বাঙালির কাছে বিট মানেই ‘ভেজিটেব্ল চপ’। কিন্তু বিট দিয়ে সহজেই নানা ধরনের পদ বানিয়ে ফেলা যায়। বিটের তরকারি, বিটের স্মুদি, বিটের স্যালাড, বিটের পরোটা বা গোলা রুটি— চাইলেই বানিয়ে ফেলতে পারেন সব রকমের খাবার। বিট থেঁতো করে আটার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি কিংবা গোলা রুটি বানিয়ে ফেলতে পারলে সুস্বাদু অথচ স্বাস্থ্যকর জলখাবার তৈরি হয়ে যাবে নিমেষেই। অনেকেই আছেন যাঁরা বিট দেখলেই রেগে যান, বিটের স্বাদ তাঁদের মোটেও পছন্দ নয়। তবে চিকিৎসকদের মতে, শীতের ডায়েটে বিট রাখা বেশ স্বাস্থ্যকর।
হার্ট ও বিট
ঘরে ঘরে এখন হার্টের সমস্যা ধরা পড়ছে। অল্পবয়সিরাও হার্টের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হার্ট ভাল রাখতে হলেও কিন্তু নিয়ম করে বিট খেতে হবে। চিকিৎসক শুভম সাহা জানিয়েছেন, ‘‘বিটের রসে আছে নাইট্রেট যা শরীরে গিয়ে পরিণত হয় নাইট্রিক অক্সাইডে৷ অন্যান্য সু-অভ্যাসের পাশাপাশি তাই নিয়মিত বিটের রস খেলে রক্তনালিগুলির সংকুচিত ভাব কমে। যার হাত ধরে শরীরে রক্তচাপ কমে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে৷ বাড়ে শরীরের শক্তি–সামর্থ৷ হার্ট অনেক বেশি তরতাজা বোধ করে৷ এ ছাড়া, নিয়মিত বিট খেলে ইস্কিমিক হার্ট রোগের প্রকোপ কিছুটা কমে। এর মূলে আছে বিটেইন নামের উপাদান। শরীরের যে কোনও প্রদাহের সঙ্গে সে লড়াই করে মানুষকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করে৷ ফলে শুধু হার্ট নয়, অন্যান্য ক্রনিক রোগের আশঙ্কাও কিছুটা কমে যায়।’’
শীতের ডায়েটে বিট রাখা বেশ স্বাস্থ্যকর। ছবি: সংগৃহীত।
আর কী কী গুণ রয়েছে বিটের?
১। ওজন নিয়ন্ত্রণ: বিটে খুব কম ক্যালোরি রয়েছে। ফ্যাট প্রায় নেই বললেই চলে। তাই যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের জন্য বিট খুব ভাল খাবার।
২। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: বিটে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট রয়েছে, যা শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে। এতে রক্তনালী প্রসারিত হয়। ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে।
৩। রক্ত পরিশুদ্ধ করে: শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করার জন্য বিট খুব কার্যকর। অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে বিট রক্তে লোহিত রক্তকনিকার সংখ্যা বাড়ায়।
৪। পুষ্টিগুণে ভরপুর: বিটরুটে রয়েছে আয়রন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজের মতো নানা জরুরি পুষ্টিগুণ। ফলে রোজের খাবারে বিট রাখলে তা শরীরের যত্ন নেবে।
৫। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর: বিটের মধ্যে রয়েছে বিটানিন। এর কারণেই লাল রং। বিটানিন এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও বটে! ফলে শরীরের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী।