বিমানে লম্বা সফর, এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাত্রা, বিশেষত যদি দুই দেশে সময়ের ফারাক অনেকটা হলেই ভুগতে হয় জেট ল্যাগে। তবে শুধু জেট ল্যাগ নয়, দীর্ঘ বিমানযাত্রায় ভুগতে হতে পারে ‘জেট বেলি’-তেও।
নামেই রয়েছে ইঙ্গিত। দীর্ঘ বিমান সফরে অনেকেই গ্যাস, পেটফাঁপা, বদ হজমের সমস্যায় ভোগেন। তবে তা শুধু খাওয়ার দোষে নয়। বরং এর নেপথ্যে থাকে উচ্চতা, বায়ুচাপ জনিত ফারাক।
আরও পড়ুন:
আমেরিকান পুষ্টিবিদ অ্যান ডিমউরো বারান্তে সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে স্বল্পচেনা এই উপসর্গ নিয়েই আলোকপাত করেছেন। তিনি বলছেন,‘‘ বিমানে আচমকা উচ্চতাজনিত তারতম্য, সফরের উত্তেজনা, দুশ্চিন্তার প্রভাবে শরীর ঠিক ভাবে খাবার হজম করতে পারে না।’’
১৯৬৯ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষালব্ধ ফলে দেখা গিয়েছে, লম্বা বিমান সফরে কারও কারও হালকা পেট ব্যথা, পেট ভারের মতো লক্ষণ দেখা গিয়েছে। বিশেষত কোলাইটিস থাকলে সমস্যা বেশি হয়েছে।
পুষ্টিবিদেরাও বলছেন, বিমানয়াত্রার ধকলের পর হজমের সমস্যায় ভোগেন অনেকে। বিষয়টি সাধারণ। বিমান সফর নিয়ে ভয়, উত্তেজনা থাকলে এমন হয়। বিমানযাত্রার সময় উচ্চতা, বায়ুচাপজনিত হেরফেরের দরুন, পরিপাকতন্ত্রে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। তারই প্রভাব পড়ে হজমে। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, বায়ুচাপের ফারাকের চেয়েও দীর্ঘ ক্ষণ একই ভাবে বসে থাকার জন্যও সমস্যা বাড়ে। যাত্রার সময় যত দীর্ঘায়িত হয়, সমস্যাও তত বেড়ে যায়।
করনীয় কী?
· লম্বা বিমান সফরে পর্যাপ্ত জল খাওয়া জরুরি, যাতে শরীরে আর্দ্রতার অভাব না ঘটে। জলের অভাবে পেটের সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
· ভরপটে খেয়ে উঠলেও হজমের সমস্যা হতে পারে। বদলে অল্প এবং সহজপাচ্য খাবার খাওয়া দরকার। বিমান সফরের বেশ কিছু ক্ষণ আগে খাওয়া-দাওয়া করে নিলে সুবিধা হতে পারে।
· লম্বা সফরে মাঝমধ্যে উঠে দাঁড়ানো, হাঁটাচলা করলেও শরীর ঠিক থাকবে।
· মাঝ-আকাশে মদ্যপান, বার বার চা-কফি খাওয়া এড়িয়ে চলা ভাল। এতে শরীরে জলের অভাব হতে পারে।
· বিমান সফর নিয়ে উদ্বেগ বা অস্বস্তি থাকলে, চেষ্টা করা দরকার ঘণ্টাখানেক অন্তর কয়েক মিনিট যদি হাঁটা যায়।
· কার্বনেটেড পানীয় বা চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলাই ভাল।
· সঙ্গে হজমের ওষুধ রাখুন। দুধ-চিনি ছাড়া আদা চায়ে চুমুক দিলেও স্বস্তি বোধ হতে পারে।