প্রোটিনে ভরপুর, পু্ষ্টিগুণও যথেষ্ট। বালিতে ভাজা বলে অম্বলের ভয় নেই। ভয় নেই বাড়তি ক্যালোরির। তাই সান্ধ্য খিদে ছোলাভাজা খেয়েই মিটছে!
স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজনের অনেকেরই খাদ্যতালিকায় বদল এসেছে। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ওজন বশে রাখতে মাখানা বা ছোলাভাজার মতো খাবার বেছে নিচ্ছেন। সেই কারণে, বাজারে এখন প্যাকেটজাত ছোলাভাজাও বিক্রি হচ্ছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এমনিতে এই খাবার স্বাস্থ্যকর। বালিতে ভাজা ছোলা বা অভেনে বেক করা ছোলায় তেল থাকে না। তবে সতর্ক না হলে এর মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে বিপদও।
আরও পড়ুন:
সাধারণত মুচমুচে ছোলাভাজাও খেতে অভ্যস্ত সকলে। ছোলার খোসা কালো হয়ে উঠে যাবে, ছোলা ভাল করে ভাজা হবে, লালচে রং ধরবে এমনটাই খেতে পছন্দ করেন সকলে। সমস্যা সেখানেই। পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, ‘‘শুধু ছোলা নয়, যে কোনও ডাল, অনেক ক্ষণ ধরে উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজলে বা রোস্ট করলে মেলার্ড রিঅ্যাকশনের ফলে ‘অ্যাক্রিল্যামাইড’ তৈরি হয়। এই যৌগটি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। নিয়মিত তা শরীরে প্রবেশ করলে ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। খাবারে নিউরোটক্সিক প্রভাবের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’ গুরুগ্রামিবাসী পুষ্টিবিদ অর্চনা বাত্রা জানাচ্ছেন, এই নিয়ে একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। অ্যাক্রিল্যামাইড-এর প্রভাব নিয়ে প্রাণীদের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, অ্যাক্রিল্যামাইড গ্লাইসিডামাইডে রূপান্তরিত হয়, যা পরবর্তী প্রজন্মেরও ক্ষতি করতে পারে।
তবে ছোলাভাজা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর নয়, স্পষ্ট করছেন অনন্যা। জানাচ্ছেন, কী ভাবে তা ভাজা হচ্ছে তার উপর পুষ্টিগুণ নির্ভর করছে। তেলে ভাজলে গুণ চলে যায়। উচ্চ তাপমাত্রায় রোস্ট করলে বা বেক করলেও প্রোটিনের মাত্রা কমতে পারে এবং ‘অ্যাক্রিল্যামাইড’ তৈরি হতে পারে।
পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে ছোলাসেদ্ধ বা ভেজানো খাওয়া ভাল। ভাজতে হবে ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায়। ছোলায় সোনালি রং ধরলেই নামিয়ে নিতে হবে। কালচে বাদামি করে ভাজতে গেলেই অ্যাক্রিল্যামাইড উৎপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। ছোলা ভিজিয়ে তার পর তা হালকা নাড়াচাড়া করেও খাওয়া যায়।
বাজারচলতি ছোলাভাজায় নানা রকম স্বাদ, গন্ধ, মশলা যোগ করা হচ্ছে। অর্চনার কথায়, স্বাদ বৃদ্ধিতে তা কড়া করে ভাজলে এবং প্যাকেটবন্দি খাবার ভাল রাখতে জন্য সোডিয়াম বেঞ্জোনেট, এমএসজি-র মতো উপাদান যোগ হলে তা আর স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল থাকবে না। তাই তাঁর পরামর্শ, ছোলাভাজা খেতে হলে সেটি বাড়িতে ভেজেই খাওয়া ভাল। ভাজতে হবে আঁচ কমিয়ে। হালকা রং ধরলেই তুলে নিতে হবে।
অনন্যা বলছেন, “নিয়মিত ছোলা ভাজা না খেয়ে ছোলা সেদ্ধও খাওয়া যেতে পারে।” পাতিলেবুর রস, পেঁয়াজ, লঙ্কা, নুন দিয়ে মাখিয়ে খেলেও তা বেশ লাগতে পারে।