তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে হিমায়িত করে ভ্রূণ থেকে শেষমেশ জন্ম নিল শিশু। ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকায় ওহিয়োতে। তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ‘প্রবীণ শিশু’ বলে উল্লেখ করছেন কেউ কেউ। এত দীর্ঘ সময় হিমায়িত অবস্থায় থাকা ভ্রূণ থেকে শিশুর জন্মের অন্য নজির চিকিৎসাজগতে এই প্রথম। ১৯৯২ সালে ভ্রূণটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমায়িত অবস্থায় রাখা হয়েছিল ভ্রূণটিকে। সেই ভ্রূণ থেকে সুস্থ শিশু জন্ম নিয়েছে লিন্ডসে এবং টিম পিয়ার্সের কোলে।
আইভিএফ পদ্ধতিতে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু থেকে ভ্রূণ তৈরি করে মায়ের গর্ভে স্থাপন করা হয়। ভবিষ্যতের জন্য সেই ভ্রূণ হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষিত রাখাও যায়। সন্তান দত্তক নেওয়ার মতো আমেরিকায় ভ্রূণ দত্তক নেওয়া যায়। সালটা ১৯৯২। লিন্ডা আর্চার্ড এবং তাঁর স্বামীর ডিম্বাণু ও শুক্রাণু মিলিয়ে আইভিএফ পদ্ধতিতে মোট চারটি ভ্রূণ তৈরি করা হয়। তার মধ্যে একটি ব্যবহার করে ১৯৯৪ সালে অন্তঃসত্ত্বা হন লিন্ডা। জন্ম নেয় তাঁদের কন্যাসন্তান। সেই মেয়ের বয়স এখন ৩০ বছর, যাঁর নিজের ১০ বছরের এক সন্তান রয়েছে।
বাকি ভ্রূণ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেন লিন্ডা ও তাঁর প্রাক্তন স্বামী। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের পর ওই ভ্রূণর উপর লিন্ডার একার অধিকার কায়েম হয়। সেই সময়েই ভ্রূণ দত্তক দেওয়া যায় বলে জানতে পারেন তিনি। নিঃসন্তান দম্পতিকে ওই ভ্রূণ দত্তক দিতে আগ্রহী ছিলেন লিন্ডা। ভ্রুণ দত্তক নেওয়ার আগে সাত বছর ধরে সন্তানধারণের চেষ্টা করেন লিন্ডসে এবং টিম। সফল না হয়ে শেষ পর্যন্ত লিন্ডার সেই একটি ভ্রূণ থেকেই লিন্ডসে এবং টিমের কোলে জন্ম নিয়েছে তাঁদের পুত্রসন্তান থাডিউস ড্যানিয়েল পিয়ার্স।
লিন জানিয়েছেন, তিনি এবং কোলের সন্তান, দু’জনই একেবারে সুস্থ। লিন্ডা জানিয়েছেন, ছেলের ছবি তাঁকে পাঠিয়েছেন লিন্ডসে। তাঁর মেয়ের সঙ্গে মুখের মিল রয়েছে শিশুটির। যে আইভিএফ ক্লিনিক এই অসাধ্যসাধন করেছে, তার প্রধান জন গর্ডন বলেন, ‘‘জমিয়ে রাখা ভ্রূণগুলি যাতে পৃথিবীতে আসার সুযোগ পায়, সেই চেষ্টাই করছেন তাঁরা।’’