিবায়োটিক তো আছেই। ইচ্ছামতো ডোজ়ে যখন খুশি চালান করলেন পেটে। এই অভ্যাসই যে শরীরের সর্বনাশ করছে, সে খেয়াল আছে কি?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:০৪
চেনা ওষুধেও বিপদ, কোনগুলির জন্যই লিভারের রোগ এত ভোগাচ্ছে।

চেনা ওষুধেও বিপদ, কোনগুলির জন্যই লিভারের রোগ এত ভোগাচ্ছে। ছবি: এআই।

শরীর খারাপ হল কি হল না, হাত চলে যায় ইন্টারনেটে। দ্রুত হাতে নিজের উপসর্গগুলি লিখে নেটদুনিয়ায় সমাধান হাতড়ান অনেকেই। চিকিৎসকের কাছে না গিয়েও যদি ওষুধ বা পথ্য জেনে নেওয়া যায়, তা হলে ক্ষতি কী! সময় বাঁচে, আর পকেটও। জ্বর-পেটখারাপ-মাথা ব্যথা হলে এক দিন বা দু’দিনের ওষুধ কিনে নেওয়া হয়। সমস্যা মিটে গেলে ওষুধ খাওয়া অপ্রয়োজন বলে মনে হয়। ফলে কোর্স শেষ না করেই ওষুধ বন্ধ। তাতে রোগ সারল ঠিকই, কিন্তু সমস্যাটা গোড়া থেকে নির্মূল হল কি? এই যে অহরহ এত ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা, তাতেই বারোটা বাজছে লিভারের। পেটের সমস্যা যেন ক্রনিক হয়ে যাচ্ছে। রোজের চেনা কিছু ওষুধই অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার কারণে এই বিপদ ঘনাচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে একাধিক গবেষণায়।

সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এ সংক্রান্ত একটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানেই বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য। তারা দেখিয়েছে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছেমতো ভুল ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হচ্ছেন অনেকেই। তা থেকে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। এমন কিছু ওষুধ আছে, যেগুলি চিকিৎসকের পরামর্শে ও সঠিক ডোজ়ে না খেলে লিভারের ক্ষতি হবে। হজম সংক্রান্ত সমস্যা সারবেই না। ফলে ধীরে ধীরে তা ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’-এর দিকে বাঁক নেবে।

রোজের কোন কোন ওষুধই ক্ষতি করছে লিভারের?

গ্যাস-অম্বলের ওষুধ দিয়েই শুরু করা যাক। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে অম্বল কমানোর ওষুধ খেয়ে ফেলা অনেকেরই অভ্যাস। তার পর সারা দিন ইচ্ছামতো খাবার খেলেও অম্বল হবে না, চনমনে খিদেও পাবে। এমন ওষুধ দিনের পর দিন খেয়ে গেলে লিভারের সমস্যা কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমেরিকান সোসাইটি অফ মাইক্রোবায়োলজি থেকে প্রকাশিত একটি জার্নালে লেখা হয়েছে, ‘পিপিআই’ বা ‘প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর’ অর্থাৎ ওমিপ্রাজোল গোত্রের ওষুধ নিয়ম মেনে না খেলে অপুষ্টি, রক্তাল্পতা, ভিটামিন বি১২–র ঘাটতি হয়। নিয়মিত খেলে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের পরিমাণ কমে ক্ষতিকর জীবাণুর বাড়বাড়ন্ত হয়৷ ডায়েরিয়া হয় মুহুর্মুহু।

আবার মাল্টিভিটামিন খাওয়ার প্রবণতাও অনেকের আছে। শরীর দুর্বল লাগলে এক পাতা মাল্টিভিটামিন কিনে খেতে শুরু করেন। ডোজ় না জেনেই রোজ একটি করে ট্যাবলেট খেয়ে যান। এতে শরীরের ক্লান্তি ভাব কমে ঠিকই, কিন্তু অন্য সমস্যাও মাথাচাড়া দিতে থাকে। ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে হল ফ্যাট-সলিউবল ভিটামিন, অর্থাৎ এগুলি চর্বিতে দ্রবণীয়। এই ভিটামিনগুলির মাত্রা বেশি হলে সেগুলি লিভারে গিয়ে জমা হতে থাকে। দিনের পর দিন অতিরিক্ত ভিটামিন এ বা ডি লিভারে জমতে থাকলে তা থেকে লিভারের কোষের ক্ষয় শুরু হয় যা ফ্যাটি লিভার ও পরবর্তী সময়ে গিয়ে লিভার সিরোসিসের কারণ হয়ে ওঠে।

জ্বরের চেনা কিছু ওষুধ অতিরিক্ত খেলেও লিভারের ক্ষতি হয়। ব্যথা কমানোর জন্যও এমন ওষুধ মাঝেমধ্যেই খেয়ে ফেলেন অনেকে। তাতেও লিভারের রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ, খিঁচুনির ওষুধ নিয়ম মেনে না খেলে অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার ক্ষতি হয়। খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে, যারা হজমের গোলমাল ঘটায়।

রক্তাল্পতা কমানোর কিছু চেনা ওষুধ, কোষ্ঠকাঠিন্যের ওষুধ নিয়মিত খেতে থাকলে তা থেকেও লিভারের বারোটা বাজে। এতে সমস্যা কমার বদলে আরও বেড়ে যায়।

যে সব সাপ্লিমেন্টে ভিটামিন এ ও আয়রনের মাত্রা বেশি, সেগুলি দিনের পর দিন উচ্চ মাত্রায় খেয়ে গেলে লিভারে বিষক্রিয়া হতে পারে। ফলে লিভারের স্বাভাবিক কাজ করার ক্ষমতা ব্যাহত হবে, রক্তে বিলিরুবিন জমা হয়ে জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

liver health Fatty Liver liver diseases
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy