Advertisement
E-Paper

২৬০০ বাড়তি টিকিট বিক্রি স্রেফ দু’ঘণ্টায়! পদপিষ্ট-কাণ্ডে দায় ঝাড়তে চাইলেও পারছে না রেল

সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে নয়াদিল্লি স্টেশনে প্রতি দিন গড়ে সাত হাজার জেনারেল (অসংরক্ষিত) টিকিট বিক্রি হয়। শনিবার ওই দু’ঘণ্টায় বিক্রি হয়েছিল মোট ৯৬০০টি জেনারেল টিকিট।

নয়াদিল্লি স্টেশনে শনিবার রাতে মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের হুড়োহুড়ি।

নয়াদিল্লি স্টেশনে শনিবার রাতে মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের হুড়োহুড়ি। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:০৮
Share
Save

শনিবার সন্ধ্যায় স্রেফ দু’ঘণ্টার মধ্যে ২৬০০টি বাড়তি জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছে নয়াদিল্লি স্টেশনে। মহাকুম্ভে যাওয়ার যাত্রীদের ভিড়ে রাত ১০টা নাগাদ সেখানে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৮ জনের। এই ঘটনা কি চাইলেই ঠেকানো যেত? টিকিট বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে উঠছে প্রশ্ন। চেষ্টা করেও দায় ঝেড়ে ফেলতে পারছে না ভারতীয় রেল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একটি রিপোর্টে জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে নয়াদিল্লি স্টেশনে প্রতি দিন গড়ে সাত হাজার জেনারেল (অসংরক্ষিত) টিকিট বিক্রি হয়। রেলের অসংরক্ষিত টিকিট সিস্টেম (ইউটিএস) থেকেই এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু শনিবার ওই দু’ঘণ্টায় বিক্রি হয়েছিল মোট ৯৬০০টি জেনারেল টিকিট। সারা দিনে মোট বিক্রি হওয়া টিকিটের সংখ্যা ৫৪ হাজার। কৌতূহলের বিষয় হল, নয়াদিল্লি স্টেশনে এর চেয়েও বেশি জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৮ ফেব্রুয়ারি এবং ২৯ জানুয়ারি। সেই দু’দিনও স্টেশনে ছিল কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের ভিড়। কিন্তু তখন কোনও পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেনি। তা হলে শনিবার কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল? শুধু ভিড়ের দোহাই দিলে কি দায় এড়ানো যাবে?

রেলের এক সিনিয়র আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, চাইলেই এই পরিস্থিতি ঠেকানো যেত। তাঁর কথায়, ‘‘১৫ ফেব্রুয়ারি প্ল্যাটফর্মে বিপুল সংখ্যক মানুষ ছিলেন। এতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তার আগে ৮ তারিখ ৫৪,৬৬০টি এবং গত মাসের ২৯ তারিখ ৫৮,০০০টি জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছিল ওই স্টেশনেই। এই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করাই যেত।’’

রেলের একটি অংশের দাবি, ইউটিএস-এর পরিসংখ্যান থেকে যাত্রীর সংখ্যা আন্দাজ করা ঠিক নয়। কারণ, মহাকুম্ভের পর্বে প্রয়াগরাজগামী ট্রেনে এত ভিড় হচ্ছে, অনেকেই টিকিট কাটছেন না। রেলের তরফে টিকিট পরীক্ষা করাও হচ্ছে না। বিপুল পরিমাণ যাত্রীর টিকিট পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রতি ট্রেনে শুধু দাঁড়ানোর জায়গা পেতেও মারপিট করছেন মানুষ। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘মহাকুম্ভের জন্য এখন মোট টিকিট বিক্রির সংখ্যা দিয়ে ভিড়ের আন্দাজ পাওয়া যাবে না। মানুষ ট্রেনে দাঁড়ানোর জন্যেও মারপিট করছেন। এই পরিস্থিতিতে জেনারেল বগিতে কেউ টিকিট কেটেছেন কি না, তা যাচাই করা সম্ভব নয়। ফলে ইউটিএসে যা দেখা যাচ্ছে, আসলে তার চেয়েও অনেক বেশি ভিড় ছিল।’’ ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, টিকিট বিক্রির ধুম দেখে সে দিনের ভিড় আন্দাজ করা উচিত ছিল রেল কর্তৃপক্ষের। সে ক্ষেত্রে আগে থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেত। হয়তো পদপিষ্টের পরিস্থিতি ঠেকানো যেত।

শনিবারের ঘটনায় প্রথমে ‘পদপিষ্ট’ শব্দটি ব্যবহারেই আপত্তি করেছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানিয়েছিলেন, ভিড়ে ধাক্কাধাক্কিতে কয়েক জন আহত হয়েছেন। পরে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করতে বাধ্য হন তাঁরা। রেলের তরফে মৃতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করা হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা করে। রবিবার রেল দাবি করে, নয়াদিল্লি স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম বদল সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা হয়নি। সব ট্রেন সময়েই চলছিল। কিন্তু প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর দিল্লি পুলিশ জানায়, স্টেশনে গোলযোগ শুরু হয় রেলের ঘোষণার কারণেই। অভিযোগ, পর পর দু’টি ট্রেন ‘লেট’ করেছিল। ফলে ভিড় অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তার পর ১২ নম্বরের ট্রেনটি ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসবে বলে ঘোষণা করা হয়। তখনই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে এই দাবি মানতে চাননি রেল কর্তৃপক্ষ।

new dehi New Delhi Station New Delhi Stampede Prayagraj

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}