Advertisement
E-Paper

ফ্ল্যাটে বন্দি ১০ বছর, মুম্বইয়ে উদ্ধার যুবক

নগ্ন দেহ। বুকের কাছে কোনও মতে একটা বস্তা চেপে ধরা। হয়তো শেষ ১০ বছর স্নানও করেননি। এই অবস্থাতেই গত কাল মুম্বইয়ের একটি ফ্ল্যাট থেকে ২২ বছরের এক যুবককে উদ্ধার করলেন নবি মুম্বইয়ের পুলিশ ও সমাজকর্মীরা। শেষ কবে সূর্যের আলো তাঁর চোখে পড়েছে, তা হয়তো ভুলেই গিয়েছেন রাজ পটেল নামের ওই যুবক।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৫ ০৩:৩৬

নগ্ন দেহ। বুকের কাছে কোনও মতে একটা বস্তা চেপে ধরা। হয়তো শেষ ১০ বছর স্নানও করেননি। এই অবস্থাতেই গত কাল মুম্বইয়ের একটি ফ্ল্যাট থেকে ২২ বছরের এক যুবককে উদ্ধার করলেন নবি মুম্বইয়ের পুলিশ ও সমাজকর্মীরা।

শেষ কবে সূর্যের আলো তাঁর চোখে পড়েছে, তা হয়তো ভুলেই গিয়েছেন রাজ পটেল নামের ওই যুবক। তাই মুখের উপর আলো পড়তেই খানিকটা চমকে ওঠেন তিনি। কিছু টালবাহানার পর ইতস্তত পায়ে আসেন ঘরের বাইরে।

কিন্তু ১০ বছর কেন বন্দি ছিলেন রাজ?

পুলিশ অবশ্য এখনও নির্দিষ্ট ভাবে সে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। জানিয়েছে, বেলাপুর এলাকায় গত ২২ বছর ধরে সঞ্জীবনী নামের ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন রাজের পরিবার। কিছু আইনি জটিলতার জন্য ওই ফ্ল্যাটের অন্যান্য বাসিন্দা চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু যাননি রাজের পরিবার। জল-বিদ্যুৎ ছাড়াই সেখানে দিন কাটাতেন তাঁরা। পুলিশ আরও জানিয়েছে, রাজেদের ছিল ডুপ্লে ফ্ল্যাট। এক তলায় থাকতেন তাঁর পরিবার। আর দোতলায় বন্দি করে রাখা হয়েছিল রাজকে।

যে সমাজকর্মীরা গত কাল পুলিশকে সাহায্য করেছিলেন, তাঁদের তরফে দামিনী শাহের দাবি, রাজের সৎ মা এবং সৎ ভাই চাইতেন যে রাজ একা থাকুক। তাই দোতলার ঘরেই শেষ দশ বছর বন্দি হয়ে দিন কাটাতে হয়েছে রাজকে।

রাজের ঘরে ঢুকে প্রথমে চমকে গিয়েছিল পুলিশ। চার দিকে আবর্জনা, পুরনো খবরের কাগজ আর জঞ্জালের স্তূপ। দুর্গন্ধে টেকা দায়। ঘরের এক কোণে ছোট্ট একটা বালিশ। পুলিশের মনে হয়েছে, সেখানেই কোনও রকমে শুয়ে থাকতেন রাজ। দামিনী বলেছেন, ‘‘কেউ কোনও দিন এই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এমনকী দারোয়ানও উপরে উঠতে সাহস পেতেন না। শুধু জানলা দিয়ে ছুড়ে ফেলা আবর্জনা নিয়ে মাঝেমাঝে অভিযোগ জানাতেন তিনি। এই ঘটনা জানতে পেরে আমরাই পুলিশের সাহায্যে এঁকে (রাজকে) উদ্ধার করি।’’

তবে গত কালের ঘটনা বলতে গিয়ে দামিনী এখনও শিউরে উঠছেন। তিনি জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটের সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই বেশ ভয় করছিল তাঁদের। লিফ্‌টের সামনের জায়গাটা আবর্জনায় ঠাসা। দামিনী বলেছেন, ‘‘আর যখন রাজের ঘরটা দেখলাম, তখন সবাই চমকে উঠেছিলাম। যে খবরের কাগজে মুড়ে খাবার দেওয়া হতো তাঁকে, তাতেই মলত্যাগও করতে হতো রাজকে!’’ ঠিকঠাক খাবার বা জলও রাজকে দেওয়া হতো না বলেই দামিনীর দাবি।

তাই এত লোকজন দেখে রাজ প্রথমেই বলে ওঠেন, ‘‘দাদা খাবার’’। আর এই খাবারের লোভ দেখিয়েই ঘরের বাইরে আনা হয় রাজকে।
তার পর নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। যদিও সেই সময় রাজের পরিবার কোনও বাধা দেয়নি বলেই পুলিশ জানিয়েছে।

তারা আরও বলেছে, এখনই রাজের পরিবারের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা করা হচ্ছে না। রাজ এখন হাসপাতালে মনোবিদদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এমনকী রাজের পরিবারের লোকজনদেরও কাউন্সেলিং করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু ওই দশ ফুট বাই দশ ফুটের ঘরে কেন ১০ বছর বন্দি ছিলেন রাজ, সে বিষয়ে এখনও ধন্দ কাটছে না কারও।

Mumbai train rail flood raj
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy