Advertisement
E-Paper

এক ভাই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, অন্য জন সাংবাদিক! রানার পছন্দ পাক সেনার উর্দি, প্রথম দিনের জেরায় কী তথ্য পেল এনআইএ?

সূত্রের খবর, শুক্রবারে জেরাপর্ব শুরু হতেই বেশির ভাগ প্রশ্নে রানার উত্তর ছিল ‘জানি না’, ‘মনে নেই’। কিন্তু তদন্তকারীরা জেরা করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন তাঁর সম্পর্কে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০১
মুম্বই হামলার চক্রী তাহাউর রানা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মুম্বই হামলার চক্রী তাহাউর রানা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

প্রথম দিনের জেরাপর্বের বেশির ভাগটাই ‘জানি না’, ‘মনে নেই’ এই উত্তর দিয়েছেন ২৬/১১ মুম্বই হামলার চক্রী তাহাউর রানা, সূত্রের খবর অন্তত তেমনই। আমেরিকা থেকে ভারতে নিয়ে আসার পর রানার বর্তমান ঠিকানা দিল্লিতে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) সদর দফতরের নীচতলার ১৯৬ বর্গফুটের গারদ। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে জেরাপর্ব। এনআইএ সূত্রের খবর, প্রথম দিন খুব একটা সহযোগিতা করেননি রানা। স্বল্প বাক্যে এবং খুব মেপে উত্তর দিয়েছেন।

সূত্রের খবর, প্রাথমিক জেরাপর্বে তদন্তকারীদের লক্ষ্য রানার পরিবার, ব্যক্তিগত তথ্য, শিক্ষা, বাসস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। শুক্রবারে জেরাপর্ব শুরু হতেই বেশির ভাগ প্রশ্নে রানার উত্তর ছিল ‘জানি না’, ‘মনে নেই’। কিন্তু তদন্তকারীরা জেরা করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন তাঁর সম্পর্কে। এনআইএ সূত্রে খবর, পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের চিচাওয়াতনি গ্রামের বাসিন্দা রানা। তাঁর বাবা ছিলেন স্কুলের অধ্যক্ষ। রানারা তিন ভাই। তাঁদের মধ্যে এক জন পাক সেনায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসাবে কর্মরত ছিলেন, অন্য জন সাংবাদিক।

হাসানাবদাল ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা রানার। সেখানেই মুম্বই হামলার আর এক চক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে পরিচয় তাঁর। বর্তমানে আমেরিকার জেলে বন্দি হেডলি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ১৯৯৭ সালে সস্ত্রীক কানাডায় চলে যান রানা। তাঁর স্ত্রী সামরাজ রানা আখতার একজন চিকিৎসক। কানাডায় গিয়ে ‘ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি’ খোলেন রানা। পরে মাংসের ব্যবসা শুরু করেন। এনআইএ সূত্রে খবর, ‘ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি’র আড়ালে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাতেন রানা। আর হেডলিকে তাঁর সংস্থায় পরামর্শদাতা (কনসালট্যান্ট) হিসাবে রেখেছিলেন তিনি।

এনআইএ সূত্রে খবর, মেডিক্যালের ডিগ্রি পাওয়ার পর পাক সেনায় চিকিৎসক হিসাবে যোগ দেন রানা। পাক সেনায় কাজ ছেড়ে দেওয়ার পরেও সেই উর্দি ব্যবহার করতেন। উর্দির প্রতি ছিল অমোঘ টান। পাক গোয়েন্দা এবং গুপ্তচর সংস্থা এমনকি লশকর জঙ্গিগোষ্ঠীর কোনও উচ্চস্তরীয় বৈঠকে গেলে সেনার উর্দি পরে যেতেন মুম্বই হামলার চক্রী। শুধু তা-ই নয়, জঙ্গি শিবিরগুলিতেও সেনার উর্দি পরে প্রতিনিয়তই যাতায়াত করতেন রানা।

তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, সাজিদ মীর নামে এক জঙ্গির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’-এর তালিকায় নাম রয়েছে এই জঙ্গির। ২৬/১১ মুম্বই হামলায় মুখ্য ‘হ্যান্ডলার’-এর ভূমিকায় ছিল সাজিদ। তার নির্দেশেই মুম্বইয়ের চাবার হাউসে ছয় পণবন্দিকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। সাজিদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। আমেরিকা তার মাথার দাম ঘোষণা করেছে ৫০ লক্ষ ডলার। ২০২২ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারত একটি অডিয়োবার্তা জমা দেয়। সেখানে সাজিদকে হামলাকারীদের নির্দেশ দিতে শোনা গিয়েছে বলে দাবি করে নয়াদিল্লি।

সূত্রের খবর, শুধু লশকরের সঙ্গে নয়, হরকত-উল-জিহাদ-অল-ইসলামি (হুজি) জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল রানার। পাক সেনা এবং আইএসআই আধিকারিকদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই এই জঙ্গিশিবিরগুলিতে যেতেন রানা। এনআইএ সূত্রে খবর, মেজর ইকবাল নামে আইএসআই-এর এক আধিকারিকের সঙ্গে নিয়মিত ওঠাবসা ছিল তাঁর।

২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে হামলার অন্যতম চক্রী রানা। বৃহস্পতিবার তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেয় আমেরিকা। বিশেষ বিমানে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। ভারতে ফিরিয়ে এনে তাঁকে গ্রেফতার করে এনআইএ। তাঁকে ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বর্তমানে রানাকে এনআইএ-র সদর দফতরের গারদে রেখে জেরা করা হচ্ছে। শুক্রবার ছিল জেরাপর্বের প্রথম দিন।

Tahawwur Hussain Rana NIA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy