Advertisement
E-Paper

স্বপ্নপূরণ! ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ১৯ বছরের স্টেভিন পুলিশকর্তা

এক দিনের জন্য পুলিশ হলেন ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ১৯ বছরের স্টেভিন ম্যাথিউ। আর দিনের শেষে থানার অন্দরেই সব পুলিশ অফিসারেরা স্যালুট জানালেন স্টেভিনকে। ঠিক যেন সিনেমার মতো।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৩:২৫
পুলিশের উর্দি পরে স্টেভিন ম্যাথিউ। ছবি: সংগৃহীত।

পুলিশের উর্দি পরে স্টেভিন ম্যাথিউ। ছবি: সংগৃহীত।

পর্দার পুলিশ চরিত্রগুলি দেখে পুলিশ হওয়ার ইচ্ছা তাঁকে নাড়া দিতে থাকে। সে পথে হাজার প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও স্বপ্নটা সত্যিই হয়ে গেল এক দিন।

চেন্নাই পুলিশের সহায়তায় এক দিনের জন্য পুলিশ হলেন ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ১৯ বছরের স্টেভিন ম্যাথিউ। আর দিনের শেষে থানার অন্দরেই সব পুলিশ অফিসারেরা স্যালুট জানালেন স্টেভিনকে। ঠিক যেন সিনেমার মতো। ঠিক যে ভাবে ‘নায়ক’ ছবিতে হাততালি কুড়িয়েছিলেন এক দিনের মুখ্যমন্ত্রী শিবাজী রাও গায়কোয়াড়।

তবে বছর তিনেক আগে কলকাতাতেও এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল। ১৬ বছরের অংশু হরি কুমার এক দিনের জন্য ট্র্যাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার হয়েছিলেন। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের একটি প্রবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার জিতেছিলেন অংশু। আর তার পরই এক দিনের জন্য এই সুযোগটি পেয়ে গিয়েছিল ছোট্ট অংশু হরি কুমার।

আরও পড়ুন:
বিবাহ বিচ্ছেদে ছ’মাসের অপেক্ষা বাধ্যতামূলক নয়: সুপ্রিম কোর্ট

সেনা মেজরকে স্যালুট ঠুকতে বলে বিতর্কে জুবিন

কাতারের দোহায় মা-বাবার সঙ্গে থাকেন ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ১৯ বছরের স্টেভিন। সেখানেই স্টেভিন বাবা রাজীব ম্যাথিউ এবং মা সিবি ম্যাথিউর বিশেষ একটি স্কুলে পড়াশোনা করে। ম্যাথিউ পরিবার মূলত চেন্নাইয়ের। দিন কয়েক আগেই তাঁরা চেন্নাই আসেন। আর সেখানেই স্টেভিনের বাবা রাজীব ম্যাথিউ চেন্নাইয়ের পুলিশ কমিশনার এ কে বিশ্বনাথনকে অনুরোধ করেন, ছেলেকে এক দিনের জন্য খাঁকি পোশাক পরতে দিতে। দ্য হিন্দু-কে এক সাক্ষাৎকারে রাজীব ম্যাথিউ বলছেন, ‘‘ওর প্রিয় অভিনেতা সুরেশ গোপী এবং বিজয়— এঁদেরকে পুলিশের চরিত্রে দেখে স্টেভিনের মনে পুলিশ হওয়ার ইচ্ছা দানা বাঁধতে থাকে। স্টেভিন সব সময়েই এক জন পুলিশ অফিসার হতে চেয়েছে। ছুটিতে চেন্নাই বেড়াতে আসার সময় আমি পুলিশ কমিশনারকে একটা ই-মেল পাঠাই।’’

এর ঠিক কয়েক দিন পরেই রাজীবকে ফোন করেন অশোকনগর থানার এক পুলিশ অফিসার। আর তার পরই চেন্নাইয়ের সহকারী কমিশনার ভিনসেন্ট জয়রাজ এবং ইন্সপেক্টর সূর্যলিঙ্গম চলে আসেন স্টেভিনের সঙ্গে দেখা করতে। এসে তাঁরা স্টেভিনের পোশাকের মাপ নিয়ে যান বলে জানিয়েছেন স্টেভিনের বাবা। তবে সেদিন তাঁরা স্টেভিনের জন্য একটি পুলিশের পোশাকও নিয়ে এসেছিলেন।


অশোকনগর থানায় ওয়াকি-তে কথা বলছেন স্টেভিন।

যে মুহূর্তে স্টেভিন অশোকনগর থানায় প্রবেশ করে, চারিদিকে তখন বাকি পুলিশ অফিসাররা ফুলের তোড়া হাতে তৈরি। থানায় প্রবেশ করতে না করতেই একটি ওয়াকি টকি আর ডেস্কও পেয়ে যান স্টেভিন। তড়িঘড়ি পুলিশ অফিসাররা সমস্ত দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন স্টেভিনকে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই জিপ এবং দু’জন কন্সটেবল সমেত টহলদারির জন্য পাঠানো হয় স্টেভিন ম্যাথিউকে। অশোকনগর থানার একজন পুলিশ অফিসার বলছেন, ‘‘স্টেভিন বেশ কিছু জরুরি ফোনও ধরে সে দিন।’’

কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে ডিপ্লোমা পাশ করেছেন স্টেভিন ম্যাথিউ। ওর এই ইচ্ছের গাছে যাঁরা প্রথম থেকেই জল দিয়ে আসছেন, স্টেভিনকে পুলিশের পোশাকে দেখে সে দিন সব থেকে বেশি খুশি হয়েছিলেন ওই দু’জন। স্টেভিনের মা ও বাবা। স্টেভিনের বাবা রাজীব ম্যাথিউ বলছেন, ‘‘সঠিক সুযোগ পেলে স্টেভিনের মতো ছেলেদের তার সদ্ব্যবহার করে দেখায়।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন কাতারে এসেছিলেন তখল তাঁর সঙ্গে স্টেভিনের দেখা হয় বলেও জানিয়েছেন রাজীব ম্যাথিউ।

আর যার সহায়তায় স্টেভিনের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেল তিনি কী বলছেন? চেন্নাইয়ের পুলিশ কমিশনার এ কে বিশ্বনাথন বলছেন, ‘‘স্টেভিনকে উৎসাহ দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন।’’

Stevin Mathew Down’s syndrome Police Qatar Chennai স্টেভিন ম্যাথিউ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy