সরস্বতী দেবীকে তুষ্ট করার জন্য মহামুনি ব্যাসদেব বদ্রিকাশ্রমে তপস্যা করেছিলেন। তপস্যা শুরুর আগে তাঁর তপস্যাস্থলের কাছে একটি কুল বীজ রেখে দেবী একটি শর্ত দেন। এই কুলবীজ অঙ্কুরিত হয়ে চারা, চারা থেকে বড় গাছ, বড় গাছে ফুল থেকে নতুন কুল হবে। দেবী বলেন, যে দিন সেই কুল পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পতিত হবে, সেই দিন তার তপস্যা পূর্ণ হবে বা সরস্বতী দেবী তুষ্ট হবেন। ব্যাসদেবও সেই শর্ত মেনে নিয়ে তপস্যা শুরু করলেন।
ধীরে ধীরে বেশ কয়েক বছরে এই কুল বীজ অঙ্কুরিত হয়ে চারা, চারা থেকে বড় গাছ, বড় গাছে ফুল থেকে নতুন কুল হয় এবং একদিন তা পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পতিত হয়। তখন ব্যাসদেব বুঝতে পারেন যে, সরস্বতী দেবী তাঁর প্রতি তুষ্ট হয়েছেন।
সে দিনটি ছিল পঞ্চমী। সে দিন বেদমাতা সরস্বতীকে বদ্রী/কুল ফল নিবেদন করে অর্চনা করে তিনি ব্রহ্মসূত্র রচনা আরম্ভ করেন। শ্রীপঞ্চমীর দিন সরস্বতী দেবী তুষ্ট হয়েছিলেন। তাই সেই দিনের আগে আমরা কুল খাই না। শ্রীপঞ্চমীর দিন সরস্বতী দেবীকে কুল নিবেদন করার পরেই কুল খাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: নাড়ি জ্যোতিষে বুধের প্রধান শত্রু হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে মঙ্গলকে, কেন জানেন?
স্বাস্থ্যগত কারণেও সরস্বতী পূজার আগে কুল খাওয়া ঠিক নয়। কারণ মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ের আগে কুল কাঁচা বা কশযুক্ত থাকে। কাঁচা বা কশযুক্ত কুল থেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
শাস্ত্রে খাওয়ার বিষয়ে বহু বচনের মধ্যে একটি এই যে- ‘বার্তাকু কার্তিকে বর্জ্যং মূলং বা বদরং মাঘে। চৈত্রে শিম্বী পুনস্তুম্বী ভাদ্রে বর্জ্যং দ্বিজাতিভিঃ’। অর্থাৎ দ্বিজাতিগণ কার্তিকে বেগুন, মাঘে মুলো বা কুল, চৈত্রে শিম এবং ভাদ্রে গোলাকার লাউ খাবেন না। অতএব দ্বিজাতি ছাড়া কারও এ সব খেতে নিষেধ নেই। দ্বিজাতিরও মাঘে মুলো অথবা কুল নিষিদ্ধ, সরস্বতী পূজার আগে এ রকম কোনও কথা নেই। কারণ সরস্বতী পূজা ফাল্গুনেও হতে পারে। তবে লোকাচারে কেউ সরস্বতী পূজার আগে কুল খান না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy