Advertisement
০৩ মে ২০২৪

বিবাহের ক্ষেত্রে যোটক বিচার কেন করবেন?

জন্মের সময় অনুসারে আমরা সকলেই কোনও না কোনও রাশির জাতক-জাতিকা। শুধু তাই নয়, জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে আমাদের জীবনের ভাল-মন্দ সবই নির্ভর করে আমাদের রাশির উপর। আর বিবাহ যেহেতু জন্ম এবং মৃত্যুর পরে জীবনের সব থেকে বড় ঘটনা, তাই এটি আর কী করে বাদ যায় রাশিচক্রের প্রভাব থেকে। বিবাহ জীবন যদি সুখের চান, তা হলে ভালবাসা আছে কী নেই, তা বিচার না করে প্রথমেই পাত্র-পাত্রীর কোষ্ঠী মিলছে কি না তা দেখে নেওয়া উচিত।

পার্থপ্রতিম আচার্য
শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০৫
Share: Save:

জন্মের সময় অনুসারে আমরা সকলেই কোনও না কোনও রাশির জাতক-জাতিকা। শুধু তাই নয়, জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে আমাদের জীবনের ভাল-মন্দ সবই নির্ভর করে আমাদের রাশির উপর। আর বিবাহ যেহেতু জন্ম এবং মৃত্যুর পরে জীবনের সব থেকে বড় ঘটনা, তাই এটি আর কী করে বাদ যায় রাশিচক্রের প্রভাব থেকে। বিবাহ জীবন যদি সুখের চান, তা হলে ভালবাসা আছে কী নেই, তা বিচার না করে প্রথমেই পাত্র-পাত্রীর কোষ্ঠী মিলছে কি না তা দেখে নেওয়া উচিত। যদি মেলে, তবেই বিয়ের বিষয় ভাবনা-চিন্তা শুরু করা উচিত, নচেৎ নয়।

আপাতদৃষ্টিতে এমন কথা শুনে অনেকের রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই বক্তব্য যে একেবারেই ফেলনা নয়, তা বলাই বাহুল্য। কারণ বিয়ের আগে কোষ্ঠী মিলিয়ে নেওয়ার প্রথা আজকের নয়, বহু যুগ আগে থেকেই চলে আসছে এবং এর থেকে যে সুফল পাওয়া যায়নি, এমনও নয়। আপনার আশেপাশে একটু নজর ফিরিয়ে দেখুন, এমন অনেক স্বামী-স্ত্রীর খোঁজ পাবেন, যাঁদের মধ্যে আপাতদৃষ্টিতে কোনও সমস্যা না থাকলেও তাঁদের বৈবাহিক জীবন একেবারেই সুখের স্বাদ পায় না। কারণ সেই একই।

পাত্র-পাত্রীর মধ্যে গ্রহ-নক্ষত্রের মিলন না হলে হাজারও সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তাই তো কোন গ্রহের সঙ্গে কোন নক্ষত্রের মিলন হয়, তা দেখে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সাধারণত ৩৬টি গুণের মধ্যে পাত্র-পাত্রীর কতগুলি গুণ মিলছে, তা দেখা হয়। প্রসঙ্গত, যত বেশি সংখ্যক গুণের মিল হবে, বৈবাহিক জীবন তত ভাল হবে বলে মনে করেন জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞরা। জ্যোতিষে মোট ১২টি রাশির উল্লেখ পাওয়া যায়। যাদের মোট ৪টি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন: আর্থিক সমস্যায় জেরবার? বাড়ির এই তিনটি জিনিসে মিলবে সমাধান

যেমন-

১. আগুন: মেষ, সিংহ এবং ধনু।

২. জল: কর্কট, বৃশ্চিক এবং মীন।

৩. পৃথিবী: বৃষ, কন্যা, মকর।

৪. বায়ু: মিথুন, তুলা, কুম্ভ।

পুরাণ অনুসারে, একই বিভাগের রাশির জাতক-জাতিকারা একে অপরের সঙ্গে খুব সুখে থাকে। কিন্তু কেউ যদি আলাদা কোনও বিভাগের রাশির জাতক-জাতিকার সঙ্গে ঘর বাঁধেন, তা হলেই বিপদ। সেই কারণেই তো জলকে আগুন অথবা বায়ুর সংস্পর্শে আনা চলবে না। যদিও বিষয়টি অতটাও সহজ নয়।

এখন জেনে নেওয়া যাক বিবাহে যোটক বিচারের ভূমিকা সম্পর্কে:

পাত্র-পাত্রীর কোষ্ঠী বিচার করার সময় সাধারণত নক্ষত্রের মিলন হচ্ছে কি না, মঙ্গলের দশা কেমন রয়েছে এমন নানা বিষয়-সহ প্রায় ৩৬টি দিক বিবেচনা করে দেখা হয়। যদি ৩৬টি গুণের মধ্যে কম করে ১৮টা গুণ মিলে যায়, তা হলে সেই পাত্র এবং পাত্রীর মধ্যে বিবাহ দেওয়া যেতেই পারে। ৩৬টি গুণ মিলিয়ে দেখার প্রক্রিয়াটি হল কুষ্টি বিচারের একেবারে প্রাথমিক ধাপ। গুণ বিচারের পর আরও কিছু বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হয়। যেমন পাত্র পাত্রীর মধ্যে কেউ মাঙ্গলিক কি না তা দেখা হয়। যদি কেউ একজন মাঙ্গলিক হন, তা হলে চিন্তার বিষয়। এর পরের ধাপে বাকি মহাদশাগুলি বিচার করা হয়ে থাকে। এই তিনটি ধাপের পরে পাত্র-পাত্রীর কোষ্ঠী মিললে তবেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

কোষ্ঠী বিচারের উপকারিতা:

আজকের যুগে হয়তো কোষ্ঠী বিচারকে অনেকেই ভিত্তিহীন বলে ভাবেন। কিন্তু প্রাচীন এই বিদ্যার গুণকে বাস্তবিকই অস্বীকার করা যায় না। কারণ একথা বহু যুগ আগেই প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে যে, কোনও মানুষের জীবনে ভাল-মন্দ যা-ই ঘটুক না কেন, তার সঙ্গে গ্রহ-নক্ষত্রের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই বিশ্বাস করুন বা না-ই করুন, বিয়ের আগে কোষ্ঠী বিচারের প্রথাকে একেবারে অগ্রাহ্য করা উচিত নয়, তা সে আপনি প্রেম করেই বিয়ে করুন বা সম্বন্ধ করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Birth Chart Kundali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE